সূর্যালোকে তিন দিন পার, এখনও জাগানো যায়নি বিক্রম, প্রজ্ঞানকে, কত দিন অপেক্ষা করবে ইসরো?

চাঁদে সূর্য উঠেছে তিন দিন পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞানকে জাগিয়ে তোলা যায়নি। এই দুই যন্ত্র থেকে কোনও সাড়া পায়নি ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। তবে এখনই হাল‌ ছেড়ে দিতে রাজি নন বিজ্ঞানীরা। ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ সংবাদমাধ্যম টাইমস্ অফ ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, চাঁদে যত ক্ষণ সূর্যের আলো থাকবে, তত ক্ষণ বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের জেগে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ইসরো এক চন্দ্রদিবস, অর্থাৎ পৃথিবীর হিসাবে আগামী ১৪ দিন অপেক্ষা করবে। সোমনাথের কথায়, ‘‘এখনও পর্যন্ত কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। কিন্তু সাড়া যে পাওয়া যাবেই না, তেমন কথা বলতে পারছি না। আমরা চাঁদের হিসাবে গোটা একটা দিন অপেক্ষা করতে পারি। কারণ, এই সময়ের মধ্যে অনবরত সূর্যের আলো পড়বে চাঁদের মাটিতে। ফলে, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। ১৪তম দিনেও সাড়া মিলতে পারে বিক্রম, প্রজ্ঞান থেকে।’’

চাঁদের মাটিতে প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান চালিয়েছে বিক্রম এবং প্রজ্ঞান। তার পর তাদের ‘স্লিপ মোডে’ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রাতে সূর্যের আলো না থাকায় এই যন্ত্রগুলি নিষ্ক্রিয় ছিল। চাঁদে রাতের তাপমাত্রা অনেক কমে যায়। কখনও কখনও হিমাঙ্কের ২০০ থেকে ২৫০ ডিগ্রি পর্যন্ত নীচে নামতে পারে পারদ। এই তীব্র ঠান্ডা চন্দ্রযানের যন্ত্রপাতি সহ্য করতে পেরেছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে সূর্যের আলো পেয়ে যন্ত্রগুলি গরম হলে আবার তা থেকে সাড়া মেলার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার যাতে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়, তার জন্য বিক্রমের রিসিভার চালু রেখেছিল ইসরো।

বিক্রম এবং প্রজ্ঞানকে জাগিয়ে তুলতে পারলে আবার অনুসন্ধান শুরু করতে পারবে ইসরো। যদিও তাদের প্রয়োজনীয় কাজ শেষ হয়েছে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর মাটিতে ভারতই প্রথম মহাকাশযান পাঠাতে পেরেছে। এই পরিস্থিতিতে চন্দ্রযানের ‘ঘুম’ ভাঙিয়ে তার দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার চেষ্টায় রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে সেই সম্ভাবনা অতি ক্ষীণ। বিক্রম এবং প্রজ্ঞানকে জাগানো না গেলে চাঁদের মাটিতেই তারা চিরকাল থেকে যাবে। আর তাদের পৃথিবীতে ফেরানো সম্ভব নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.