রবিবার ইডেনে তিনি স্পর্শ করেছেন কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকরের এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৪৯ শতরানের কীর্তি। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা বিরাট কোহলিকে দেখে মুগ্ধ রিকি পন্টিং। তিনি জানিয়েছেন, বোলার হিসেবে নয়, তিনি কোহলিকে দেখতে চান ব্যাটসম্যান হিসেবেই। চান আরও অনেক রান।
ইনস্টাগ্রামে কোহলির সঙ্গে নিজের একটি ভিডিয়ো দিয়েছেন প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘‘জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে বিরাটের কাছে গিয়েছিলাম। ও তখন বল করছিল। আমি বিরাটকে বলি, তোমাকে বোলার হিসেবে দেখতে চাই না। বরং ব্যাট হাতে আরও অনেক রান করছ, সেটাই মন দিয়ে দেখতে চাই।’’
পরে সম্প্রচারকারী চ্যানেলে পন্টিং বলেছেন, ‘‘নিঃসন্দেহে বলে দেওয়া যায়, বিরাট-ই এই মুহূর্তে বিশ্বক্রিকেটে সেরা ব্যাটসম্যান। আমি অনেক দিন আগে থেকেই সেটা বলে এসেছি।’’ যোগ করেন, ‘‘কোহলি যে মানের ক্রিকেটার, তাতে ওর সচিনের রেকর্ড স্পর্শ করার প্রয়োজন পড়ে বলে আমি অন্তত মনে করি না। ওর সামগ্রিক পরিসংখ্যানই বলে দেবে, কোহলি কত উচ্চস্তরের ব্যাটসম্যান। এখনও পর্যন্ত ও যা করেছে, তা অকল্পনীয়।’’
বরং প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক মনে করেন, সচিনের ৪৯ নম্বর শতরানের কীর্তি স্পর্শ করার ফলে চলতি বিশ্বকাপে বাকি দলগুলিকে বিরাট সম্পর্কে আরও বেশি আতঙ্কেই থাকতে হবে। তিনি বলেছেন, ‘‘এখন তো বিরাট খোলামেলা মেজাজেই খেলবে। ওর পিঠ থেকে বোঝাটা নেমে যাওয়ায় বিরাট কিন্তু আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে। সেটা বাকি দলগুলোর কাছে বিপদসঙ্কেত।’’
খুব কাছ থেকে বিরাটকে দেখেছেন রবি শাস্ত্রীও। ভারতীয় দলের প্রাক্তন প্রধান কোচ আবার মনে করেন, আগের অহংকে বিসর্জন দিয়ে বিরাট আবার চেনা মেজাজে ফিরেছেন। শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘ক্রিকেট কিন্তু নম্র হওয়ার শিক্ষাও দেয়। শুধু তাই নয়, শেখায় আরও অনেক কিছু। যা চরিত্র গঠনের পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনেও প্রয়োগ করা সম্ভব।’’
শাস্ত্রী যোগ করেছেন, ‘‘ক্রিকেট বিরাটকে যেমন শিখিয়েছে প্রয়োজনে নিজের অহংকেও বিসর্জন দিতে হয়। ও বিশাল মাপের ক্রিকেটার সবাই জানে। প্রতিটি ম্যাচে যেন নতুন কিছু ভাল কিছু করতেই হবে। কিন্তু এক-একটা সময় এমন আসে যখন কিছুতেই সেটা হতে চায় না।’’ যোগ করেন, ‘‘অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়ার বিপদও আছে। তখন মনে হয়, কোনও বোলারই বাধা নয়। যে কোনও পিচেই খেলে দেওয়া যায়। বলা ভাল তখনই খারাপ সময় আসে একের পর এক ম্যাচে।’’
বিরাটের দুঃসময় কাটিয়ে ওঠার প্রসঙ্গে শাস্ত্রী বলেছেন, ‘‘এই রকম খারাপ পরিস্থিতিতে একেবারে শূন্য থেকে প্রাথমিক শিক্ষাগুলো ঝালিয়ে নিতে হয়। অতীতে করা শতরানগুলি দেখতে হয়। যার বেশির ভাগই এসেছিল উইকেটের মাঝখানে ছুটে। বড় শট মেরে নয়।’’ যোগ করেছেন, ‘‘এখন ফারাকটা বোঝা যাচ্ছে। ওর শরীরীভাষাও পাল্টে গিয়েছে। বেড়েছে নিজের উপরে বিশ্বাস, শান্ত ভাবও। মাঠে নেমেই আগ্রাসনের রাস্তা থেকে সরে এসেছে। চাপ সামলাচ্ছে দারুণ ভাবে।’’