বুধবার ৭৩ টি তেজস এলসিএস ফাইটার জেট ও ১০ টি ট্রেনার এয়ারক্রাফট কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। তাতে খরচ হবে ৪৫ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা। ভারতের ইঞ্জিনিয়াররাই তেজস বিমানের নকশা করেছেন। দেশে ওই বিমান তৈরি হয়েছে। সেই বিমানে আছে অত্যন্ত শক্তিশালী রেডার এবং ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার স্যুট। আকাশেই প্লেনগুলির রিফুয়েলিং করা যায়।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং টুইট করে বলেছেন, আগামী দিনে বায়ুসেনার প্রধান ভরসা হয়ে উঠবে তেজস বিমান। তাতে এমন কয়েকটি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা এদেশে কখনও হয়নি। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, তেজস বিমান নির্মাণের পরে বোঝা গেল, প্রতিরক্ষার সরঞ্জাম নির্মাণে স্বনির্ভর হয়ে উঠেছে আমাদের দেশ। এর ফলে নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হবে।
বুধবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে সরকার জানায়, ভারতের বায়ুসেনার বিশেষ প্রয়োজন মেটাবে তেজস বিমান। এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্থির হয়, বায়ু সেনার ডিউটি স্টেশনে যাতে বিমান সারানো যায় এবং সার্ভিসিং করানো যায়, তার উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। এর ফলে প্রয়োজনের সময় আরও বেশি সংখ্যক বিমান পাওয়া যাবে।
এর আগে ডিসেম্বরে জানা যায়, বিয়ন্ড ভিস্যুয়াল রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার ‘অস্ত্র’ মিসাইলের শক্তি আরও বাড়াচ্ছে ভারত। দেশীয় প্রযুক্তিতে ওই মিসাইল তৈরি করেছে ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)। এখন এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ১১০ মিটারের কাছাকাছি। আগামী বছরের মধ্যেই এর পাল্লা বাড়িয়ে ১৬০ কিলোমিটার করা হবে। অর্থাৎ ১৬০ কিলোমিটার দূরত্বে উড়ে গিয়ে শত্রুসেনার এয়ারক্রাফ্টও গুঁড়িয়ে দিতে পারবে এই মিসাইল। ভারতীয় বায়ুসেনার মিগ-২৯ ও লাইট কমব্যাট তেজস এয়ারক্রাফ্টের এমকে১ ভার্সন থেকে ছোড়া যাবে অস্ত্র। নৌসেনার কাজেও লাগবে এই মিসাইল। নৌবাহিনীর মিগ-২৯কে এয়ারক্রাফ্ট থেকে এই মিসাইল ছোড়া যাবে বলে জানিয়েছে ডিআরডিও। এমনকি বায়ুসেনার সুখোই-৩০ এমকেআই থেকেও অস্ত্রের মার্ক-১ ভার্সন ছোড়া যাবে নিপুণ নিশানায়।
লাদাখ সীমান্ত সংঘাতের আবহেই একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্রের শক্তি প্রদর্শন করছে ভারত। ৪০ দিনের মধ্যে অন্তত ১১টি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে ডিআরডিও। কিছুদিন আগেই ৪০০ কিলোমিটার পাল্লার শব্দের চেয়ে দ্রুতগামী ব্রাহ্মস ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লাদাখ সীমান্তে মোতায়েন করা হবে এই ব্রাহ্মস মিসাইল। তার জন্যও পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের প্রয়োজন ছিল। এই ক্ষেপণাস্ত্র তার উৎক্ষেপণ স্থল থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে। তবে এর চেয়েও বেশি ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার ব্রাহ্মসও প্রস্তুত আছে ডিআরডিও-র কাছে।