আটের দশকের শুরুর দিকে মহিলাদের টেনিসে অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ছিলেন আন্দ্রেয়া জাগের। গ্র্যান্ড স্ল্যাম না জিতলেও ফরাসি ওপেন এবং উইম্বলডনের ফাইনাল খেলেছেন তিনি। ১৯৮০ সালে পেশাদার টেনিসে পা রাখেন। অবসর নেন ১৯৮৫ সালে। কেন? নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।
এক সাক্ষাৎকারে জাগের মারাত্মক অভিযোগ করেছেন ডব্লুটিএ-র বিরুদ্ধে। আমেরিকার প্রাক্তন টেনিস খেলোয়াড়ের দাবি, তাঁকে কমপক্ষে ৩০ বার যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। ডব্লুটিএ-র এক মহিলা কর্তা বার বার যৌন হেনস্থা করতেন। নিজেকে বাঁচাতে মহিলাদের পেশাদার টেনিস সংস্থার কোনও পার্টিতে যেতেন না। শেষ পর্যন্ত বিরক্তিতে টেনিসই ছেড়ে দেন।
বিশ্বের প্রাক্তন দু’নম্বর মহিলা খেলোয়াড় বলেছেন, ‘‘যিনি আমাকে অন্তত ৩০ বার যৌন হেনস্থা করেছেন তিনি মহিলা। আটের দশকে ডব্লুটিএ-র গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। ওঁর নির্দেশে সংস্থার কর্মীরা আমাকে অজান্তেই মাদক খাইয়ে দিতেন। তার পর গাড়িতে তুলে পৌঁছে দিতেন ওই মহিলার বাড়িতে। তিনি আমাকে জোর করে চুমু খেতেন। নানা রকম আপত্তিকর আচরণ করতেন। তখন আমার বয়স ১৬।’’
১৪ বছর বয়সে পেশাদার টেনিসে পা রাখেন জাগের। ৫৭ বছরের প্রাক্তন টেনিস খেলোয়াড় বলেছেন, ‘‘শুধু ওঁর বাড়িতেই নয়, স্টেডিয়ামের লকার রুমেও একাধিক বার যৌন হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল আমাকে। আমার শরীর নিয়ে নোংরা মন্তব্য করতেন ওই মহিলা। বাধ্য হয়ে আমাকে শৌচালয়ের ভিতর ঢুকে জামা-কাপড় বদলাতে হত। না হলে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় হাত দেওয়ার চেষ্টা করতেন তিনি।’’
পেশাদার টেনিস জীবনের শুরু থেকেই বার বার যৌন হেনস্থার শিকার হয়েই একরকম অবসর নিতে বাধ্য হন। জাগের বলেছেন, ‘‘আমার একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। প্রতি সপ্তাহের প্রতিযোগিতা শুরুর আগে ভয় করত। কয়েক বার প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু আমার ক্ষতি করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হত। কোনও প্রতিযোগিতায় কখনই একা থাকার সাহস পেতাম না। বয়স কম ছিল। তাই ভয় করত।’’
কেবল ওই মহিলা কর্তাই নন, এক ফিজিওথেরাপিস্টও তাঁকে যৌন হেনস্থা করেছিলেন বলে জানিয়েছেন জাগের। বলেছেন, ‘‘ওই থেরাপিস্টের সঙ্গে এক জন খেলোয়াড়ের সম্পর্ক ছিল। আমার কুঁচকিতে চোট লাগলে তাঁর কাছে যাই। তিনি চিকিৎসার বাহানায় আমার গোপনাঙ্গে হাত দিতেন। কয়েক বার এমন হওয়ার পর আর ওঁর কাছে যাইনি। টেনিস দুনিয়া সম্পর্কেই খুব খারাপ অভিজ্ঞতা তৈরি হয়েছিল।’’
১৯৮৫ সালে কাঁধে চোট পাওয়ার পর টেনিস ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন জাগের। মানসিক ভাবে ওই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না তিনি। মাত্র ছ’য় বছরের পেশাদার টেনিসজীবনে ১০টি খেতাব জেতেন তিনি।