যুদ্ধবিমানের চেয়ে অনেক উঁচুতে ওড়ে, নজর রাখা ছাড়া আরও বহু গোপন কাজ করে গুপ্তচর বেলুন

আমেরিকার আকাশসীমায় ঢুকে পড়েছিল চিনের ‘নজরদারি’ বেলুন। পেন্টাগন দাবি করেছিল, আমেরিকার ‘স্পর্শকাতর’ সামরিক কেন্দ্রগুলির উপর নজরদারি চালাচ্ছে চিন। শনিবার সেই বেলুটিকে গুলি করে নামায় আমেরিকা। অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে চিনও। কিন্তু কী এই ‘নজরদারি’ বেলুন? কেমন করে কাজ করে সেটি?

ছবি: সংগৃহীত।

০২১৬

সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শত্রু দেশের উপর বেলুনের মাধ্যমে নজর রাখার ব্যবস্থা আজকের নয়। একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে এ ভাবেই বেলুনকে গুপ্তচর করে পাঠায় বিভিন্ন দেশ। শুধু প্রযুক্তিটা বদলে গিয়েছে।

সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শত্রু দেশের উপর বেলুনের মাধ্যমে নজর রাখার ব্যবস্থা আজকের নয়। একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে এ ভাবেই বেলুনকে গুপ্তচর করে পাঠায় বিভিন্ন দেশ। শুধু প্রযুক্তিটা বদলে গিয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত।

০৩১৬

আমেরিকার গৃহযুদ্ধে প্রথম বার এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৮৬২ সালের এপ্রিলে ইউনিয়ন পক্ষের জেনারেল ফিৎজ জন পোর্টার বেলুনে চড়ে শত্রুপক্ষের উপর নজরদারি চালাতে বার হন। শত্রুরা বেলুন লক্ষ্য করে গুলি চালায়। বেলুন নিয়ে কোনও মতে ইউনিয়নের দিকে চলে আসেন জেনারেল।

আমেরিকার গৃহযুদ্ধে প্রথম বার এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৮৬২ সালের এপ্রিলে ইউনিয়ন পক্ষের জেনারেল ফিৎজ জন পোর্টার বেলুনে চড়ে শত্রুপক্ষের উপর নজরদারি চালাতে বার হন। শত্রুরা বেলুন লক্ষ্য করে গুলি চালায়। বেলুন নিয়ে কোনও মতে ইউনিয়নের দিকে চলে আসেন জেনারেল।

ছবি: সংগৃহীত।

০৪১৬

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে হাইড্রোজেন ভরা বেলুন বড় ভূমিকা নিয়েছিল। সব থেকে বেশি ব্যবহার করেছিল সম্ভবত আমেরিকা। তাদের বেলুন দেখলেই গুলি করত শত্রুপক্ষ।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে হাইড্রোজেন ভরা বেলুন বড় ভূমিকা নিয়েছিল। সব থেকে বেশি ব্যবহার করেছিল সম্ভবত আমেরিকা। তাদের বেলুন দেখলেই গুলি করত শত্রুপক্ষ।

ছবি: সংগৃহীত।

০৫১৬

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকায় প্রায় ন’হাজার বোমা ভরা বেলুন পাঠিয়েছিল জাপান। ১৯৪৪ থেকে ১৯৪৫, মূলত এই এক বছরেই বেলুনগুলো পাঠিয়েছিল তারা। প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে ছ’হাজার মাইল (৯,৬৫৬ কিলোমিটার) পথ অতিক্রম করেছিল বেলুনগুলি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকায় প্রায় ন’হাজার বোমা ভরা বেলুন পাঠিয়েছিল জাপান। ১৯৪৪ থেকে ১৯৪৫, মূলত এই এক বছরেই বেলুনগুলো পাঠিয়েছিল তারা। প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে ছ’হাজার মাইল (৯,৬৫৬ কিলোমিটার) পথ অতিক্রম করেছিল বেলুনগুলি।

