লিয়োনেল মেসি ক্লাব ছাড়ার পর থেকেই দুঃসময় কাটছে না বার্সেলোনার। একে তো ক্লাবের ক্যাবিনেটে কোনও ট্রফি ঢুকছে না। অন্য দিকে, বিরাট প্রত্যাশা নিয়ে যে সমস্ত ফুটবলারকে আগে সই করানো হয়েছিল তাঁরা কেউই ভরসা দিতে পারেননি। এ বার রবার্ট লেয়নডস্কি-সহ একাধিক ক্রিকেটারকে নিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে তারা। সেখানেও আবার তৈরি হয়েছে অন্য সমস্যা।
বার্সেলোনা গত কয়েক মরসুম ধরেই আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে। ক্লাবের আয় এবং ব্যয়ের সঙ্গে কোনও মিল নেই। উয়েফা বা লা লিগা এমন বিষয়কে একেবারেই প্রশ্রয় দেয় না। বিপুল দামে কোনও ফুটবলারকে সই করাতে হলে আগে ক্লাবের তহবিল দেখাতে হয়। ক্লাবের সুদিন ফেরাতে এ বার একাধিক নামী ফুটবলারকে সই করানোর পরেই প্রশ্ন উঠেছে, কোথা থেকে এত টাকা পাচ্ছে বার্সেলোনা?
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের খবর, ভাল ফুটবলারদের সই করাতে ক্লাবের সম্পদ বেচে দিতে হয়েছে বার্সেলোনাকে। কী রকম? দু’-একটি উদাহরণ দিলেই ব্যাপারটি বোঝা যাবে।
বার্সেলোনার স্টেডিয়ামে এত দিন পরিচিত ছিল ক্যাম্প ন্যু নামে। এ বার সেই স্টেডিয়ামের নামের স্বত্ব কিনেছে বিখ্যাত অনলাইন গানের একটি সংস্থা। স্টেডিয়ামে নিজেদের নাম বসাতে পারবে তারা। সেই স্বত্ব ৪৩৫ মিলিয়ন ইউরোয় (ভারতীয় মুদ্রায় ৩৫৭০ কোটি) বিক্রি করা হয়েছে। এ ছাড়া, বার্সা তাদের ঘরোয়া টেলিভিশন স্বত্ব ২৫ বছরের জন্য বিক্রি করে দিয়েছে আমেরিকার একটি সংস্থাকে। বদলে তারা পেয়েছে ৪০০ মিলিয়ন ইউরো (৩২৮৩ কোটি টাকা)। এ ছাড়া, বার্সেলোনার ডিজিটাল ব্যবসা এবং অডিয়োভিসুয়াল প্রযোজনা যারা সামলায়, সেই ‘বার্সা স্টুডিয়ো’র মোট ৪৯.৫ শতাংশ মালিকানা দু’টি সংস্থাকে বিক্রি করা হয়েছে। সেখান থেকে পাওয়া গিয়েছে ২০০ মিলিয়ন ইউরো (১৬৪২ কোটি টাকা)।
লা লিগায় নতুন কোনও ফুটবলারকে নথিভুক্ত করাতে গেলে আয়-ব্যয়ের সঙ্গতি থাকা জরুরি। বায়ার্ন মিউনিখ থেকে লেয়নডস্কিকে সই করিয়ে এ বার চমক দিয়েছে বার্সেলোনা। একই সঙ্গে সেভিয়া থেকে জুলস কৌন্ডে, চেলসি থেকে আন্দ্রেয়াস ক্রিশ্চেনসেন, এসি মিলান থেকে ফ্র্যাঙ্ক কেসি এবং লিডস ইউনাইটেড থেকে রাফিনহা এসেছেন। ম্যাঞ্চেস্টার সিটির বার্নার্দো সিলভার সঙ্গেও কথা চলছে।
শুধু আয় বাড়ালেই হবে না, দলের বাকি ফুটবলারদের বেতনও কমাতে হবে। নতুন যাঁদের সই করানো হচ্ছে, তাঁদের ভাতা-সহ একাধিক ক্ষেত্রে অর্থ কমাতে হবে। পাশাপাশি ফ্রেঙ্কি দে জং, মার্টিন ব্রাথওয়েট, স্যামুয়েল উমতিতি, মেম্ফিস দেপাই-সহ একাধিক ফুটবলারকে বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। ভাতা কমানোর অনুরোধ করা হয়েছে ক্লাবের পুরনো দুই যোদ্ধা জেরার্ড পিকে এবং সের্জিয়ো বুস্কেৎসকে।
এখন দেখার, আর্থিক দুরবস্থা সামলে মেসির প্রাক্তন ক্লাবের সুদিন ফেরে কি না।