বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনার সংক্রমণ মোকাবিলায় তৎপর ভারত। সেই ইস্যুতে রবিবার দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার সন্ধ্যায় সরকারি সূত্রে এই খবর জানানো হয়েছে।
এদিন সন্ধ্যায় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবিশ কুমার টুইট করে এই খবর জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রবিবার বিকেল ৫’টায় করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন বিকেলে দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে করোনা মোকাবিলা নিয়ে আলোচনা করা হবে এবং একজোট বেঁধে প্রতিটি দেশকে কাজ করার আহ্বান জানানো হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে গত শুক্রবারই সার্কের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি জানিয়ে একটি টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ”সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষার কথা ভেবে সার্কভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সার্কভুক্ত ৮’টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক ডাকা হবে। ক্রমশ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মারণ এই ভাইরাসের মোকাবিলায় সবদেশের সঙ্গে আমরা একজোট হয়ে কাজ করতে বদ্ধপরিকর।”
যদিও, মোদীর এই প্রস্তাবে ইতিমধ্যেই সম্মতি জানিয়েছেন ভারতের দুই প্রতিবেশী দেশ ভুটান এবং শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে, পাকিস্তানও করোনা মোকাবিলায় ভারতের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিতে রাজি হয়েছে। শনিবার পাক-বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি নিয়ে গঠিত আঞ্চলিক সংগঠনের নাম হল সার্ক। বর্তমানে সার্কভুক্ত দেশের সংখ্যা ৮। দেশগুলি হল, ভারত, বাংলাদশ, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান এবং মালদ্বীপ। আর এই প্রতিটি দেশই করোনাভাইরাস রুখতে ভারতের প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের জেরে ভারতে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ পার করেছে। বিশাল জমায়েত এড়াতে একের পর এক রাজ্যে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সব ধরণের স্কুলেই করোনা সতর্কতায় পড়ুয়াদের বিদ্যালয়ে আসতে মানা করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণ যাতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেই উদ্দেশ্যে, দিল্লি, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র সহ একাধিক রাজ্যে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে শপিংমল, সিনেমাহল, স্কুল ও কলেজ।
করোনা সতর্কতা জারি হয়েছে কলকাতাতেও। আগামী সোমবার থেকে রাজ্যের সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। শিক্ষকদের আপাতত বাড়িতে থেকেই কাজ করতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্কুল বন্ধ থাকাকালীন পড়ুয়াদের পঠন-পাঠনে যে সমস্যা হবে স্কুল খুললে শিক্ষকদের সেগুলি বুঝিয়ে দিতে আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
করোনার সংক্রমণ রুখতে তৎপর রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই সতর্কতামূলক একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য সরকার। আগামী সোমবার ১৬ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হবে। ৩০ মার্চের পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি চালু নিয়ে ফের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।