নিশ্চিত দু’রান ছিল। কিন্তু দীপ্তি শর্মার যেন ‘ব্রেনফেড’ হয়েছিল। ক্রিজে আটকে গিয়েছিলেন। হরমনপ্রীত কৌর ‘কল’ করতে দৌড়াতে শুরু করেন। এমন অবস্থা ছিল যে দু’জনেই রান আউট হতে পারতেন। তারপরই রাগের মাথায় হেলমেট ও ব্যাট ছুড়ে ফেলে দেন হরমন। মাঠের মধ্যে দীপ্তিকে রীতিমতো ঝাড় দেন। সেইসময় দীপ্তি কেঁদে ফেলেছিলেন বলে জানালেন ২০১৭ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের ‘স্টার’।
২০১৭ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ধাক্কা খেয়েছিল ভারত। ৩৫ রানের মাথায় পড়ে গিয়েছিল দু’উইকেট। তারপর ক্রিজে এসেছিলেন হরমন। মিতালি রাজের সঙ্গে ভারতীয় দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তবে দলগত ১০১ রানের মাথায় আউট হয়ে গিয়েছিলেন মিতালি। তারপর ক্রিজে এসেছিলেন তরুণ দীপ্তি। হরমনের ছায়ায় খেলছিলেন তিনি। হরমন বেশিরভাগ রান তুলেছিলেন।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
তারইমধ্যে ৩৫ তম ওভারের শেষ বলে দু’রান নিতে দৌড়েছিলেন হরমন। যিনি সেই সময় ৯৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। নিশ্চিতভাবে দু’রান ছিল। কিন্তু কোনও কারণে এক রানের বেশি নিতে চাইছিলেন না দীপ্তি। স্ট্রাইকার এন্ডে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। হরমনের চিত্কারে দৌড়াতে শুরু করেছিলেন। তাঁর দিকে বল ছোড়া হলে নির্ঘাত আউট হয়ে যেতেন বাংলার তারকা। স্ট্রাইকার এন্ডের দিকে বল আসায় কিছুটা সময় পেয়ে গিয়েছিলেন। স্ট্রাইকার এন্ডে ডাইভ দিয়েছিলেন হরমন। তিনি ক্রিজে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তাই নন-স্ট্রাইকার এন্ডে বল ছুড়ে দিয়েছিলেন অজি উইকেটকিপার অ্যালিসা হিলি। যা উইকেট লাগলেও ক্রিজে ঢুকে গিয়েছিলেন দীপ্তি। যা নিশ্চিত করেছিলেন তৃতীয় আম্পায়ার। তারইমধ্যে হরমন রেগে আগুন হয়ে গিয়েছিলেন। শতরানের জন্য কোনও আনন্দও করেননি। রেগে হেলমেট, ব্যাট ফেলে দিয়েছিলেন।
এবারে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে আইসিসির তরফে হরমন এবং দীপ্তিকে সেই ভিডিয়ো দেখানো হয়। হরমন জানান, নিশ্চিতভাবে দু’রান ছিল। দীপ্তি কী ভাবছিলেন, তা জানেন না। কিন্তু ওই মুহূর্ত ম্যাচে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাই রেগে গিয়েছিলেন। এমনকী বুঝতেও পারেননি যে শতরান হাঁকিয়েছেন। পরে জলবাহকরা জানিয়েছিলেন যে শতরান করে ফেলেছেন হরমন। আইসিসির ভিডিয়োয় তিনি জানান, সেই বকুনির জন্য মাঠের মধ্যেই কেঁদে ফেলেছিলেন। সেজন্য খুবই খারাপ লাগছিল তাঁর। দীপ্তির সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তাঁর কাছে ক্ষমাও চেয়েছিলেন।
সেইসময় কেঁদে ফেললেও দীপ্তি জানান, ম্যাচের মধ্যে এটা হতেই পারে। হরমন একাধিকবার তাঁর কাছে ক্ষমাও চেয়েছিলেন। যে হরমন সেই ম্যাচে বিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ইনিংস খেলেছিলেন। ১১৫ বলে অপরাজিত ১৭১ রান করেছিলেন। শেষ ১১ ওভারে ১৩৯ রান তুলেছিল ভারত। যা সম্ভবপর হয়েছিল হরমনের জন্যই। শেষপর্যন্ত ৩৬ রানে জিতে বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল ভারত। তারইমধ্যে দীপ্তি জানিয়েছেন, ওটায় দু’রান নয়, এক রান নেওয়া যাবে বলেই ভেবেছিলেন ভারতের অলরাউন্ডার।