ছবি: সংগৃহীত।

০৬১৬

আমেরিকার বায়ুসেনার দাবি, মিশিগান, টেক্সাস, ইওমিংয়ে ২৮৫টি বেলুনের হদিস পেয়েছিল তারা। ১৯৪৫ সালের মে মাসে ওরেগনে এক জনের মৃত্যুও হয়েছিল বিস্ফোরক ভরা বেলুনের কারণে। ইউরোপে হামলার জন্য আমেরিকাও ব্যবহার করেছিল এই বেলুন।

আমেরিকার বায়ুসেনার দাবি, মিশিগান, টেক্সাস, ইওমিংয়ে ২৮৫টি বেলুনের হদিস পেয়েছিল তারা। ১৯৪৫ সালের মে মাসে ওরেগনে এক জনের মৃত্যুও হয়েছিল বিস্ফোরক ভরা বেলুনের কারণে। ইউরোপে হামলার জন্য আমেরিকাও ব্যবহার করেছিল এই বেলুন।

ছবি: সংগৃহীত।

০৭১৬

একবিংশ শতাব্দীতে আরও আধুনিক ভাবে তৈরি করা হয়েছে এই নজরদারি বেলুন। কেমন ভাবে তৈরি করা হয় এই বেলুন?

একবিংশ শতাব্দীতে আরও আধুনিক ভাবে তৈরি করা হয়েছে এই নজরদারি বেলুন। কেমন ভাবে তৈরি করা হয় এই বেলুন?

ছবি: সংগৃহীত।

০৮১৬

বেলুনে ভরা থাকে হিলিয়াম গ্যাস। থাকে সৌর প্যানেল। এই সৌর প্যানেলই শক্তি জোগায় বেলুনকে।

বেলুনে ভরা থাকে হিলিয়াম গ্যাস। থাকে সৌর প্যানেল। এই সৌর প্যানেলই শক্তি জোগায় বেলুনকে।

ছবি: সংগৃহীত।

০৯১৬

বেলুনে থাকে নজরদারি চালানোর ক্যামেরা, রেডার, সেন্সর। থাকে যোগাযোগ করার যন্ত্রও। নজরদারি বেলুনটিকে ছোটখাটো বিমান বললেও ভুল হবে না।

বেলুনে থাকে নজরদারি চালানোর ক্যামেরা, রেডার, সেন্সর। থাকে যোগাযোগ করার যন্ত্রও। নজরদারি বেলুনটিকে ছোটখাটো বিমান বললেও ভুল হবে না।

ছবি: সংগৃহীত।

১০১৬

বিমানের থেকেও বেশি উচু দিয়ে উড়তে পারে এই নজরদারি বেলুন। এমনিতে ৮০ হাজার ফুট উঁচু দিয়ে উড়ে যায় এই বেলুন। সর্বোচ্চ ১ লক্ষ ২০ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়তে পারে।

বিমানের থেকেও বেশি উচু দিয়ে উড়তে পারে এই নজরদারি বেলুন। এমনিতে ৮০ হাজার ফুট উঁচু দিয়ে উড়ে যায় এই বেলুন। সর্বোচ্চ ১ লক্ষ ২০ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়তে পারে।

ছবি: সংগৃহীত।

১১১৬

যুদ্ধবিমান ওড়ে ৬৫ হাজার ফুট দিয়ে। আর বাণিজ্যিক বিমান ওড়ে ৪০ হাজার ফুট দিয়ে। অর্থাৎ নজরদারি বেলুন ওড়ে বিমানের চেয়েও অনেক উপর দিয়ে।

যুদ্ধবিমান ওড়ে ৬৫ হাজার ফুট দিয়ে। আর বাণিজ্যিক বিমান ওড়ে ৪০ হাজার ফুট দিয়ে। অর্থাৎ নজরদারি বেলুন ওড়ে বিমানের চেয়েও অনেক উপর দিয়ে।

