একই দিনে তিনটি সুপার ওভার। না, তিনটে ম্যাচ হয়নি। নির্ধারিত সূচি মেনে দু’টি ম্যাচই হয়েছে। কিন্তু কেকেআর–হায়দরাবাদ ম্যাচের পর মুম্বই–পাঞ্জাব ম্যাচও গড়ায় সুপার ওভারে। আর সেই ম্যাচেই একটি নয়, দু’টি সুপার ওভার হল। হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই ঘটেছে। IPL শুধু নয়, টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসেও প্রথমবার।
প্রথমে নির্ধারিত কুড়ি ওভারে দু’দলের রান দাঁড়ায় ১৭৬ রানে। এরপর নিয়মানুযায়ী, সুপার ওভার হয়। কিন্তু নিজের নিজের দলের হয়ে দুরন্ত বোলিং করেন জসপ্রীত বুমরাহ এবং মহম্মদ শামি। ফলে ম্যাচ তারপর গড়ায় দ্বিতীয় সুপার ওভারে। নিয়মানুযায়ী, এবারে আবার আগের সুপার ওভারে ব্যাটিং–বোলিংয়ে অংশ নেওয়া দু’দলের খেলোয়াড়রা আর নামতে পারেননি। শেষ সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করে মুম্বই করে ১২ রান। এর সঙ্গে আরও পাঁচ রান জুড়তেই পারত। কিন্তু শেষ বলে আবার নিশ্চিত ছয় বাঁচিয়ে দেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। জবাবে গেইল–আগরওয়াল জুটি সহজেই সেই রান তুলে দেয়।
এবারের আইপিএলে দুরন্ত ফর্মে রয়েছে রোহিতের মুম্বই। টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে এই ম্যাচে খেলতে নেমেছিল মুম্বই। অন্যদিকে, প্রীতির দলের কপালই যেন এবার খারাপ। তিন–চারটি জেতা ম্যাচ মাঠে ফেলে এসেছেন রাহুলরা। এই পরিস্থিতিতেও লড়াই কিন্তু হাড্ডাহাড্ডি হল। ডি’ককের দুরন্ত ব্যাটিং, পোলার্ড ঝড়, রাহুলের আরও একটি দুরন্ত ইনিংস এবং অবশ্যই জসপ্রীত বুমরাহ–শামির বোলিং–সমস্ত কিছুই দেখা গেল। সর্বোপরি ক্রিকেটপ্রেমিরা প্রথমবার সাক্ষী থাকলেন একই ম্যাচে দু’টি সুপার ওভারের।
এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রোহিত শর্মা। কিন্তু শুরুতেই অর্শদীপের বলে আউট হয়ে যান হিটম্যান। শূন্য রানে সূর্যকুমার যাদবকে ফেরান শামি। এরপর ফের উইকেট পান অর্শদীপ। আউট করেন ইশান কিষানকে। শেষপর্যন্ত ডি’কক এবং ক্রুণাল পাণ্ডিয়া জুটি বেঁধে এভাবে উইকেটের পতন আটকান। দু’জনে মিলে ৫৮ রান যোগ করেন। ক্রুনাল করেন ৩৪ রান। তবে দাদা রান পেলেও ব্যর্থ ভাই হার্দিক (৭)। ডি’কক আউট হন ৫৩ রানে। শেষপর্যন্ত পোলার্ডের মাত্র ১২ বলে ঝোড়ো ৩৪ রান এবং কুলটার নাইলের ১২ বলে ২৪ রানের দৌলতে মুম্বই ১৭৭ রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয় পাঞ্জাবের সামনে। এর মধ্যে পোলার্ড চারটি বড় বড় ছয়ও মারেন। কিংসদের হয়ে দু’টি করে উইকেট পান শামি ও অর্শদীপ।
রান তাড়া করতে নেমে পাঞ্জাবের ৩৩ রানের মাথায় ফিরে যান মায়াঙ্ক। এরপর ইউনিভার্সাল বস ক্রিস গেইলকে নিয়ে দলের হাল ধরেন সেই কেএল রাহুল। গেইল ২৪ রানে ফিরে গেলে রাহুলকে যোগ্য সঙ্গত দেন নিকোলাস পুরান। কিন্তু তিনিও রানের গতি বাড়াতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসেন। এরপর শূন্য রানে ফিরে যান ম্যাক্সওয়েলও। শেষপর্যন্ত রান তাড়া করার যাবতীয় দায়িত্ব যেন নিজের কাঁধেই নিয়ে নেন রাহুল। এর মধ্যে অর্ধশতরানও পূর্ণ করেন দুরন্ত ফর্মে থাকা এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এই নিয়ে অর্ধশতরানের হ্যাটট্রিকও করে ফেললেন তিনি। শেষপর্যন্ত ৭৭ রান করে বুমরাহর একটি দুরন্ত ইয়র্কারে আউট হন তিনি। ৫১ বলের এই ইনিংসে মারেন ৭টি চার এবং ৩টি ছয়। রাহুল আউট হওয়ার পরও অবশ্য ম্যাচে ছিল পাঞ্জাব।
এরপর দুর্দান্ত ব্যাটিং করে দলকে প্রায় জিতিয়েও দিয়েছিলেন দীপক হুডা এবং ক্রিস জর্ডন জুটি। কিন্তু শেষ ওভারে ৯ রান করতে পারেননি তাঁরা। ফলে এই ম্যাচও গড়ায় সুপার ওভারে। আর তারপর আরও একটি সুপার ওভার। যেখানে নায়ক বনে গেলেন সেই ‘ইউনিভার্সাল বস’ ক্রিস গেইল–আগরওয়াল জুটি। গেইল তো বুঝিয়ে দিলেন বুড়ো হাড়ে এখনও তিনি ভেলকি দেখাতে পারেন।