ভারতীয় ফুটবল দলকে দু’দফায় কোচিং করিয়েছেন। জাতীয় দলে এখন যাঁরা খেলেন, তাঁদের বেশিরভাগই তাঁর হাতের তালুর মতো চেনা। এখন তিনি ইস্টবেঙ্গলের কোচ। সমর্থকরা স্বপ্ন দেখছেন তাঁকে নিয়ে। সাম্প্রতিক কালে লাল-হলুদের যে ছন্দ, তা কি বদলে দিতে পারবেন স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন? তাঁর প্রথম পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ডার্বি থেকেই।
পরিসংখ্যান বলছে, আইএসএলে এখনও পর্যন্ত চারটি ডার্বি হয়েছে। সবক’টিই গোয়ায়। কলকাতার মাঠে খেলা হবে এই প্রথম। আগের চারটি ডার্বিতেই ইস্টবেঙ্গল হেরেছে। সব মিলিয়ে টানা ছ’টি ডার্বিতে হেরে শনিবার খেলতে নামছে লাল-হলুদ। তবু মাঠ ভর্তি করে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা আসবেন শুধু প্রিয় দলের জয় দেখার আশায়। আর এই আশায় তাঁদের সবচেয়ে বড় ভরসা নিঃসন্দেহে ব্রিটিশ কোচ। গত দু’বারের মতো এ বারও দেরিতে দল গড়া শুরু করেছে ইস্টবেঙ্গল। তা সত্ত্বেও যে একটা ভদ্রস্থ গোছের দল দাঁড় করানো গিয়েছে, তার পিছনে রয়েছে স্টিভনের মস্তিষ্ক।
প্রথমে শোনা গিয়েছিল নতুন বিদেশি নিয়ে আসা হবে। কিন্তু স্টিভন দায়িত্ব নিয়েই বেশি ঝুঁকি নিতে চাননি। বরং জোর দিয়েছেন দেশে খেলে যাওয়া পরীক্ষিত বিদেশিদের উপরেই। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দল থেকে কিছু ভারতীয় ফুটবলার ভাঙিয়ে এনেছেন। তা যে ফল দিচ্ছে না, এমনটা বলা যাবে না। আইএসএলের প্রথম দু’টি ম্যাচে হারের পর তৃতীয় ম্যাচে জয় পেয়ে এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলতে নামছে ইস্টবেঙ্গল।
তবে আসল পরীক্ষা এই ম্যাচেই। গোটা প্রতিযোগিতায় কী হল না হল, তা নিয়ে সমর্থকদের অতটাও মাথাব্যথা নেই। কিন্তু যেনতেনপ্রকারেণ এই ম্যাচটা জিততেই হবে। গত ছ’বার মাথা নীচু করে, কোচ-ফুটবলারদের শাপশাপান্ত করে ফিরেছেন তাঁরা। এ বার কি ছবিটা বদলাবে? সময়ই বলবে।
এটিকে মোহনবাগান অনেক চাপমুক্ত। একে তো তারা কেরল ব্লাস্টার্সকে পাঁচ গোলে হারিয়ে খেলতে নামছে। তার উপর দীর্ঘ দিন ধরেই একটা দল ধরে রেখেছে তারা। রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামসকে হারানোর পর সাময়িক একটা দুশ্চিন্তা ছিলই। সেটা কেটে গিয়েছে আগের ম্যাচেই। দিমিত্রি পেত্রাতোস হ্যাটট্রিক করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার স্ট্রাইকার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন নতুন করে। ডার্বিতেও তিনি গোল করার হুঙ্কার দিয়ে রেখেছেন।
ম্যাচে মূলত এটিকে মোহনবাগানের আক্রমণের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণের লড়াই দেখা যেতে চলেছে। মোহনবাগানের রক্ষণকে সাম্প্রতিক কালে দুর্বল লেগেছে। এখনও খুব একটা ভরসা দেওয়ার মতো নয়। কিন্তু একটানা আক্রমণ করেই রক্ষণের দুর্বলতা ঢেকে দিতে চাইছে তারা। অন্য দিকে, স্টিভন আবার রক্ষণ শক্তিশালী করে আক্রমণে ওঠায় বিশ্বাসী। সমস্যা হল, রক্ষণ যে সব সময় তাঁকে ভরসা দিতে পারছে এমনটা নয়। তাই শনিবারের খেলায় তুল্যমূল্য লড়াই দেখা যেতেই পারে।