রোহিত শর্মার মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে হারের হ্যাটট্রিক রুখতে নামছে অইন মর্গ্যানের কলকাতা

চেন্নাইয়ের চিপক স্টেডিয়ামে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বাইশ গজের যুদ্ধ দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেট মহল। পাঁচ বারের আইপিএল জয়ী দল এ বারও হার দিয়ে মরসুম শুরু করেছে। ২০১২ থেকে ২০২১ পর্যন্ত টানা ৯ বছর প্রথম ম্যাচ হেরেছে রোহিত শর্মার দল। তবে এতে তাদের ট্রফি জিততে বেগ পেতে হয়নি। অন্যদিকে গত মরসুমের খারাপ সময় কাটিয়ে এ বার জয় দিয়ে অভিযান শুরু করেছেন কলকাতা নাইট রাইডার্স।

তবে এই ম্যাচের আগে দুই দলের পরিসংখ্যান ও বেশ কিছু আকর্ষণীয় তথ্যের দিকে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। এখনও পর্যন্ত দুটো দল ২৮বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে মুম্বইয়ের পাল্লা ভারী। তাদের জয় ২১বার। কেকেআর মাত্র ৭বার জয়ের মুখ দেখেছে। গত বছর দুবারের সাক্ষাতেই জয় পেয়েছেন রোহিত।

রোহিত শর্মা বনাম প্যাট কামিন্স: নাইটদের বিরুদ্ধে রোহিতের ব্যাট যেন কথা বলে। এখনও পর্যন্ত কলকাতার বিরুদ্ধে সর্বাধিক ৯৩৯ রান করেছেন ‘হিট ম্যান’। এর মধ্যে রয়েছে একটি শতরান। ২০১২ সালে ইডেনে ১০৯ রানে অপরাজিত ছিলেন মুম্বই অধিনায়ক। আর মাত্র ৭১ রান করলেই কলকাতার বিরুদ্ধে ১০০০ রান করে ফেলবেন রোহিত। গত বারের ফাইনাল ম্যাচ রোহিতের ব্যাটে তেমন রান ছিল না। তবে এ বার শুরু থেকেই ছন্দে রয়েছেন তিনি। তাঁকে আটকাতে আজ কেকেআরের জন্য প্রধান অস্ত্র হতে চলেছেন প্যাট কামিন্স। যিনি আইসিসি-র টেস্ট ক্রমতালিকার শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও কামিন্সের বোলিং নজরকাড়া। গত ম্যাচে বেশ ভাল বল করেছেন এই অজি জোরে বোলার।

কুইন্টন ডি’ কক বনাম প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ: সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ক্রিস লিনের বদলে রোহিতের সঙ্গে ওপেন করবেন ডি’ কক। আর সেটা হলে নাইটদের কৃষ্ণর সঙ্গে দ্বৈরথ দেখার মতো হবে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গত সিরিজে ছন্দে ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক। একদিনের ক্রিকেটে জমকালো অভিষেকের পর একেবারে টগবগ করে ফুটছেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। গত ম্যাচে ডেভিড ওয়ার্নারকে আউট করে বেশ আত্মবিশ্বাসী কর্নাটকের এই তরুণ।


সূর্যকুমার যাদব বনাম হরভজন সিংহ: গত আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের জার্সিতে দ্বিতীয় সর্বাধিক রান সংগ্রাহক সূর্যকুমার যাদব, ভারতীয় দলের জার্সিতে প্রথমবার খেলতে নেমেই অর্ধশতরান হাঁকিয়েছেন। সেই তিনি এবারের আইপিএলেও মুম্বইয়ের বড় ভরসা হতে চলেছেন বলে বিশ্বাস ক্রিকেট প্রেমীদের। তাঁকে আটকাতে কেকেআরের জন্য প্রধান অস্ত্র হতে পারেন অভিজ্ঞ হরভজন সিংহ। যিনি দীর্ঘ ২ বছর পর আইপিএল জগতে ফিরে এসেছেন। মুম্বই সংসারে ১০ বছর কাটানো ভাজ্জি বিপক্ষের সবাইকে হাতের তালুর মতো চেনেন। তাছাড়া চেন্নাই সুপার কিংসে দুই মরসুম খেলার সুবাদে চিপকের বাইশ গজ তাঁর জানা। তাই প্রবীণ বনাম তরুণের এই লড়াই জমে উঠতে পারে।

অইন মর্গ্যান বনাম যশপ্রীত বুমরা: চলতি আইপিএলে কেকেআরের সাফল্য অধিনায়ক অইন মর্গ্যানের উপর নির্ভর করছে। গত মরসুমের মাঝপথে দায়িত্ব নিলেও দল একেবারেই মেলে ধরতে পারেনি। তবে মিডল অর্ডারে দ্রুত রান তুলতে পারেন। প্রথম ম্যাচে রান আসেনি। এই ম্যাচে কেমন ব্যাট করেন সেটাই দেখার। সেই মর্গ্যানকে আটকানোর অস্ত্র রয়েছে বুমরার হাতে। যাকে জাহির খান ‘তুরুপের তাস’ বলেছেন। প্রায় সব ম্যাচেই ‘ডেথ অভার’এ দলকে বাঁচান। গত আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন। তাই বাড়তি প্রত্যাশা তো থাকবেই।

আন্দ্রে রাসেল বনাম ট্রেন্ট বোল্ট: গত আইপিএলে ব্যর্থ হওয়া আন্দ্রে রাসেল, চলতি মরসুমে কেকেআরের হয়ে জ্বলে উঠবেন বলে আশা ক্রিকেট প্রেমীদের। ফর্মে থাকলে ক্যারিবিয়ান তারকার থেকে ভয়ঙ্কর ক্রিকেটার আর কেউ হতে পারেন না। তাঁকে আটকাতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্রধান অস্ত্র হতে পারেন ট্রেন্ট বোল্ট। রাসেল প্রথম ম্যাচে ভাল বোলিং করলেও গত মরসুম থেকে তাঁর ব্যাট শান্ত। বিপক্ষ দল তাঁর দুর্বলতা নিয়ে গবেষণা করেছে। তাই রাসেল ব্যাট হাতে ক্রিজে এলেই বদলে যায় বিপক্ষের পরিকল্পনা। শরীরের দিকে তাক করা শর্ট বল কিংবা ওয়াইড ইয়র্কার ইদানীং রাসেলের বিরুদ্ধে বোলারদের প্রধান অস্ত্র।

নীতীশ রানা বনাম ক্রুনাল পাণ্ড্য: গত ম্যাচে ৮০ রানে করে হুঙ্কার দিয়ে বলেছেন তিনি ভাল স্পিন খেলেন। তবে চিপকের পিচে ক্রুনালের ভেতরে ও নিচু হয়ে যাওয়া বল খেলা খুব সহজ নয়। এই অবস্থায় এক সময় মুম্বইতে খেলে যাওয়া নীতীশ কেমন ব্যাট করেন সেই দিকে তাকিয়ে সবাই।

হার্দিক, পোলার্ড বনাম শাকিব: অলরাউন্ডারদের লড়াইয়ে মুম্বইতে হার্দিক পাণ্ড্য,কায়রন পোলার্ডের মতো বিধ্বংসী ক্রিকেটার। কাঁধের চোটের জন্য হার্দিক বোলিং না করলেও ব্যাট ও ফিল্ডিংয়ের মাধ্যমে দলকে সাহায্য করবেন। এর সঙ্গে রয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক। এই দুজনের বিরুদ্ধে শাকিব আল হাসান কতটা মেলে ধরতে পারবেন? সেটা ম্যাচের শেষে বোঝা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.