ছবি: সংগৃহীত।

১২১৬

হিলিয়াম ভরা বেলুন নজরদারির জন্য প্রথম বার ব্যবহার করা হয়েছিল ২০০৪ সালে। ইরাকের গৃহযুদ্ধে এই বেলুন দিয়েই নজরদারি চালাত আমেরিকা। আমেরিকার দক্ষিণে সীমান্তের উপর নজরদারি চালানোর জন্য এই বেলুনই ব্যবহার করা হত।

হিলিয়াম ভরা বেলুন নজরদারির জন্য প্রথম বার ব্যবহার করা হয়েছিল ২০০৪ সালে। ইরাকের গৃহযুদ্ধে এই বেলুন দিয়েই নজরদারি চালাত আমেরিকা। আমেরিকার দক্ষিণে সীমান্তের উপর নজরদারি চালানোর জন্য এই বেলুনই ব্যবহার করা হত।

ছবি: সংগৃহীত।

১৩১৬

আফগানিস্তান যুদ্ধে এই হিলিয়াম বেলুন দিয়েই নজরদারি চালাত আমেরিকা। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বহু আফগান নাগরিক। অভিযোগ করেছিলেন, এতে তাদের গোপনীয়তা খর্ব হয়।

আফগানিস্তান যুদ্ধে এই হিলিয়াম বেলুন দিয়েই নজরদারি চালাত আমেরিকা। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বহু আফগান নাগরিক। অভিযোগ করেছিলেন, এতে তাদের গোপনীয়তা খর্ব হয়।

ছবি: সংগৃহীত।

১৪১৬

এ বার সেই আমেরিকার আকাশেই দেখা মিলল চিনা বেলুনের। পেন্টাগন দাবি করে, বেলুনের মাধ্যমে গুপ্তচরবৃত্তি চালাচ্ছে বেজিং। আমেরিকার সামরিক কার্যকলাপের উপর বেলুনের মাধ্যমে নজর রাখা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, বেলুনটি নিয়ে ‘উপযুক্ত ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে।

এ বার সেই আমেরিকার আকাশেই দেখা মিলল চিনা বেলুনের। পেন্টাগন দাবি করে, বেলুনের মাধ্যমে গুপ্তচরবৃত্তি চালাচ্ছে বেজিং। আমেরিকার সামরিক কার্যকলাপের উপর বেলুনের মাধ্যমে নজর রাখা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, বেলুনটি নিয়ে ‘উপযুক্ত ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে।

ছবি: সংগৃহীত।

১৫১৬

চিন যদিও দাবি করেছিল, আবহাওয়া সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং বৈজ্ঞানিক কারণে বেলুনটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, এই বেলুনটি হাওয়ার গতির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরে আমেরিকায় ঢুকে পড়ে। এই দুর্ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে বেজিং। পাশাপাশি তারা এ-ও জানায়, এই ভুল যাতে দ্বিতীয় বার না হয় সেই চেষ্টা করা হবে।

চিন যদিও দাবি করেছিল, আবহাওয়া সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং বৈজ্ঞানিক কারণে বেলুনটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, এই বেলুনটি হাওয়ার গতির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরে আমেরিকায় ঢুকে পড়ে। এই দুর্ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে বেজিং। পাশাপাশি তারা এ-ও জানায়, এই ভুল যাতে দ্বিতীয় বার না হয় সেই চেষ্টা করা হবে।

ছবি: সংগৃহীত।

১৬১৬

বেলুন ধ্বংসের পর বাইডেন বলেন, ‘‘আমরা সফল ভাবে বেলুনটি গুলি করে নামিয়েছি। আমি আমাদের বায়ুসেনা আধিকারিকদের এর জন্য অভিনন্দন জানাতে চাই।’’ চিন যদিও অসন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়েছে, ‘প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া’ জানানোর রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে।

বেলুন ধ্বংসের পর বাইডেন বলেন, ‘‘আমরা সফল ভাবে বেলুনটি গুলি করে নামিয়েছি। আমি আমাদের বায়ুসেনা আধিকারিকদের এর জন্য অভিনন্দন জানাতে চাই।’’ চিন যদিও অসন্তোষ প্রকাশ করে জানিয়েছে, ‘প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া’ জানানোর রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.