মহাকাশে দুর্ঘটনার কবলে পড়ার হাত থেকে কোনওরকমে বাঁচল ইসরোর কার্টোস্যাট ২এফ। শুক্রবার এই ঘটনা ঘটেছে। ইসরো সূত্রে খবর রাশিয়ার উপগ্রহের খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল ভারতের কার্টোস্যাট ২ এফ।
রাশিয়ার আর্থ অবজারভেশন উপগ্রহ কানোপাস-৫য়ের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটতে চলেছিল ইসরোর উপগ্রহটির। রাশিয়ার সরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস। রসকসমসের TsNIIMash calculations অনুযায়ী, এই দুটি উপগ্রহ ২২৪ মিটারের মধ্যে একে অপরের কাছে চলে এসেছিল। যে কোনও মুহুর্তে মহাকাশে ঘটতে পারত বড়সড় দুর্ঘটনা। এই দুটি উপগ্রহই আর্থ অবজারভার বলে খবর।
তবে দুটি উপগ্রহের মধ্যে দূরত্ব কতটা ছিল, তা নিয়ে দ্বিমত প্রকাশ করেছে ইসরো। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর দাবি দুটি উপগ্রহের মধ্যে ৪২০ মিটারের দূরত্ব ছিল। তবে ইসরো জানিয়েছে দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল কার্টোস্যাট ২এফ ও কানোপাস ৫।
ইসরো প্রধান কে শিবন জানান, দুটো উপগ্রহের মধ্যে প্রায় ৪০০ মিটারের ফারাক ছিল। তবে তাও বেশ বিপদজ্জনক। শিবন বলেন ওই উপগ্রহটিকে চারদিন ধরে নজরদারি করা হচ্ছে। তাই ইসরোর কাছে নথি রয়েছে, যে কানোপাসের থেকে কতটা দূরে ছিল কার্টোস্যাট। তবে দূরত্ব আরও বেশি থাকা উচিত।
ইসরোর দাবি দুটি উপগ্রহের মধ্যে ১৫০ মিটারেরও কম দূরত্ব থাকলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে ততটা বিপদ হয়ত ছিল না। ইসরোর কার্টোস্যাট ২এফের ওজন ৭০০ কেজি। ফলে সংঘর্ষ বাঁধলে বড়সড় বিস্ফোরণ হওয়ার আশঙ্কা ছিল মহাকাশে।
সাধারণত মহাকাশে দুটি উপগ্রহের দূরত্ব হওয়া উচিত এক কিলোমিটার বা তার কিছু বেশি। তবে মহাকাশে ক্রমশ স্যাটেলাইটের সংখ্যা বাড়তে থাকায় এই দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব হচ্ছে না। শিবন বলেন বেশ কিছু দিন স্পেনের একটি স্যাটেলাইটের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটতে চলেছিল।
নভেম্বরের শুরুতেই শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে যাত্রা শুরু করে পিএসএলভি সি৪৯। ভারতের কৃষি, বনাঞ্চল ও আপদকালীন যে কোনও তথ্য মিলবে এই উপগ্রহের হাত ধরে। ভারতের ইসরোর তৈরি স্যাটেলাইট ছাড়াও লিথুয়ানিয়ার ১টি টেকনোলজি ডেমনস্ট্রেটর, লুক্সেমবার্গের ৪টি মারিটাইম অ্যাপ্লিকেশন স্যাটেলাইট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪টি লেমুর মাল্টি মিশন রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছে পিএসএলভি সি-৪৯।
এই উপগ্রহগুলির সঙ্গে থাকছে ভারতের রাডার ইমেজিং স্যাটেলাইট ইওএস-০১। পিএসএলভি সি-৪৯ লঞ্চারটি ৪৪.৫ মিটার লম্বা। ভারতের এই উপগ্রহ দেশের সব ধরণের আবহাওয়ার ছবি পাঠাতে সক্ষম। দিন বা রাত উভয় সময়েই ছবি পাঠাতে পারবে ভারতের রাডার ইমেজিং স্যাটেলাইট ইওএস-০১।