নয়াদিল্লি: সূর্য পাটে বসেছে। হালকা অন্ধকারের বুকে আচমকাই জ্বলে উঠল চোখ ধাঁধানো আলো। ওডিশার বালাসোরে কাছে চাঁদিপুর টেস্ট রেঞ্জ থেকে উৎক্ষেপণ করা হল পৃথ্বী-২ ব্যালেস্টিক মিসাইল। প্রথম উৎক্ষেপণেই সফল পৃথ্বী-২।
ডিআরডিও-র দ্বারা সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি পৃথ্বী-২ ব্যালেস্টিক মিসাইল শুক্রবার লঞ্চ করা হয়। এই ব্যালেস্টিক মিসাইল পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম। ভূমি থেকে ভূমি এই মিসাইলটি নয় মিটার লম্বা। ৫০০ থেকে ১,০০০ কেজি ওজনের পরমাণু অস্ত্র বহন করতে পারে পৃথ্বী -২। এটি ২৫০-৩৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল ভাবে আঘাত করতে পারে।
আগে থেকেই পৃথ্বী-২ ব্যালেস্টিক মিসাইল স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সের অংশ। এই সিরিজের অত্যাধুনিক ব্যালেস্টিক মিসাইল এটি। পৃথ্বী সিরিজে রয়েছে আরও তিনটি মিসাইল। ডিআরডিও জানিয়েছে পৃথ্বী-১, পৃথ্বী-২ আর পৃথ্বী-৩ মিসাইল তিনটি যথাক্রমে ১৫০ কিমি, ৩৫০ কিমি আর ৬০০ কিমির ক্ষমতাসম্পন্ন।
পৃথ্বী-২ একটি সিঙ্গল স্টেজ লিকুইড-ফুয়েলড মিসাইল। এর ওয়ারহেড বহনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ৫০০ কিলোগ্রাম। ১৯৯৬ সালের ২৭ জানুয়ারি এর প্রথম পরীক্ষা হয়। ২০০৪ সাল পর্যন্ত এতে নানারকম সংশোধন আনা হয়। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি সেনাবাহিনীতেও ব্যবহৃত হয়। ২০১০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এই মিসাইলের পরীক্ষা ব্যর্থ হলেও ২০১০ সালের ২২ ডিসেম্বরের দুটি পরীক্ষা সম্পূর্ণ সফল হয়।
এর আগে দিন কয়েক আগেই সফল ভাবে উৎক্ষেপণ করা হয় সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল ব্রহ্মস । এই মিসাইল ৪০০ কিমি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁত ভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। ডিআরডিও-র আওতায় পিজে-১০ প্রজেক্টের নিয়ন্ত্রণাধীন এই মিসাইল উৎক্ষেপণ করা হয়।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ব্রহ্মস মিসাইল পরীক্ষা করা হয়। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি অতিরিক্ত বুস্টার প্রয়োগ করে এই মিসাইল তৈরি করা হয়েছে। এই মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণের ফলে ডিআরডিও-র হাতে এখন ৫০০ কিমি রেঞ্জের মিসাইল তৈরি রইল।
এছাড়াও অক্টোবরের শুরুতে অত্যাধুনিক শৌর্য মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ করে ভারত। নতুন ভার্সনের পরমাণু অস্ত্র বহলে সক্ষম শৌর্য মিসাইলের সফল পরীক্ষা ভারতীয় সেনার মানসিক শক্তি অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।
সংবাদসংস্থা এএনআইকে দেওয়া তথ্যে উচ্চ পদস্থ সরকারি আধিকারিক জানিয়ে দেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই মিসাইল সেনাকে কৌশলি পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে। বিশ্বের আধুনিকতম মিসাইলগুলির মধ্যে এটি একটি প্রমাণিত হবে। এই মিসাইল এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি ওজনে হালকা ও তুলনায় অনেক বেশি ব্যবহারযোগ্য। ৮০০ কিমি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল ভাবে আঘাত হানে শৌর্য মিসাইল। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এই মিসাইল লক্ষ্যবস্তুর যত কাছে যাবে, হাইপার সনিক গতিতে তা আঘাত করবে।