শুভব্রত মুখার্জি: ভারতীয় অলিম্পিক্সের ইতিহাসে ৭ই অগস্টের আগে পর্যন্ত একাধিক ভারতীয় অ্যাথলিট ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে গেমস থেকে পদক জয়ের কাছে পৌঁছালেও তারা তা জিততে সে দিন কোন কারণে সক্ষম হননি। সেই ট্র্যাডিশান ভেঙে নীরজ চোপড়া টোকিও থেকে ভারতকে শুধু ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে তার প্রথম পদক এনে দিলেন সেটাই নয়, একেবারে সোনার পদক আনতে সক্ষম হলেন নীরজ চোপড়া। ফাইনালে যেখানে দু’জন শক্তিশালী জার্মান প্রতিপক্ষ ,দু’জন চেক প্রতিপক্ষ ছিল সেখানে দাঁড়িয়ে এই পারফরম্যান্স আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।
এই সোনা জয়ের পরে প্রয়াত কিংবদন্তি অ্যাথলিট মিলখা সিংকে নিজের জয়ী পদক উৎসর্গ করলেন নীরজ চোপড়া। বলা ভাল এই বছরের প্রথমদিকেই গেমস শুরুর আগেই মিলখা সিং আশা প্রকাশ করেছিলেন তিনি ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড থেকে ভারতীয় অ্যাথলিটের স্বর্ণপদক অথবা পদক জয় চাক্ষুষ করতে চান। করোনায় আক্রান্ত হয়ে এই বছরেই গেমস শুরুর মাত্র কয়েকদিন আগেই মিলখা সিং এবং তাঁর স্ত্রী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মিলখা সিংয়ের পক্ষে নীরজের এই সোনার মূহুর্ত চাক্ষুষ করা সম্ভব না হলেও মিলখা সিংয়ের স্বপ্নকে সফল করে সোনা জিতে সেই পদক মিলখা সিংয়ের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করলেন তিনি।
উল্লেখ্য ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিক্সে ভারত সর্বপ্রথম ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে মেডেল জয়ের সবথেকে কাছে এসেছিল। সেবার ১০০ মিটারে চতুর্থ স্থানে শেষ করেছিলেন ‘উড়ন্ত শিখ’ মিলখা সিং। এই জুনেই কোভিড আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মিলখা সিং। ‘উড়ন্ড শিখ’ মিলখা সিংকে নিজের পদক উৎসর্গ করে নীরজ জানান ‘ মিলখা সিং গেমসের মঞ্চে স্টেডিয়ামে ভারতীয় জাতীয় সঙ্গীত বাজতে শুনতে চেয়েছিলেন। উনি আর আমাদের মধ্যে নেই। তবে ওনার স্বপ্ন সফল করতে পেরে আমার খুব ভাল লাগছে। আমি আমার পদকটি ওনার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করছি।’ নীরজের এই আচরণে মুগ্ধ হয়ে মিলখা সিংয়ের পুত্র জীব মিলখা সিং টুইট করেন ‘বাবা বহু বছর এই মুহূর্তটা দেখার বিষয়ে অপেক্ষা করেছেন। বাবার স্বপ্ন অবশেষে সত্যি হয়েছে। অ্যাথলেটিক্স থেকে ভারত প্রথম সোনা পেয়েছে। এই টুইট লেখার সময় আমি কাঁদছি। আমি নিশ্চিত উপর থেকে বসে বাবার চোখেও আজ জল। অশেষ ধন্যবাদ স্বপ্নকে বাস্তব করার জন্য।’