Sunil Chhetri: অবসরের ইঙ্গিত দেওয়া সুনীল ছেত্রী বলছেন, এখন জীবনের সেরা ছন্দে রয়েছেন

হয়তো লোভ। এই লোভটা যত বাড়বে, তত ভারতীয় ফুটবলের মঙ্গল। সুনীল ছেত্রীর কথা শুনে মনে হতেই পারে তিনি এশিয়ান কাপ খেলার লোভ সামলাতে পারছেন না। অবসর নিয়ে ফেলতে পারেন, এ রকম ইঙ্গিত আগে দিয়েছিলেন ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক। কিন্তু দেশকে এশিয়ান কাপের মূলপর্বে তোলার পর এখন তাঁর মনে হচ্ছে, জীবনের সেরা ছন্দে রয়েছেন।

মঙ্গলবার হংকংয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচের পরে সম্প্রচারকারী সংস্থা স্টার স্পোর্টসকে এই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সুনীল।

প্রশ্ন: আন্তর্জাতিক গোলের সংখ্যার দিক থেকে ফেরেঙ্ক পুসকাসকে ধরে ফেললেন। আর একটি গোল করলেই তাঁকে ছাড়িয়ে যাবেন। আপনার কেমন লাগছে?

সুনীল ছেত্রী: তালিকাটা দেখলে ভাল লাগছে। তবে এ সব রেকর্ড নিয়ে বেশি ভাবি না। জানি আর বেশি দিন হয়ত দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পাব না। তাই খেলতে নেমে যতটা পারি মুহূর্তগুলো উপভোগ করে নিই। ভারতের হয়ে খেলা সম্ভবত আমার জীবনের সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য আমি সন্মানিত।

প্রশ্ন: শেষ তিন ম্যাচে অসাধারণ খেলল ভারত। মনে কি হচ্ছে না যে, এশিয়ান কাপের মূলপর্ব কাল থেকে শুরু হলেই ভাল হত?

সুনীল: ঘরের মাঠে এ রকম ফর্মে থাকাটা দারুণ ব্যাপার। সমর্থকেরা যে ভাবে ঝাঁকে ঝাঁকে আমাদের খেলা দেখতে এসেছেন এবং আমাদের জন্য গলা ফাটিয়েছেন, তাতে মনে হচ্ছে এশিয়ান কাপের মূলপর্বের ম্যাচগুলো এখানে হলেই ভাল হত। আমি খুব তৃপ্ত। যদিও এ কথা আমি সাধারণত বলি না। তবে সত্যিই দলের পারফরম্যান্স দেখে আমি খুব তৃপ্তি পেয়েছি। ঘরের মাঠে খেলাগুলো হবে জেনে আমরা একটা লক্ষ্য স্থির করেছিলাম। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরে আমরা খুবই খুশি। তিন ম্যাচে ন’পয়েন্ট পাওয়াটা মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। প্রথম ম্যাচে কম্বোডিয়াকে হারাতে না পারলে শেষ দুটো ম্যাচ জেতা বেশ কঠিন হত। তাই খুবই ভাল লাগছে।
প্রশ্ন: এত বছরের ফুটবলজীবনে এটাই কি সবচেয়ে মধুর অনুভূতি?

সুনীল: এটাই বোধ হয় আমার সেরা সময়। জীবনের সেরা ছন্দে রয়েছি। তাই ভাল লাগছে। এ বার আমরা সবাই খুব পরিশ্রম করতে চেয়েছিলাম। এর পর আমি থাকব কি না, সেটা বড় কথা নয়। ভারতকে থাকতেই হবে। আমি বরাবরই বলে এসেছি, প্রতি এশিয়ান কাপে ভারতকে অংশ নিতে হবে। এশিয়ার সেরা দেশগুলোর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে হবে। তা হলেই বোঝা যাবে কতটা এগোলাম আমরা আর এখনও কতটা বাকি আছে এগোতে। এশিয়া কাপ ছাড়াও এশিয়ার বড় দলগুলোর সঙ্গে আমরা প্রীতি ম্যাচ খেলতেই পারি। এখন সব ঠিকই আছে। আমরা যেটা করতে চেয়েছিলাম, তা করতে পেরেছি। এ বার আমাদের আরও ভাল প্রস্তুতি নিতে হবে, যাতে গত বারের এশিয়ান কাপের চেয়েও ভাল খেলতে পারি।

প্রশ্ন: এই দলের ছেলেরা নিজেদের মধ্যে যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলেছে, তা অসাধারণ। মাঠে নেমে কি সেটা টের পেয়েছেন?

সুনীল: হ্যাঁ, সত্যিই ওরা অসাধারণ। ওদের বাচ্চা বললে হয়তো ওরা আমাকে মারতে আসবে, তবে ওরা অসাধারণ। আমাদের দলে যে মিশ্রণটা আছে, সেটা খুবই ভাল। গুরপ্রীত, সন্দেশ, রাহুল, খাবরাদের সঙ্গে তরুণদের যে ভারসাম্য তৈরি হয়েছে দলে, সেটা খুবই ভাল। খারাপ অর্থে বলছি না, আমাদের এই ছেলেগুলো বেশ বেপরোয়া। মাঠে গিয়ে শুধু নিজেদের খেলাটা খেলতে চায়। লিস্টন, সুরেশ, আকাশ, রোশনরা রয়েছে আমাদের দলে। আকাশ আর রোশন তো দুরন্ত। অনেক তরুণ খেলোয়াড় উঠে আসছে। অনেকে চলেও যাচ্ছে। আমি সেদিন বলছিলাম, অনুশীলনে ঈশানের পারফরম্যান্স দারুণ। ম্যাচে নেমে ও কী করল দেখুন। ওরকম বৃষ্টির মধ্যে মাত্র দশ মিনিটে এত কিছু করা সোজা নয়। কিন্তু জানতাম, ঈশান, সাহালরা গোল করতে পারে। কারণ, ট্রেনিংয়ে ওরা প্রায়ই গোল করে। খুব ভাল লাগে, যখন দেখি এত তরুণ প্রতিভা দলে রয়েছে এবং প্রত্যেকে প্রথম এগারোয় ঢোকার জন্য কোচের দরজায় কড়া নাড়ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.