মোহিত শর্মার শেষ বলটা রবীন্দ্র জাডেজার পায়ে লেগে ফাইন লেগের বাউন্ডারির দিকে এগিয়ে যাওয়ামাত্রই আর উত্তেজনা চেপে ধরে রাখতে পারলেন না চেন্নাইয়ের ক্রিকেটাররা। ডাগআউট একের পর এক হলুদ জার্সি ছুটে গেল মাঠে। তিনি ছিলেন একটু পিছনের দিকেই। ক্যামেরা খুব অল্প সময়ের জন্যে ধরল তাঁর মুখ। মাথা নীচু। চোখ বন্ধ। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ঠিক এতটাই শান্ত। হারলেও কেঁদে ভাসান না। জিতলেও নিজেকে আবেগে ভাসিয়ে দেন না।
মাথা নীচু করে নিজের মতো সময়টা বেশি ক্ষণ উপভোগ করা হল না। সতীর্থরা এসে ডাকাডাকি শুরু করাতে তিনিও হাঁটা দিলেন মাঠের দিকে। মুখে স্মিত হাসি। তবে সবার আগে এগিয়ে গেলেন রবীন্দ্র জাডেজার দিকে। জাডেজাও তখন ধোনির দিকে এগোচ্ছিলেন। সোজা তাঁকে কোলে তুলে নিলেন তিনি।
এই জাডেজার সঙ্গেই ধোনির ঝামেলা কয়েক দিন আগে শিরোনাম হয়েছিল। একটি ম্যাচে জাডেজার খারাপ বোলিং দেখে তাঁকে ধমকেছিলেন ধোনি। আবার দু’জনের মধ্যে ঝামেলার জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে। সেই ঘটনা যে জল্পনাই ছিল, ব্যক্তিগত কোনও প্রভাব পড়ে না, সেটা দুই ক্রিকেটারের আচরণ দেখেই বোঝা গেল।
গত বছর এই জাডেজার হাতেই অধিনায়কত্বের ভার তুলে দিয়েছিলেন ধোনি। জাডেজা সামলাতে পারছেন না দেখে নিজে আবার দায়িত্ব ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। বরাবরই ধোনির প্রিয় ক্রিকেটার জাডেজা। দলের অন্যতম সেরা অস্ত্রের একজনকে সামনে দেখে অবশেষে আর আবেগ আটকাতে পারেননি।
আর একটু হলেই চেন্নাই সমর্থকদের চোখে খলনায়ক হয়ে যেতে পারতেন ধোনি। অম্বাতি রায়ডু হওয়ার সময় চেন্নাইয়ের দরকার ছিল ১৫ বলে ২২। ভেবেছিলেন আবার নিজের পুরনো ফিনিশার রূপ ফেরাবেন। কিন্তু ক্রিকেট কোনও চিত্রনাট্য মেনে হয় না। তাই ধোনিরও ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো নায়ক হওয়া হল না। প্রথম বলেই কভারে ক্যাচ এবং আউট।
গ্যালারি থেকে গোটা ম্যাচে হলুদ পতাকা নাড়িয়ে যাচ্ছিল সাদা ফ্রক পরিহিতা ধোনি-কন্যা জিভা। পাশে ছিলেন স্ত্রী সাক্ষী। ম্যাচ শেষ হতেই নেমে এলেন মাঠে। মেয়ের সঙ্গে কিছু ক্ষণ খুনসুটি চলল। এর পর কোলে তুলে নিলেন মিচেল স্যান্টনারের সন্তানকে। তাঁকে এসে আবার আদর করে দিলেন জিভাই।
একেবারে শেষের দিকে এল সেই মুহূর্ত। আগেই বেশ কয়েক বার আইপিএল ট্রফির আশেপাশে ঘোরাঘুরি করছিলেন। আগে চার বার হাতে একই ট্রফি তুললেও সেই ছাপ কোথাও ছিল না। মনে হচ্ছিল প্রথম বারের মতো ট্রফি পেতে চলেছেন। ট্রফি তোলার সময়েও সেই অপার মুগ্ধতা।