ফরাসি দার্শনিক নস্ত্রাদামুসের (Nostradamus) ভবিষ্যদ্বাণী প্রায় কিংবদন্তি হয়ে গিয়েছে। হিটলারের উত্থান থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ— সবই আগেভাগে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। নতুন বছরে পা দিয়ে আবারও মিলে গেল তাঁর একটি ভবিষ্যদ্বাণী। ২০২১ সালের গোড়াতেই আইফেল টাওয়ারের (Eiffel Tower) আকারের গ্রহাণু (Asteroid) পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসার কথা সেই কবে বলে গিয়েছিলেন তিনি। মিলে গেল তাঁর কথা। সত্যিই পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে এমনই এক গ্রহাণু, যার আকার আইফেল টাওয়ারেরই প্রায় সমান! ৩৪০ মিটার ব্যাসের 2021 CO247 নামের সেই অতিকায় গ্রহাণুটি আইফেল টাওয়ারের ০.৮৩ গুণ।
তবে বুধবার কেবল একটিই নয় বেশ কয়েকটি গ্রহাণু পৃথিবীর কাছ দিয়ে যাবে। তার মধ্যে একটি গ্রহাণু 2021 CO247-এর থেকেও বড়। তার ব্যাস ৪৯৫ মিটার। এছাড়াও আরও তিনটি গ্রহাণু আজ পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে। সেগুলির আকার অবশ্য অনেক ছোট। ‘সেন্ট্রাল ফর নিয়ার-আর্থ অবজেক্ট স্টাডিজ’-এর তরফে একথা জানানো হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এই গ্রহাণুগুলির সঙ্গে পৃথিবীর ধাক্কা লাগার মতো সম্ভাবনা নেই তো? NASA জানিয়েছে, ছোট হোক বা বড় এই সব গ্রহাণুগুলি সবই পৃথিবী থেকে কিছুটা দূর দিয়েই চলে যাবে। ফলে আপাতত বিপদের কোনও সম্ভাবনা নেই।
তাহলে কেন এগুলির প্রতি নজর রাখা হচ্ছে? আসলে পৃথিবীর ৭.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে কোনও গ্রহাণু এলে কিংবা যদি কোনও গ্রহাণু ১৫০ মিটারের চেয়ে বেশি দৈর্ঘ্যের হয়, তাহলে তার দিকে কড়া নজরদারি চালায় নাসা। এর আগে ৩ জানুয়ারিও ২২০ মিটার দীর্ঘ গোল্ডেন ব্রিজের মতোই দৈর্ঘ্যের একটি অতিকায় গ্রহাণু পৃথিবীর পাশ দিয়ে চলে যায়। আমাদের গ্রহের সঙ্গে তার দূরত্ব ছিল ৬.৯ মিলিয়ন কিলোমিটার।
সাধারণত এই ধরনের গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষের সম্ভাবনা কমই থাকে। তবে কখনও কখনও অন্য গ্রহের সঙ্গে মহাকর্ষীয় টানের কারণে তারা আচমকাই অনেকটা কাছে চলে আসে। এই ধরনের আগন্তুক গ্রহাণু অতীতে বহুবার পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছে এবং পৃথিবীর বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রসঙ্গত, প্রাগৈতিহাসিক কালে পৃথিবীর বুকে রাজত্ব করা ডাইনোসরদের অবলুপ্তির পিছনেও এই ধরনের মহাজাগতিক বস্তুর আছড়ে পড়াকে অন্যতম কারণ হিসেবে দাবি করেন বিজ্ঞানীরা।