আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে পিছিয়ে ছিল সৌদি আরব। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করেছিল তারা। পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দু’গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল তারা। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতেছিল সৌদি আরব। দ্বিতীয়ার্ধে সৌদির খেলা বদলে যাওয়ার পিছনে ছিলেন দলের কোচ হার্ভে রেনার্ড। বিরতিতে ফুটবলারদের ধমকে তাতিয়েছিলেন তিনি। কী বলেছিলেন সৌদির কোচ?
বিরতিতে সৌদির সাজঘরের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পিছিয়ে গিয়ে যথেষ্ট উত্তেজিত রেনার্ড। ফুটবলারদের আরও বেশি আক্রমণাত্মক খেলতে বলছেন। রেনার্ড বলেন, ‘‘আমরা কী করছি? আমরা কোথায় চাপ বাড়াচ্ছি? চাপ বাড়ানো মানে হাইলাইনে খেলা। মেসি মাঝমাঠে খেলছে। ওর কাছে যখন বল থাকছে তখন তোমরা রক্ষণে দাঁড়িয়ে থাকছ। তোমরা কি জানো না ওকে মাঝমাঠে আটকাতে হবে।’’
এ কথা বলার পরেই মেসির সঙ্গে ছবি তোলার প্রসঙ্গ টেনে আনেন রেনার্ড। বলেন, ‘‘নিজেদের ফোন নাও। যদি মেসির সঙ্গে ছবি তুলতে চাও তা হলে তোলো। তোমরা কি মেসির সঙ্গে ছবি তুলতে এসেছ? যদি এ ভাবেই রক্ষণের সামনে দাঁড়িয়ে থাক তা হলে কিচ্ছু হবে না। মেসির কাছে যেতে হবে।’’ শুধু কথা বলা নয়, কী ভাবে মেসির দিকে ছুটে যেতে হবে সেটা নিজে সাজঘরে করে দেখান রেনার্ড। সাজঘরে উপস্থিত দোভাষী রেনার্ডের কথা ফুটবলারদের বুঝিয়ে বলছিলেন। তবে তিনিও রেনার্ডের শরীরী ভাষা লক্ষ্য করছিলেন। যে ভাবে রেনার্ড বলছিলেন, সে ভাবেই তার ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন দোভাষী।
ম্যাচে তাঁরা যে ফিরে আসতে পারেন সেই বিশ্বাস সৌদির ফুটবলারদের মধ্যে ঢুকিয়ে দেন রেনার্ড। তিনি বলেন, ‘‘মাঠে আমরা কী করছি? তোমাদের কি মনে হচ্ছে না আমরা ম্যাচে ফিরতে পারি? তোমাদের কি এটা মনে হচ্ছে না এটা একটা বিশ্বকাপ? নিজেদের সবটা দাও। খেলার দিকে মন দাও।’’ রক্ষণের সামনে কী ভাবে ফুটবলাররা দাঁড়াবেন সেটাও অভিনয় করে দেখান রেনার্ড।
কোচের কথা যে তাঁদের খেলা বদলে দিয়েছিল তা স্বীকার করে নিয়েছেন দলের মিডফিল্ডার আবদুলেলা আল-মালকি। তিনি বলেছেন, ‘‘খেলা শুরুর আগে কোচ আমাদের সবাইকে ডেকে বলেছিলেন, দেশের জন্য নিজেদের ২০০ শতাংশ দিতে। কী ভাবে আমরা এতটা রাস্তা এসেছি সেই গল্প আমাদের বলেন কোচ। সেই সব কথা শুনতে শুনতে কেঁদে ফেলেছিলাম আমরা। বাড়তি তাগিদ পেয়েছিলাম।’’
আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে ০-১ গোলে পিছিয়ে ছিল সৌদি। কিন্তু তার পরেও তারা হতাশ না হয়ে দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে খেলতে নামে। পাঁচ মিনিটের মধ্যে জোড়া গোল করেন আলশেহরি ও আলদাওশারি। বিরতিতেও ফুটবলারদের ক্লাস নিয়েছিলেন রেনার্ড। হতাশ না হয়ে পাল্টা কামড় দিতে বলেছিলেন। সেই কারণে দ্বিতীয়ার্ধে এতটা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে পেরেছিল সৌদি।