রানের পাহাড় ঘাড়ে নিয়ে নেমে ১৮৬ রানে ছ’টি উইকেট খোয়ালে স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়ে যাওয়ার কথা যে কোনও দলের। আর তা যদি হয় ব্রিসবেনের মতো ‘অজি অধ্যুষিত’ এলাকা, তাহলে তো কথাই নেই। কিন্তু ভারতীয় দল (Team India) যেন সমস্ত প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়ে তাকে জয় করতে শিখে গিয়েছে। শেষ টেস্টের তৃতীয় দিন ফের মিলল তার প্রমাণ। সপ্তম ও অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে নেমে অজি বোলিংয়ের দিকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন ওয়াশিংটন সুন্দর এবং শার্দুল ঠাকুর। তাঁদের দুর্দান্ত পার্টনারশিপে ভর করেই স্বস্তিজনক জায়গায় পৌঁছে গেল টিম ইন্ডিয়া।
চোট আঘাতে জর্জরিত ভারতীয় শিবির যেন মিনি হাসপাতাল। যার জেরে গত ম্যাচের দল ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে সিরিজ নির্ণায়ক টেস্টে অগ্নিপরীক্ষার সামনে রাহানে অ্যান্ড কোং। কিন্তু প্রথম টেস্টে ৩৬ অল আউট হওয়ার পর ঘুরে দাঁড়িয়ে ক্রিকেটাররা বুঝিয়ে দিয়েছেন, কোনও পরিস্থিতিতেই তাঁদের দমানো যাবে না। তা সে বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্যই হোক কিংবা বড় রানের চাপ। হাত ঘুরিয়ে প্রথম ইনিংসে তিনটি করে উইকেট তুলেছিলেন সুন্দর ও শার্দুল। আর ভারতীয় টপ অর্ডারের ব্যর্থতার দিন ব্যাট হাতে তাঁরাই দলকে টেনে তুললেন খাদ থেকে। কে বলবে এটাই ওয়াশিংটনের অভিষেক টেস্ট আর শার্দুল জীবনের দ্বিতীয় টেস্টটি খেলতে নেমেছেন! সপ্তম উইকেটে ১২৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ে নয়া ইতিহাস রচনা করলেন তাঁরা। এই উইকেটে এটাই বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ। তাঁদের আত্মবিশ্বাসী ইনিংসকে প্রশংসায় ভরিয়েছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli), বীরেন্দ্র শেহওয়াগরা। তাঁদের লড়াইকে ‘দাবাং’ পারফরম্যান্স বলে আখ্যা দিয়েছেন বীরু।
তবে স্বপ্নের ইনিংসের ইতি ঘটান সেই বিধ্বংসী প্যাট কামিন্স। ৬৭ রানে ফেরান শার্দুলকে। টেল এন্ডাররা অবশ্য ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৩৩৬ রানেই গুটিয়ে যায় ভারতের প্রথম ইনিংস। তৃতীয় দিনের শেষে ব্যাট করতে নেমে ২১ রান অস্ট্রেলিয়ার। অপরাজিত দুই ওপেনার হ্যারিস ও ওয়ার্নার। ৫৪ রানে এগিয়ে অজিবাহিনী। শার্দুল-সুন্দরের ইনিংসই যে ম্যাচের সমীকরণ বদলে দিল, তা বলাই বাহুল্য।