আজ ভারতীয় বায়ুসেনার ৮৮তম বর্ষপূর্তি, একঝলকে দেখে নেওয়া যাক দেশের উল্লেখযোগ্য যুদ্ধবিমানগুলির বিবরণ

আজ ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাছে দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় বায়ুসেনা আজ ৮৮ তম বর্ষে পা দিল। আর এই উপলক্ষে আজ উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের কাছে বায়ুসেনার যে হিন্ডন ঘাঁটি রয়েছে সেখানে একটি বর্ণাঢ্য ফ্লাই পাস্টের আয়োজন করা হয়েছিল। এখানেই আজ ভারতীয় বায়ুসেনা নিজের শক্তি প্রদর্শন করে।

১৯৩২ সালে ভারতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বায়ু সেনা বাহিনী। দেখতে দেখতে অষ্টআশি বছরে পদার্পণ করল ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর এই অন্যতম শক্তিশালী অংশ।

আজকের এই ফ্লাই পাস্টে অংশগ্রহণ করেছিল বায়ু সেনা বাহিনীর বিভিন্ন শক্তিশালী যুদ্ধবিমান গুলি যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, এলসিএ তেজস, জাগুয়ার, মিগ-২৯, মিদগ-২১ বাইসন, ও সুখোই-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমানগুলি।

এছাড়া যে যুদ্ধবিমান গুলি অবসর নিয়েছে এবং আধুনিক যে সামরিক বাহিনী বিমান ও প্রথম সারির যুদ্ধবিমান ভারতীয় সেনাবাহিনীতে রয়েছে সেগুলি আজ কিছুটা অংশ নিয়েছে এদিনের অনুষ্ঠানে। তবে আজকের অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল সদ্য বায়ু সেনা বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া রাফাল যুদ্ধবিমান।

চীন মোকাবিলায় আমেরিকা থেকে চারটি সাবমেরিন…

লাদাখের কাছে ভারত-চীন নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের উত্তেজনা!…

এইদিন বায়ুসেনার প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অভিনন্দন জানিয়েছেন এই বলে যে, “আপনারা কেবল দেশের আকাশকে সুরক্ষিত রাখছেন তাই নয়, বিপর্যয়ের সময় মানবসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আপনাদের সাহস আত্মত্যাগ বীরত্ব ভারতীয়দেরকে উদ্বুদ্ধ করে।”

ভারতের বায়ুসেনায় কী কী চমক রয়েছে এক ঝলক দেখে নেওয়া যাক।

প্রথমেই আসা যাক রাফালের কথায়। ৪.৫ জেনারেশনের ইঞ্জিন বিশিষ্ট এই যুদ্ধবিমান ভারতীয় বায়ুসেনার নতুন সদস্য। এয়ার সুপ্রিমেসি থেকে শুরু করে এরিয়াল রিকনেসঁস, গ্রাউন্ড সাপোর্ট, ইন-ডেপ্থ স্ট্রাইক, জাহাজ-বিধ্বংসী ভূমিকা সবকিছুই পালন করতে পারে রাফাল। এমনকি পরমাণু অস্ত্র বহন করতে পারে। এই বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র ও মিসাইল ভরা রয়েছে যাতে শত্রুপক্ষ আক্রমণ করলে তাকে এক ইঞ্চিও জমি না ছেড়ে দেওয়া হয়।

সুখোই-৩০ এমকেআই “ফ্ল্যাঙ্কার”: দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট এই যুদ্ধবিমানটির বিশেষত্ব হল, মাল্টিরোল এয়ার সুপিরিয়রিটি। এর কম্বাট ব্যাসার্ধ অনেকটাই বেশি এবং যে কোন আবহাওয়ায় এই বিমান মানিয়ে নিতে পারে।

মি-৩৫: এটিতেও দুটি ইঞ্জিন আছে এবং এই হেলিকপ্টার টার্বোশ্যাফট অ্যাসল্ট অ্যান্টি-আর্মর হেলিকপ্টার। একসঙ্গে আটজন কমান্ডো এই কপ্টার ওড়াতে সক্ষম। প্রায় দেড় হাজার কেজি অস্ত্র বহন করতে পারে এই হেলিকপ্টার এবং এতে রয়েছে ১২.৭ এমএম রোটারি গান। স্করপিয়ন ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী মিসাইল পর্যন্ত বহন করতে পারে এই হেলিকপ্টার।

সি-১৭ “গ্লোবমাস্টার”: এটি একটি সামরিক পণ্যবাহী বিমান এবং এর ডানা অনেক বড়। এটিতে চারটে ইঞ্জিন রয়েছে। দিন অথবা রাত যে কোন সময়ে এই বিমানটি কাজে নেমে পড়তে পারে।

সি-১৩০জে “সুপার হারকিউলিস”: এটিও একটি সামরিক পণ্যবাহী বিমান এবং এতেও চারটি ইঞ্জিন রয়েছে। এটিকে স্পেশাল অপারেশন, এয়ার মেনটেনেন্স, হাই অল্টিটিউড চালনার কাজে ব্যবহার করা হয়।

এএইচ-৬৪ই অ্যাপাচে: এটি টুইন টার্বো শ্যাফট অ্যাটাক হেলিকপ্টার। এতে দু’জন পাইলট সামনে-পিছনে করে বসতে পারে। যেকোনো সামরিক অভিযানে এই হেলিকপ্টার থাকলে তাতে জয়লাভ নিশ্চিত।

এলসিএ “তেজস”: তেজস এয়ারক্রাফট কিন্তু সম্পূর্ণ দেশি। এটি এক ইঞ্জিন বিশিষ্ট এবং চতুর্থ প্রজন্মের এই উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন মাল্টিরোল এয়ারক্রাফটটি একটি সুপারসনিক লাইট কম্বাট এয়ারক্রাফট।

মিগ ২১ বাইসন: এটিও সুপারসনিক এয়ার কম্বাট যুদ্ধবিমান। তবে এটিতে ইন্টারসেপ্টর কোয়ালিটি রয়েছে।

এই হলো আমাদের ভারতীয় বায়ুসেনার অল্পকিছু রত্নভাণ্ডারের বিবরণ। এছাড়াও বায়ুসেনাতে আরো অনেক রত্ন রয়েছে এবং যারা ভারতীয় বায়ুসেনা জওয়ান আছেন তারা দিনরাত এক করে আমাদের দেশ মাতৃকার সুরক্ষা নিশ্চিত করে চলেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.