বুম বুম বুহরাহ, দিল্লিকে হেলায় হারিয়ে ফের আইপিএল ফাইনালে রোহিতের মুম্বই

পুল শটে বাউন্ডারির বাইরে বল পাঠালেন অক্ষর প্যাটেল। স্কোরবোর্ডে তখন দেখাচ্ছে, জিততে হলে ৩২ বলে দিল্লিকে করতে হবে আরও ৯১ রান। লক্ষ্য কার্যত অসম্ভব। তা সত্ত্বেও লাফিয়ে উঠে প্রিয় দলের জন্য গলা ফাটালেন দিল্লি সমর্থকরা। স্টয়নিসের ইনিংস দেখে হাততালি দিল বিপক্ষও। আর ঠিক এখানেই জিতে যায় ক্রিকেট। মন কাড়ে আইপিএলও।

হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়। কখনও পাল্লা ভারী মুম্বইয়ের তো কখনও শ্রেয়সের দিল্লির। এককথায় জমজমাট হয়ে ওঠে লক্ষ্মীবারের দুবাই। কিন্তু দিনের শেষে খাতায়-কলমে জিতে যায় একটি দল। এদিন সেই কৃতিত্ব মুম্বইয়ের। সৌজন্য অবশ্য কোনও একজনের নয়। ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই ব্যালেন্সড পারফরম্যান্স মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ষষ্ঠবার পৌঁছে দিল ফাইনালে।

শুরুটা দুর্দান্ত করেছিল দিল্লি। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের স্পিনে রীতিমতো ধাক্কা খায় মুম্বইয়ের ব্যাটিং-অর্ডার। শূন্য রানেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন ক্যাপ্টেন রোহিত। ব্যর্থ পোলার্ডও। তবে ডি’কক ও সূর্যকুমার যাদব মিলে দলকে অনেকটা এগিয়ে দেন। আর ঈশান কিষাণ ও হার্দিক পাণ্ডিয়া (৩৭*) জুটি এসে বদলে দেন পুরো ছবিটাই। শেষ তিন ওভারে ৫৪ রান তুলে দিল্লিকে বিরাট টার্গেটের সামনে দাঁড় করিয়ে দেন তাঁরা। অশ্বিন তিনটি উইকেট ঝুলিতে ভরলেও মুম্বই বুঝিয়ে দেয়, দলের মিডল অর্ডারও ঠিক কতখানি শক্তিশালী।

DC
ম্যাচ চলাকালীন দিল্লির ডাগআউট

এই নিয়ে আইপিএলের ইতিহাসে ১৩ বার শূন্য রানে আউট হন রোহিত। মুম্বইয়ের কাছে এই ম্যাচ ‘আনলাকি ১৩’ প্রমাণিত হবে না তো? শুরুতে এ প্রশ্ন উঠলেও দলগত প্রচেষ্টাতেই রঙিন হল মুম্বইয়ের রাত। ব্যাট হাতে অঘটন তো দূর, বরং লজ্জার রেকর্ডই গড়ল টুর্নামেন্টে দুরন্ত ফর্মে থাকা দিল্লি। শূন্য রানেই খোয়ালো তিনটি উইকেট। সৌজন্যে বিধ্বংসী বোল্ট ও বুমরাহ। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা কিন্তু ম্যাচ শুরুর আগেই এই দুই অস্ত্রের জন্যই মুম্বইকে এগিয়ে রেখেছিলেন। এঁরা কখন কীভাবে আক্রমণ করেন, বিপক্ষের ভাবনার ঊর্ধ্বে। আর ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে দেশের এক নম্বর পেসারের মতোই খেললেন বুমরাহ। ম্যাচ চলাকালীনই হরভজন সিং তাই তাঁর প্রশংসা করে লেখেন, “জাস্সি (জশপ্রীত) যেয়সা কোয়ি নহি (জস্সির মতো আর কেউ নেই)।”

৪ ওভারে ১৪ রান দিনে ৪টি উইকেট তুলে নেন তিনি। ৯ রান দিয়ে বোল্টের ঝুলিতে আসে ২টি উইকেট। আর এতেই স্পষ্ট দিল্লির ব্যাটিং-লাইন আপকে কীভাবে নাস্তানাবুদ করেছেন এঁরা। যদিও তার মধ্যেও ৬৫ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন স্টয়নিস। ৪২ রান করে নজর কাড়েন অক্ষর প্যাটেল। কিন্তু আপাতত সেসব কাজে এল না। কারণ ফাইনালে যাওয়ার জন্য ফের একটি অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে দিল্লিকে। এবার তারই প্রস্তুতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.