ডার্বির চব্বিশ ঘণ্টা আগে ব্যতিক্রমী দৃশ্য ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলনে। শুক্রবার সন্ধেয় নিউ টাউনে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সেন্টার অব এক্সিলেন্সের বাইরে মাত্র পাঁচ-ছয় জন লাল-হলুদ সমর্থক দাঁড়িয়ে! শহরের এক প্রান্তে অনুশীলন ছিল বলেই কি আসেননি তাঁরা? নাকি টানা ন’টি ডার্বিতে হারের আশঙ্কা থেকেই উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন?
ইস্টবেঙ্গলের নতুন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের মনেও যেন ঝড় বইছে। সন্ধে সাড়ে ছ’টা থেকে অনুশীলন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কুয়াদ্রাত আগে পৌঁছলেও ডুরান্ড কমিটির পাঠানো বাস টিম হোটেলে দেরিতে পৌঁছনোয় বিরক্ত হন তিনি। ফুটবলারদের কেউ এলেন নিজের গাড়িতে। কেউ ক্যাব ভাড়া করে। লাল-হলুদের চার ভরসা হাভিয়ের সিভেরিয়ো, সউল ক্রেসপো, বোরখা এরেরা ও জর্ডান এলসে এলেন টোটো চড়ে!
ফুটবলারদের নিয়ে ঘণ্টাখানেক ক্লাসের পরে স্পেনীয় কোচ মাঠে দু’টি বিষয়ের উপরে সবচেয়ে বেশি জোর দিলেন। ফুটবলারদের নির্দেশ দিলেন মোহনবাগানের কেউ বল ধরলেই তা কেড়ে নিতে অন্তত দু’জনকে ঝাঁপাতে হবে। দ্বিতীয়ত সেট-পিস অর্থাৎ কর্নার, ফ্রি-কিক থেকে গোল করার মহড়া। সিভেরিয়ো ও ক্রেসপোর উপরেই দায়িত্ব থাকবে সেট-পিস থেকে গোল করার। মহেশ সিংহকে ব্যবহার করতে চান মোহনবাগান রক্ষণকে ব্যস্ত রাখার কাজে। বোঝা গেল, ডার্বিতে কুয়াদ্রাতের কৌশল হতে চলেছে বিপক্ষের ছন্দ নষ্ট করে দেওয়া। দিমিত্রি পেত্রাতোস, হুগো বুমোসদের গোল করা আটকাতে শুরু থেকে রক্ষণ মজবুত রাখতে চান।
কিন্তু মোহনবাগানের আক্রমণ রোখার শক্তি কি রয়েছে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের? প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ২-০ এগিয়ে থেকেও জয় হাতছাড়া। রক্ষণের ভুলে ২-২ হয়েছিল ফল। সাত বছর পরে লাল-হলুদে ফেরা হরমনজ্যোৎ সিংহ খাবরার ব্যাকপাস আতঙ্কে রাখছে সমর্থকদের। তবুও অভিজ্ঞ খাবরার উপরেই আস্থা রাখছেন কুয়াদ্রাত। ভরসা রয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় ‘এ’ লিগে দিমিত্রি ও কামিংসের বিরুদ্ধে খেলা ডিফেন্ডার জর্ডানের উপরেও।
যুবভারতীতে শনিবার ৬৩ হাজার ৫০০ জন দর্শক মরসুমের প্রথম ডার্বি দেখবেন। নিরাপত্তা ও যান নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রায় ২ হাজার ৬০০ জন পুলিশ কর্মী থাকবেন। এঁদের মধ্যে প্রায় ১৮ জন ডিসি এবং অতিরিক্ত ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিকেরা মাঠে উপস্থিত থাকবেন।