রোনাল্ডো ২, মেসি ১, এমবাপে ১, নেমার ০! সৌদির মাঠে ৯ গোলের লড়াইয়ে জয় ফুটবলের

মেসিতে শুরু। এমবাপেতে শেষ। মাঝে জোড়া গোল রোনাল্ডোর। পেনাল্টি ফস্কালেন নেমার। আরও পাঁচটি গোল হল বটে, তবে যেখানে এই চার তারকা মাঠে সেখানে অন্য কার দিকেই বা চোখ যায়। ৯ গোলের দুরন্ত ম্যাচের সাক্ষী থাকল ফুটবল বিশ্ব। ৫-৪ গোলে ম্যাচ জিতল পিএসজি। তবে খেলার হার-জিতকে সাইডলাইনের বাইরে সরিয়ে এই ম্যাচ দেখিয়ে দিল ফুটবলের জয়।

খেলার অনেক আগে থেকেই উন্মাদনা। মাঠ কানায় কানায় ভর্তি। টানেলের মধ্যে থেকে যখন মেসি, রোনাল্ডোরা বেরিয়ে এলেন তখন শব্দব্রহ্ম। তার মাঝেই উদয় হলেন অমিতাভ বচ্চন। অতিথি হয়ে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। মাঠে দু’দলের ফুটবলারদের সঙ্গে হাত মেলালেন। মেসি ও রোনাল্ডোর সঙ্গে হাত মেলানোর সময় তাঁকে একটু বেশিই উত্তেজিত বলে মনে হচ্ছিল।

খেলায় অবশ্য কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়লেন না। ফিফা বিশ্বকাপে যেখানে শেষ করেছিলেন, ঠিক সেখানেই শুরু করলেন মেসি। ৩ মিনিটের মাথায় গোল করে ফেললেন তিনি। বক্সের বাইরে থেকে নেমারের ঠিকানা লেখা পাসে সৌদির জাতীয় দলের গোলরক্ষক আল-ওয়াইসকে আরও এক বার পরাস্ত করলেন মেসি।

খেলায় দাপট বেশি দেখাচ্ছিল পিএসজি। ১৭ মিনিটের মাথায় সহজ সুযোগ নষ্ট করেন নেমার। দু’মিনিট পরেই দেখা গেল মেসি-এমবাপে যুগলবন্দি। মেসির পাস থেকে গোল করেন এমবাপে। কিন্তু অফসাইডের কারণে সেই গোল বাতিল হয়।

৩৪ মিনিটের মাথায় সমতা ফেরায় সৌদি। বক্সের মধ্যে পিএসজি গোলরক্ষক নাভাস ফাউল করেন রোনাল্ডোকে। পেনাল্টি থেকে গোল করেন রোনাল্ডো। পেনাল্টি নেওয়ার সময় সেই পুরনো সিএর৭-এর ঝলক দেখা গেল।

চার মিনিট পরে ১০ জনে হয়ে যায় পিএসজি। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন জুয়ান বার্নেট। তাতে অবশ্য চাপে পড়েনি প্যারিসের ক্লাব। ৪৩ মিনিটের মাথায় এমবাপের ক্রস থেকে দ্বিতীয় গোল করেন মারকুইনোস। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে নেমারকে বক্সে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় পিএসজি। কিন্তু নেমারের দুর্বল শট বাঁচিয়ে দেন আল-ওয়াইসি। বিরতির আগে ২-১ এগিয়ে যায় পিএসজি।

প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোল করেন রোনাল্ডো। বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পান তিনি। তাঁর শট ওয়ালে লেগে প্রতিহত হলেও ফিরতি বলে সের্জিয়ো র‌্যামোসের ভুল কাজে লাগিয়ে গোল করে যান রোনাল্ডো। কয়েক মিনিট পরেই নিজের ভুল শুধরে নেন র‌্যামোস। এমবাপের ক্রস থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন তিনি।

পেন্ডুলামের মতো খেলা দুলছিল। ৫৭ মিনিটের মাথায় আবার সমতা ফেরায় সৌদি অলস্টার। দক্ষিণ কোরিয়ার জাং এ বার গোল করেন। কিন্তু সৌদির ক্লাবের আনন্দ বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ২ মিনিট পরে বক্সের মধ্যে মেসির শটে হাত লাগিয়ে পেনাল্টি দেন সৌদির ডিফেন্ডার। এ বার পেনাল্টি নিতে যান এমবাপে। বিশ্বকাপের ফাইনালে তিনটি পেনাল্টিতেই গোল করেছিলেন তিনি। এ বারও করলেন।

৬০ মিনিটের পরে মেসি, এমবাপে, রোনাল্ডো ও নেমারকে তুলে নেওয়া হয়। বোঝাই যাচ্ছিল, দলের প্রধান ফুটবলারদের নিয়ে বেশি ঝুঁকি নিতে চাননি কোচেরা। ৭৭ মিনিটের মাথায় পিএসজির হয়ে আরও একটি গোল করেন হুগো একিটিকে। খেলার অতিরিক্ত সময়ে সৌদির ক্লাবের হয়ে চার নম্বর গোল করেন ট্যালিস্কা। তাতে অবশ্য পিএসজির জিততে সমস্যা হল না। ১০ জনে প্রায় আধ ঘণ্টা খেলেও ম্যাচ জিতল পিএসজি। সেই সঙ্গে জিতল ফুটবল। ইতিহাসের সাক্ষী থাকলেন হাজার হাজার দর্শক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.