নাসার রোভার মঙ্গলের মাটি ছুঁয়েছে। ইতিমধ্যেই মঙ্গলগ্রহের ছবি পাঠাতে শুরু করেছে রোভার। মঙ্গলগ্রহে গভীর এক গর্তে নেমেছে রোবট। জানা গিয়েছে, ছয় চাকার এই যান আগামী দু’বছর মঙ্গল গ্রহ থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ করবে। মঙ্গলের বিভিন্ন প্রান্তে প্রাণের সন্ধান চালাবে এই মহাকাশযানটি। অতীতেও মঙ্গলে অণুজীবের অস্তিত্ব ছিল কিনা তার সন্ধান চালাবে নাশার পাঠানো এই রোভার।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, মঙ্গলগ্রহে কয়েকশো কোটি বছর আগে বিশাল একটি হ্রদ ছিল। সম্ভবত সেই হ্রদে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল বলেও ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। এবারের মঙ্গলাভিযানের প্রধান লক্ষ্যই হল লাল গ্রহে প্রাণের সন্ধান খুঁজে বের করা। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই মঙ্গলগ্রহের ছবি পাঠাতে শুকু করেছে রোভার। প্রথমে যে দুটি ছবি পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। ক্যামেরার লেন্সে ধুলোর আস্তরণের মধ্য দিয়ে পারসিভেয়ারেন্সর রোভারের সামনে ও পিছনের দিকটি দেখা যাচ্ছে।

নাসার বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, রোভারটি মঙ্গলগ্রহের উপরে থাকা ব-দ্বীপের মত চেহারার একটি অংশের দুই কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবতরণ করেছে। আগামী দু বছর এই এলাকাটিতেই পারসিভেয়ারেন্স প্রাণের সন্ধান চালাবে। নাসার বিজ্ঞানীদের অনুমান, মঙ্গলগ্রহে পাথরের যে কোনও রকম অণুজীবের অস্তিত্ব সংরক্ষণের ক্ষমতা রয়েছে। ফলে অতীতে যদি মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব থেকেও থাকে, তাহলে এই পাথরের মধ্যে তার ইঙ্গিত মেলার আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।

মঙ্গলগ্রহে কোটি-কোটি বছর আগে যে হ্রদ ছিল বলে অনুমান করা হচ্ছে সেখানে পলির মত সেডিমেন্ট দেখা গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা লালগ্রহের এই অংশটি নিয়ে খুভই উৎসাহিত। এই এলাকাটি রোভাররের মারফত খুঁটিয়ে পরীক্ষা করতে চান বিজ্ঞানীরা। তবে মঙ্গলগ্রহের বর্তমান আবহাওয়া বেঁচে থাকার অনুকূল নয় বলেই জানাচ্ছে বিজ্ঞানীরা। সেখানে আবহাওয়া এতই ঠাণ্ডা যে জল সেখানে তরল অবস্থায় থাকতে পারে না। তাছাড়া মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলের স্তরও খুবই পাতলা।

সেই কারণেই সূর্যের চড়া আলোকরশ্মি এখানে পড়লে মাটির উপরিভাগের সব কিছু ধ্বংস করে দেয়। তবে বিজ্ঞানীদের ধারণা, মঙ্গলগ্রহের এখনকার পরিবেশের তুলনায় কয়েকশো কোটি বছর আগেকার ছবিটা এক ছিল না। সেই সময় মঙ্গলে জল ছিল বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। এমনকী শূর্যের তাপের ফলে সৃষ্ট বিকিরণ মোকাবিলায় বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের ঘন আস্তরণও ছিল বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.