চেন্নাই এক্সপ্রেসে আবার ধাক্কা খেলেন রোহিতরা! মুম্বইকে অনায়াসে হারিয়ে জয় ধোনিদের

অবশেষে শাপমুক্তি।

নিজেদের মাঠে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারাতে কার্যত ভুলেই গিয়েছিল চেন্নাই। কোভিডের আগে টানা পাঁচটি ম্যাচে এমএ চিদম্বরম স্টেডিয়ামে হলুদ ঝড় থামিয়ে ম্যাচ জিতে নিয়েছিল মুম্বই। এ বার হল না। বলে-ব্যাটে ম্যাচের শুরু থেকে দাপট দেখিয়ে মুম্বইকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল চেন্নাই। আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৩৯-৮ স্কোরে থেমে যায় মুম্বই। চেন্নাই সেই রান তুলে নিল ১৪ বল বাকি থাকতেই। সেই জয় এল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ব্যাটে। উইনিং শটটি তিনিই নিলেন।

মুম্বই ম্যাচটা হেরে গিয়েছিল তৃতীয় ওভারেই। পঞ্চম বলে অদ্ভুত শট মারতে গিয়ে আউট হলেন রোহিত শর্মা। নেহাল ওয়াধেরা বাদে মিডল অর্ডারের কোনও ব্যাটারই ভরসা দিতে পারলেন না।

অবাক করার মতো হলেও চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নামেননি রোহিত শর্মা। এমনিতেই মুম্বইয়ের ওপেনিং জুটি সব ম্যাচে ভরসা দিতে পারছে না। তার উপর রোহিতের এই সিদ্ধান্তে উঠে গিয়েছিল প্রশ্ন। হয়তো রোহিত ভেবেছিলেন ওপেনাররা চেন্নাইয়ের পেসারদের সামলে দিলে তিনি পরে স্পিনারদের আক্রমণ করবেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনা কাজে লাগেনি।

দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান গ্রিন। তুষারের বলে বোল্ড হন। বাধ্য হয়ে নামতে হয় রোহিতকে। কিন্তু জুটি গড়তে পারেননি। দ্বিতীয় ওভারে দীপক চাহার তুলে নেন ঈশান কিশনকে। অনায়াসে ধরে খেলতে পারতেন ঈশান। অতিরিক্ত আগ্রাসী হতে গিয়ে উইকেট খোয়ালেন তিনি।

রোহিতের আউট আরও দুর্ভাগ্যজনক। দল যেখানে দুই উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে, সেখানে আরও দায়িত্ব নিয়ে তাঁর খেলা দরকার ছিল। কিন্তু তৃতীয় বলেই স্বভাববিরুদ্ধে ল্যাপ স্কুপ কেন খেলতে গেলেন তা দুর্বোধ্য। স্বাভাবিক ভাবেই বল ঠিক জায়গায় লাগেনি। পয়েন্টে লোপ্পা ক্যাচ ধরেন রবীন্দ্র জাডেজা। তৃতীয় ওভার শেষ হওয়ার আগেই সাজঘরে মুম্বইয়ের টপ অর্ডার।

চেন্নাইয়ের মাঠে তখন তুমুল চিৎকার। জল্পনা চলছে মুম্বইকে একশো রানের মধ্যে শেষ করে দেওয়া যাবে কি না। সেটা হল না একমাত্র নেহাল ওয়াধেরার জন্যে। তরুণ ব্যাটার এ বারই প্রথম মুম্বইয়ের হয়ে খেলছেন। প্রতিটি ম্যাচেই নিজের মতো করে অবদান রাখছেন। এ দিনও চাপের মুখে চেন্নাই বোলারদের সামলে অর্ধশতরান করে গেলেন তিনি।

ছন্দে থাকা সূর্যকুমার যাদবের কাছে সুযোগ ছিল টানা তৃতীয় অর্ধশতরানের। শুরুটাও ভালই করেছিলেন। কিন্তু ধরে রাখতে পারলেন না। জাডেজার বিরুদ্ধে উইকেট ছেড়ে চালাতে গিয়েছিলেন। বলের লাইন মিস্ করে বোল্ড। দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রিস্টান স্টাবস খুব বেশি ম্যাচে খেলার সুযোদ পাচ্ছেন না। এ দিন পেলেন। নেহালের সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষণ জুটি বেধে ধস সামলালেন। কিন্তু নায়ক হয়ে ওঠার মতো ইনিংস পাওয়া গেল না তাঁর কাছ থেকেও। একই অবস্থা টিম ডেভিডের। রান তাড়া করার ক্ষেত্রে তিনি যতটা পারদর্শী, রান তোলার ক্ষেত্রে ততটা নয়। তাই শুরু থেকেই অতি আগ্রাসী হতে চেষ্টা করার ফল ভুগলেন।

নেহাল আউট হওয়ার পরে আর কোনও আশা ছিল না। শেষের দিকে একের পর এক উইকেট পড়ল। তুষার এ দিনও দুর্দান্ত বল করলেন। বেগনি টুপিও উঠল তাঁর মাথায়। তিনটি উইকেট নিলেন মাথিশা পাথিরানাও।

ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই মুম্বইয়ের উপর দাপট শুরু করে চেন্নাই। আর্শাদ খানের ওভার থেকে ওঠে ২০। চার ওভারে ৪৬ রান তুলে ফেলে তারা। রোহিত বাধ্য হন স্পিনারদের আনতে। প্রথম ওভারেই সাফল্য। পীযূষ চাওলার প্রথম বলে ফিরে যান রুতুরাজ গায়কোয়াড়।

তাতেও চেন্নাইয়ের রান তোলার গতি কমেনি। সদ্য বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে সুযোগ পাওয়া অজিঙ্ক রাহানে নেমেই আগ্রাসী ভঙ্গিতে খেলতে শুরু করেন। তাঁকেও তুলে নেন চাওলা। রাহানেকে এলবিডব্লিউ করেন তিনি। অম্বাতি রায়ডুও আহামরি খেলতে পারেননি।

কিন্তু শুরু থেকে ধীরস্থির ভঙ্গিতে খেলছিলেন ডেভন কনওয়ে। দলের প্রয়োজনে যেমনটা দরকার তেমনই খেলছিলেন তিনি। রান রেট ভাল থাকায় অহেতুক কোনও ঝুঁকি নিতে যাননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.