সাউথগেটের চালে জিতল ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে আবার ইউরোর ফাইনালে হ্যারি কেনরা

ম্যাচের ৮০ মিনিটে জোড়া পরিবর্তন। আর তাতেই বাজিমাত করে দিলেন গ্যারেথ সাউথগেট। বুধবার ডর্টমুন্ডে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে আবার ইউরো কাপের ফাইনালে ইংল্যান্ড। এ বার তাদের সামনে স্পেন। ইংল্যান্ড জিতল ২-১ ব্যবধানে। জ়াভি সিমন্স নেদারল্যান্ডসকে এগিয়ে দিলেও হ্যারি কেন এবং অলি ওয়াটকিন্সের গোলে জিতল ইংল্যান্ড।

দ্বিতীয়ার্ধে যখন উত্তেজনাহীন ফুটবল হচ্ছে, তখনই সাহসী চাল দিলেন সাউথগেট। গোলদাতা হ্যারি কেনকে তুলে নিয়ে নামালেন অলি ওয়াটকিন্সকে। কোল পামার এলেন ফিল ফোডেনের জায়গায়। সংযুক্তি সময়ে সেই ওয়াটকিন্সের গোলেই নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে দিল ইংল্যান্ড। খেটে গেল সাউথগেটের চাল। আগামী রবিবার স্পেনের বিরুদ্ধে খেলবে ইংল্যান্ড।

ম্যাচের শুরু থেকে বল নিজেদের পায়ে রেখেছিল ইংল্যান্ড। চেষ্টা করছিল ধীর গতিতে আক্রমণে ওঠার। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের পরিকল্পনা ছিল অন্য। তারা শুরু থেকেই আক্রমণের খেলায় নেমেছিল। ফলে চার মিনিটেই প্রথম আক্রমণ করে তারা। গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ডের সৌজন্যে সে যাত্রায় বেঁচে যায় ইংল্যান্ড। কিন্তু বেশি ক্ষণ ডাচদের ঠেকাতে পারেনি তারা। সাত মিনিটেই এগিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস।

মাঝমাঠে ডেক্লান রাইসের থেকে বল কেড়ে নিয়েছিলেন সিমন্স। একাই এগিয়ে যান সামনের দিকে। বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়ে শট মারেন। শট মারার আগেই পিছলে গিয়েছিলেন। তবু সেই শটের জোর যা ছিল তা আটকাতে পারেননি পিকফোর্ড। গোল খাওয়ার পরে কিছু ক্ষণের জন্য বেসামাল হয়ে পড়ে ইংল্যান্ডের রক্ষণ। নেদারল্যান্ডসকে অনেকটা জায়গা দিয়ে দিচ্ছিল তারা। ডাচরা অবশ্য সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি।

১২ মিনিটেক মাথায় ফোডেনের ফ্রিকিক থেকে ইংল্যান্ডের প্রয়াস প্রতিহত হয়। ১৪ মিনিটে পেনাল্টি পায় ইংল্যান্ড। বুকায়ো সাকার শট আটকে দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস রক্ষণ। ফিরতি বল হ্যারি কেনের সামনে এসে পড়ে। চলতি বলে হ্যারি শট মারার পর পা তুলে তাঁকে আটকাতে গিয়েছিলেন ডেঞ্জিল ডামফ্রিস। হ্যারি শট মারার পর তাঁর পা বিপক্ষ অধিনায়ককে আঘাত করে। ভিডিয়ো অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভার) সাহায্য নিয়ে মাঠের রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নেন। হ্যারির শট আটকাতে পারেননি নেদারল্যান্ডস গোলকিপার ভারব্রুগেন। এতটাই নিখুঁত ছিল সেই শট।

গোল পাওয়ায় ইংল্যান্ডের আক্রমণে ঝাঁজ বাড়ে। আরও বেশি আক্রমণ করতে শুরু করে তারা। একটি গোললাইন সেভ করেন ডামফ্রিস। কোবি মাইনুর থেকে পাস পেয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়ে গোল লক্ষ্য করে শট মেরেছিলেন ফোডেন। তা বাঁচিয়ে দেন ডামফ্রিস। ইংল্যান্ডের খেলায় কোনও বদল আসেনি। আগের ম্যাচগুলিতে তারা একটু রক্ষণাত্মক খেললেও এ দিন বেশ আগ্রাসী লেগেছে গ্যারেথ সাউথগেটের ছেলেদের। তবে ছেড়ে কথা বলছিল না নেদারল্যান্ডসও। প্রতি আক্রমণে উঠে ডামফ্রিসের একটি হেড বারে লাগে। দু’মিনিট পরেই বক্সের বাইরে থেকে ফোডেনের শট পোস্টে লাগে। মঙ্গলবার রাতে অনেকটা একই কায়দায় গোল করেছিলেন লেমিনে ইয়ামাল।

দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই নেমেছিল গোল করার লক্ষ্যে। ফলে দলেও পরিবর্তন হয়। নেদারল্যান্ডস ডনিয়েল মালেনকে তুলে নামায় উওট উইঘর্স্টকে। ইংল্যান্ড কিয়েরান ট্রিপিয়ারের জায়গায় নামিয়ে দেয় লুক শ-কে। তবু খেলা ভাল হচ্ছিল না। দুই দলই বল ধরে রাখার খেলায় নেমেছিল। কিন্তু কেউই ফিনিশ করতে পারছিল না। যে কারণে একটা সময়ের পর খেলা উত্তেজনাহীন হয়ে পড়ে।

সেই সময়েই দু’টি পরিবর্তন করেন সাউথগেট। অনেকেই বলছিলেন ইংল্যান্ড কোচ বড্ড বেশি সাহসী সিদ্ধান্ত নিলেন। কেউ কেউ সমালোচনাও শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু সাউথগেট প্রমাণ করলেন, কৌশলে তিনিই সেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.