ট্রেন্টব্রিজে সূর্যোদয় হল না। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করলেন সূর্যকুমার যাদব। তাঁর শতরানে ভারতীয় সমর্থকদের মনে আশা জাগলেও শেষ পর্যন্ত ১৭ রানে হেরেই মাঠ ছাড়তে হল ভারতকে। শেষ ম্যাচ হারলেও সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতলেন রোহিতরা।
আরও এক বার ব্যর্থ হলেন বিরাট কোহলী। রান পেলেন না রোহিত শর্মাও। আগের দুই ম্যাচে ভারতীয় বোলাররা দলকে জিতিয়েছিলেন। সিরিজ আগেই জিতে যাওয়ায় এই ম্যাচে ভুবনেশ্বর কুমার, যশপ্রীত বুমরাদের বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। সুযোগ পাওয়া আবেশ খান, উমরান মালিকরা বেধড়ক মার খেলেন। উইকেট বদল হলে যে বলের লাইন, লেংথেও বদল করতে হয় সেটা বোধহয় ভুলে গেলেন তাঁরা। এজবাস্টনে উইকেট থেকে সাহায্য ছিল। ট্রেন্টব্রিজে পাটা উইকেটে সেই সাহায্য পেলেন না বোলাররা। ক্রমাগত গায়ের জোরে বল করে গেলেন ভারতীয় বোলাররা। বলের গতি কাজে লাগিয়ে বিশাল রান করল ইংল্যান্ড।
টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট শুরু করেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জেসন রয় ও জস বাটলার। আগের দুই ম্যাচে রান না পেলেও এই ম্যাচে ভাল দেখাচ্ছিল ইংল্যান্ডের অধিনায়ককে। ১৮ রানের মাথায় বাটলারকে আউট করে ইংল্যান্ডকে প্রথম ধাক্কা দেন আবেশ। ২৭ রান করে উমরানের বলে আউট হন রয়। রান পাননি ফিলিপ সল্ট।
তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে জুটি বাঁধেন দাউইদ মালান ও লিয়াম লিভিংস্টোন। ভারতীয় বোলারদের গতি ব্যবহার করে বড় শট খেলছিলেন তাঁরা। উমরান, আবেশ ক্রমাগত লেংথে বল করে গেলেন। গতির হেরফের করলেন না। ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে বড় শট খেলতে সমস্যা হল না ইংরেজ ব্যাটারদের। খারাপ বল করলেন রবীন্দ্র জাডেজাও।
মাত্র ২৬ বলে অর্ধশতরান করেন মালান। তার পরে আরও আক্রমণাত্মক দেখায় তাঁকে। ৭৭ রান করে রবি বিষ্ণোইয়ের বলে আউট হন মালান। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে একমাত্র বিষ্ণোইকে ভাল দেখাল। মালানের পরে সেই ওভারেই মইন আলিকে আউট করেন তিনি। লিভিংস্টোন ৪২ রান করে অপরাজিত থাকেন। ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২১৫ রান করে ইংল্যান্ড। উমরান, জাডেজা ও আবেশ নিজেদের চার ওভারে যথাক্রমে ৫৬, ৪৫ ও ৪৩ রান দেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ভারত। দ্বিতীয় ওভারেই রিস টপলির বলে এক রান করে আউট হয়ে যান ঋষভ পন্থ। তিনে নেমে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন কোহলী। পর পর দু’বলে চার ও ছক্কা মারেন। দেখে মনে হচ্ছিল বড় রান আসতে চলেছে তাঁর ব্যাট থেকে। কিন্তু পরের বলেই কভার অঞ্চলে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১১ রান করে আউট হন তিনি। ১১ রান করেন রোহিতও।
দেখে মনে হচ্ছিল বড় ব্যবধানে হারবে ভারত। কিন্তু চতুর্থ উইকেটে জুটি বাঁধেন সূর্যকুমার যাদব ও শ্রেয়স আয়ার। রানের গতি কমতে দেননি তাঁরা। পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় যান দু’জনে। অর্ধশতরান করেন সূর্য। ভাল দেখাচ্ছিল শ্রেয়সকেও।
দুই ব্যাটারের মধ্যে মাত্র ৫৭ বলে শতরানের জুটি হয়। প্রতি ওভারে বড় শট মারছিলেন সূর্য। বোলারের গতি ব্যবহার করে কব্জির মোচরে বল বাউন্ডারি পার করে দিচ্ছিলেন তিনি। ৩০ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৬৬ রান। সেই সময় ২৮ রান করে আউট হয়ে যান শ্রেয়স। ইংল্যান্ডের হয়ে টপলি ৩ উইকেট নেন।
শ্রেয়স আউট হলেও রানের গতি কমেনি সূর্যর। নিজের ছন্দে খেলছিলেন তিনি। মাত্র ৪৮ বলে শতরান করেন সূর্য। পঞ্চম ভারতীয় ব্যাটার হিসাবে এই রেকর্ড করলেন তিনি। সূর্য টিকে থাকলেও সঙ্গ দিতে পারলেন না দীনেশ কার্তিক, রবীন্দ্র জাডেজারা।
শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৪৯ রান। মইন আলির ওভারে ঝুঁকি নিয়ে বড় শট খেলতে গিয়ে ১১৭ রান করে আউট হয়ে যান সূর্য। তিনি আউট হতেই ভারতের সব আশা শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ১৭ রানে ম্যাচ হারল ভারত।