হার্দিক পাণ্ড্যর হাত ধরে এ বার আইপিএলের দুনিয়াতেও নতুন গুজরাতের জন্ম হল। আইপিএল আবির্ভাবেই ‘গেম মারিছে’ (অর্থাৎ যা আছে, সব আমার) গুজরাত। দেশের ক্ষমতার কেন্দ্রে যেমন গুজরাতের আধিপত্য, তেমনই এ বার দেশের ক্রোড়পতি লিগও গেল গুজরাতে। প্রথম বার অধিনায়কত্ব করতে নেমে ঘরের মাঠে এক লক্ষের বেশি দর্শকের সামনে গুজরাত টাইটান্সকে চ্যাম্পিয়ন করলেন হার্দিক। প্রথমে বল হাতে রাজস্থানকে একের পর এক ধাক্কা দিলেন তিনি। পরে রান তাড়া করতে নেমে নিজের ব্যাটিং প্রতিভাও দেখালেন। গুজরাতের বোলারদের দাপটে মাত্র ১৩০ রান করতে পারে রাজস্থান। জবাবে ১১ বল বাকি থাকতে সাত উইকেটে ম্যাচ জিতে আইপিএল খেতাব জিতল গুজরাত।
এ বারের আইপিএলে খুব বেশি বল করেননি হার্দিক। তবে জানিয়েছিলেন, বল করার জন্য তিনি তৈরি। কয়েক মাস পরে অস্ট্রেলিয়ায় টি২০ বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে এখন বেশি বল করছেন না। ফাইনালে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সেরে নিলেন হার্দিক। ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করলেন। বাউন্সার দিলেন। রাজস্থানের সব থেকে বড় দুই ব্যাটার জস বাটলার ও সঞ্জু স্যামসনকে আউট করে বড় ধাক্কা দিলেন। সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি রাজস্থান।
আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের উইকেটে ৫০ শতাংশের বেশি লেংথে বল করলেন গুজরাতের বোলাররা। ফলে খেলতে সমস্যা হল রাজস্থানের ব্যাটারদের। দেখে বোঝা যাচ্ছিল প্রতিপক্ষের প্রত্যেক ব্যাটারের জন্য পরিকল্পনা করে নেমেছেন হার্দিকরা। একমাত্র বাটলার করলেন ৩৯ রান। বাকি কেউ বড় রান পাননি। মাঝের ওভারে পর পর উইকেট পড়ায় বড় জুটিও হল না। ফলে ১৩০ রানের বেশি করতে পারল না রাজস্থান। হার্দিক চার ওভারে ১৭ রান দিয়ে তিন উইকেট নিলেন। সাই কিশোর নিলেন দুই উইকেট। রশিদ খান এক উইকেট নিলেও নিজের চার ওভারে মাত্র ১৮ রান দিলেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই শুভমন গিলের ক্যাচ ছাড়েন যুজবেন্দ্র চহাল। যদিও পরের ওভারেই ঋদ্ধিমান সাহাকে আউট করে রাজস্থানকে খেলায় ফেরান প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। ম্যাথু ওয়েডও রান পাননি। দুই উইকেট পড়ার পরে শুভমনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন হার্দিক। সাবধানে খেলছিলেন তাঁরা। অহেতুক ঝুঁকি নেননি। তবে খারাপ বল পেলেই বড় শট মারছিলেন দুই ব্যাটার।
যত সময় গড়াচ্ছিল তত রাজস্থানের হাত থেকে জয় দূরে সরে যাচ্ছিল। আস্তিনের শেষ তাস হিসাবে যুজবেন্দ্র চহালকে বলে আনেন সঞ্জু। নিজের শেষ ওভারে হার্দিককে ৩৪ রানের মাথায় আউট করেন তিনি। তাতে অবশ্য বেশি সমস্যায় পড়েনি গুজরাত। শুভমনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ডেভিড মিলার। আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাট করতে থাকেন তিনি। আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি রাজস্থান। শেষ পর্যন্ত সাত উইকেটে ম্যাচ জিতে প্রথম বারের জন্য আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হল হার্দিকের গুজরাত।