বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেও ফ্রান্সের ট্র্যাজিক নায়ক কিলিয়ান এমবাপে

বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেও হাসিমুখে মাঠ ছাড়তে পারলেন না ফ্রান্সের তারকা স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপে। এবারের বিশ্বকাপে ৮ গোল করে গোল্ডেন বুট জিতলেও, দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারলেন না এমবাপে। বিশ্বকাপ ফাইনালে কার্যত তাঁর সঙ্গে আর্জেন্টিনার লড়াই হল। নির্ধারিত সময় ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে হ্যাটট্রিক করার পর টাইব্রেকারেও দলের হয়ে প্রথম গোল করেন এমবাপে।

কিন্তু তাঁর সতীর্থরা লড়াই করতে পারলেন না। ফলে টাইব্রেকারে জিতে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হল আর্জেন্টিনা। গতবার বিশ্বকাপ ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে গোল করে ফ্রান্সকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন এমবাপে। সেই ম্যাচে ৪-২ গোলে জয় পেয়েছিল ফ্রান্স। পরপর ২ বার বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ ছিল ফ্রান্সের সামনে। কিন্তু ইতালি ও ব্রাজিলের পর তৃতীয় দল হিসেবে এই নজির গড়তে পারল না ফ্রান্স। ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে জার্মানির বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ইংল্যান্ডের জিওফ হার্স্ট। তারপর এই প্রথম কোনও ফুটবলার বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক করলেন। তারপরেও ম্লান মুখে মাঠ ছাড়তে হল এমবাপেকে।

১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ জেতার পর ১৯৯০ সালে ফাইনালে উঠেও জার্মানির কাছে হেরে যায় আর্জেন্টিনা। ১৯৯৪ সালে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ১৯৯৮ সালে ফাইনালে উঠে ফ্রান্সের কাছে হেরে যায় ব্রাজিল। ২০১৮ সালে বিশ্বকাপ জেতার পর এবার ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে হেরে গেল ফ্রান্স।

১৯৯৪ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ ফাইনাল গড়ায় টাইব্রেকারে। সেই ম্যাচে ইতালিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল। এরপর ২০০৬ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে দেয় ইতালি। এবার বিশ্বকাপ ফাইনালে টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে দিল আর্জেন্টিনা। ২ বার বিশ্বকাপ ফাইনালে টাইব্রেকারে হেরে গেল ফ্রান্স।

এদিন দলকে জেতাতে না পারলেও, এমবাপে যে পারফরম্যান্স দেখালেন, তা বিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্যতম সেরা। এদিন প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ২৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে প্রথম গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি। এরপর ৩৬ মিনিটে অসাধারণ মুভমেন্ট থেকে গোল করে ব্যবধান বাড়ান অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। প্রথমার্ধের শেষে ২-০ গোলে এগিয়ছিল আর্জেন্টিনা। সেই সময় মনে হচ্ছিল মেসিদের জয় সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু এমবাপে হাল ছাড়েননি। ৮০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে প্রথম গোল করে ব্যবধান কমানোর পরের মিনিটেই ফের গোল করে সমতা ফেরান। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনার হয়ে তৃতীয় গোল করেন মেসি। সেই গোলও শোধ করে দেন এমবাপে। তারপরেও জয় পেল না ফ্রান্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.