এএফসি কাপের (AFC Cup 2023) প্রথম ম্যাচে ওড়িশাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan । সোমবার অর্থাৎ আজ মোহনবাগান খেলল মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিরুদ্ধে (Mohun Bagan vs Maziya)। গতবার যে মাজিয়াকে ঘরের মাঠে মোহনবাগান ৫-২ হারিয়েছিল, এদিন সেই মাজিয়ার বিরুদ্ধে ২-১ জিতল মোহনবাগান। গতবারের তুলনায় এবারের মাজিয়া অনেক বেশি শক্তিশালী দল, একথা ম্য়াচের আগেই বলেছিলেন জুয়ান ফেরান্দো। সাফ বলেছিলেন যে, আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। ২৬ হাজার ৭৯৫ জন দর্শকের সামনে ‘খলনায়ক’ থেকে নায়ক হলেন জেসন কামিন্স (Jason Cummins)! শেষ মুহূর্তে বাজিমাত সবুজ-মেরুনের।
এদিন শুরু থেকেই মোহনবাগানাকে কিছুটা ছন্দহীন দেখাচ্ছিল। মিনিট বারোর পর থেকে ধীরে ধীরে ছন্দে ফেরে ফেরান্দোর শিষ্য়রা। ১৮ মিনিটে কোলাসো বাঁ-দিক থেকে দারুণ আক্রমণ তুলে এনেছিলেন। তবে কামিন্সকে দেরিতে মাইনাস করতে গিয়ে গোলের সুযোগটা হাতছাড়া হয় মোহনবাগানের। এরপর ২০ মিনিটে আশিস রাই দুরন্ত বল দিয়েছিলেন বুমোসকে। তবে আশিস বল বাড়ানোর আগেই মাজিয়া বল দখলে নিয়ে নেয়। ফাইনাল থার্ডে মোহনবাগানকে তখনও বেশ ছন্নছাড়া দেখাচ্ছিল। তবে ২৮ মিনিটে মোহনবাগান পেয়ে যায় গোলের দেখা। বক্সের বাইরে হুগো বুমোস পাস বাড়ান জেসন কামিংসকে। দুরন্ত টাচ থেকে চকিতে টার্ন নিয়ে বুলেট শট নেন কামিংস। এই গোল মাজিয়ার গোলকিপারের পক্ষে আটকানো সম্ভব ছিল না। প্রথম পোস্টে লেগে বল জালে জড়িয়ে যায়।
৪০ মিনিটে ফের গোলের দরজা খুলে যায় সবুজ-মেরুনের। আর্মান্দো সাদিকুকে বক্সের মধ্যে ফাউল করে বসেন ব্রানিমির জোকচি। সঙ্গে সঙ্গে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। শট নেওয়ার আগে দিমিত্রি-কামিন্স-বুমোস কিছুক্ষণ আলোচনা করেন। কামিন্স শট না নিয়ে পাস পেনাল্টি করতে গিয়েছিলেন। তিনি পাস দেন দিমিত্রিকে। কিন্তু দিমিত্রির আর কিছুই করার ছিল না। তিনি বল গোলে রাখতে পারেননি। কামিন্স অবধারিত গোলটা মাঠে ফেলে রাখেন। কামিন্স-দিমিত্রি ২০১৬-র লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজ হতে চেয়েছিলেন। মেসি-সুয়ারেজ তখন খেলতেন বার্সার হয়ে। সেল্টা ভিগোর বিরুদ্ধে মেসি পেনাল্টি নিতে গিয়ে পাস দিয়েছিলেন সুয়ারেজকে। সুয়ারেজ গোল করতে কোনও ভুলই করেননি। তবে কামিন্সের মেসি হওয়া হল না! এই গোল না করার খেসারত দিতে হল পেনাল্টি হাতছাড়া করার চার মিনিটের মধ্যেই। ৪৫ মিনিটে মাজিয়ার তমোকি ওয়াডা অসাধারণ শটে টপ কর্নার দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন।
৬৪ মিনিটে জোড়া পরিবর্তন করেন ফেরান্দো। সাহাল আবদুল সামাদ এবং শুভাশিস বোসকে নামান দিমিত্রি পেত্রাতোস এবং আনোয়ার আলির জায়গায়। সেই পরিবর্তনের ঠিক আগেই ডবল চেঞ্জ মাজিয়ারও। কিছুটা চমকে দিয়ে হামজা এবং ওয়াডাকে তুলে নেন মাজিয়ার কোচ। ৬৮ মিনিটে হামিলের হেডে গোল এসেও আসেনি। ৯০ মিনিট পর্যন্ত মোহনবাগান একের পর এক আক্রমণ করে গিয়েছে মোহনবাগানা। তবে ৯২ মিনিটে শাপমুক্তি ঘটান সেই কামিন্স। মেসির ছায়া থেকে বেরিয়ে নিজের ছন্দে ধরা দিলেন। সাহালের পাস থেকে অসাধারণ গোল করে মাজিয়ার কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন।