রাচিন রবীন্দ্র যত ক্ষণ ক্রিজে ছিলেন তত ক্ষণ মনে হচ্ছিল, ৩৮৯ রান তাড়া করে ফেলবে নিউ জ়িল্যান্ড। বিশ্বকাপের ইতিহাসে রান তাড়া করে সব থেকে বড় জয়ের লক্ষ্যে এগোচ্ছিল তারা। কিন্তু শতরানের পরে রাচিন আউট হওয়ার পরে বাকিরা দলকে জেতাতে পারলেন না। টান টান লড়াই হল। শেষ বল পর্যন্ত জিততে পারত দু’দলই। জিমি নিশাম অনেক চেষ্টা করেও জেতাতে পারলেন না। ৫ রানে ম্যাচ জিতে প্রথম চারে নিজেদের জায়গা আরও পাকা করল অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল যত এগিয়ে আসছে তত দেখা যাচ্ছে পুরনো অস্ট্রেলিয়াকে। ঠিক সময়ে ফর্ম ফিরে পেয়েছেন পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নেরা।
ধর্মশালায় টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন নিউ জ়িল্যান্ডের অধিনায়ক টম লাথাম। কিন্তু তাঁর সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণিত করেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড। চলতি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই বিধ্বংসী ইনিংস খেললেন হেড। দু’জনে মিলে মাত্র ১৯.১ ওভারে ১৭৫ রান করেন। ওয়ার্নার ৮১ রান করে আউট হন। তিনি শতরান ফস্কালেও হেড তিন অঙ্কে পৌঁছন। ৬৭ বলে ১০৯ রান করে আউট হন তিনি।
দুই ওপেনার আউট হওয়ার পরে মিডল অর্ডারে পর পর কয়েকটি উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু রান তোলার গতি বিশেষ কমেনি। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসকে আবার গতি দেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। আগের ম্যাচেই বিশ্বকাপের দ্রুততম শতরান করেছিলেন। এই ম্যাচে ২৪ বলে ৪১ রান করেন। জশ ইংলিশের ৩৮ ও অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের ১৪ বলে ৩৭ রানে ৩৮৮ রান করে অস্ট্রেলিয়া।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে নিউ জ়িল্যান্ডের দুই ওপেনার শুরুটা ভাল করলেও বড় রান করতে পারেননি। ডেভন কনওয়ে ২৮ ও উইল ইয়ং ৩২ রান করেন। কিউয়িদের ইনিংসকে গতি দেন রাচিন। তিন নম্বরে নেমে শুরু থেকেই বড় শট খেলা শুরু করেন তিনি। তাঁকে সঙ্গ দেন আগের ম্যাচের শতরানকারী ড্যারিল মিচেল। দু’জনে মিলে ভাল গতিতে রান তুলছিলেন। ৫৪ রান করে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন মিচেল।
অন্য দিকে উইকেট পড়লেও এক দিকে খেলছিলেন রাচিন। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের বিরুদ্ধে সহজেই বড় শট খেলছিলেন তিনি। এ বারের বিশ্বকাপে নিউ জ়িল্যান্ডের হয়ে সব থেকে ধারাবাহিক খেলেছেন তিনি। সেটাই আরও এক বার করলেন। শতরান করেন রাচিন। কামিন্স জানত, রাচিনকে আউট না করতে পারলে ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার হাত থেকে হয়তো ছিনিয়ে নিয়ে যাবেন তিনি। তাই বল তুলে নেন নিজের হাতে। তাঁর বলে ১১৬ রানের মাথায় আউট হন রাচিন।
পরের দিকে জিমি নিশাম, মিচেল স্যান্টনার, ম্যাচ হেনরিরা চেষ্টা করেন। লক্ষ্য কঠিন হলেও হাল ছাড়েনি নিউ জ়িল্যান্ড। কিন্তু উইকেট পড়ছিল। তার ফলে লড়াই কঠিন হয়ে পড়ছিল। শেষ ১৮ বলে দরকার ছিল ৪৩ রান। হাতে ছিল ২ উইকেট। তখনও ক্রিজে ছিলেন নিশাম। তিনি বড় শট খেলছিলেন। শেষ ওভারে জিততে ১৭ রান করতে হত নিউ জ়িল্যান্ডকে। বল করছিলেন মিচেল স্টার্ক। শেষ পর্যন্ত জেতাতে পারেননি নিশাম। ৫ রানে হারে নিউ জ়িল্যান্ড।