মঙ্গল গ্রহে রোভার প্রেসেনভারেন্সের পিকচার-পারফেক্ট ল্যান্ডিংয়ের ছবি প্রকাশ করল নাসা। শুক্রবার লাল গ্রহের মাটি ছোঁয়ার আগে ছয় চাকার এই যান একটি সেলফি তুলেছিল। সেই ছবিই প্রকাশ করেছে নাসা।
এই রঙিন ছবিটি মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ছবি হয়ে থাকবে। মঙ্গলের মাটিতে যখন রোভার নামছে তখন উপর থেকে ছবিটি তোলা হয়েছে। তুলেছে “স্কাই ক্রেন”-এর ক্যামেরা। নাসার জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরিতে (JPL) একটি অনলাইন নিউজ ব্রিফিংয়ের সময় ছবিটি প্রকাশ করা হয়। রোভার ল্যান্ডিংয়ের ২৪ ঘণ্টা পূর্ণ হওয়ার আগে ছবিটি প্রকাশ্যে এল। ছবিটি নিচের দিকে তাক করে তোলা। ছবিটিতে দেখা গিয়েছে রোভারটি স্কাই ক্রেন থেকে নামানো হচ্ছে। ক্রেনের সাহায্যে রোভার নামানোর সময় ধুলোর যে ঘূর্ণি তৈরি হয়েছে সেগুলিও দেখা গিয়েছে।
কিছুক্ষণ পর মঙ্গলের মাটিতে রোভার নামে এবং নিজের কাজ শেষ করে স্কাই ক্রেন নিরাপদ দূরত্বে চলে যায়। কোনও স্পেসক্র্যাফ্ট মঙ্গলে নামছে এমন ক্লোজ-আপ ছবি এই প্রথম। এই মিশনের ডিসেন্ট অ্য়ান্ড ল্যান্ডিং টিমের ডেপুটি প্রধান আরোন স্টেহুয়া বলেছেন, “আমরা এমন আগে কখনও দেখিনি”। তাঁর সহকর্মীরা ছবিটিকে প্রথমবার দেখে মোহিত হয়ে গিয়েছেন। জেপিএলের চিফ ইঞ্জিনিয়র অ্যাডম স্টেলটজনার বলেছেন, এই ছবিটি অত্যন্ত আইকনিক। ১৯৬৯ সালে এডুইন অলড্রিনের চাঁদে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা অথবা ১৯৮০ সালে ভয়জার ১ শনি গ্রহের যে ছবি তুলেছিল সেগুলোর সঙ্গে এর তুলনা করা যেতে পারে।
নাসার বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, রোভারটি মঙ্গলগ্রহের উপরে থাকা ব-দ্বীপের মত চেহারার একটি অংশের দুই কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবতরণ করেছে। আগামী দু বছর এই এলাকাটিতেই পারসিভেয়ারেন্স প্রাণের সন্ধান চালাবে। নাসার বিজ্ঞানীদের অনুমান, মঙ্গলগ্রহে পাথরের যে কোনও রকম অণুজীবের অস্তিত্ব সংরক্ষণের ক্ষমতা রয়েছে। ফলে অতীতে যদি মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব থেকেও থাকে, তাহলে এই পাথরের মধ্যে তার ইঙ্গিত মেলার আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
মঙ্গলগ্রহে কোটি-কোটি বছর আগে যে হ্রদ ছিল বলে অনুমান করা হচ্ছে সেখানে পলির মত সেডিমেন্ট দেখা গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা লালগ্রহের এই অংশটি নিয়ে খুভই উৎসাহিত। এই এলাকাটি রোভাররের মারফত খুঁটিয়ে পরীক্ষা করতে চান বিজ্ঞানীরা। তবে মঙ্গলগ্রহের বর্তমান আবহাওয়া বেঁচে থাকার অনুকূল নয় বলেই জানাচ্ছে বিজ্ঞানীরা।