পৃথিবীতে দিনে দিনে ধুলোর পরিমাণ বেড়েই চলেছে। মরুভূমির পরিধিও বাড়ছে। নিঃসন্দেহে বড় বড় বিল্ডিং তৈরি, গাছ কাটা ইত্যাদিই এর জন্য দায়ী। তবে এগুলি ছাড়াও মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে আসে বিপুল পরিমাণে ধুলো। এই ধূলিকণা বিভিন্ন গ্রহ এবং উল্কা থেকে তৈরি হয়ে পৃথিবীতে এসে পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ের একটি গবেষণা বলছে, প্রতি বছর পৃথিবীতে মহাকাশ থেকে উড়ে আসে ৪৭.১৭ লক্ষ কেজি ধুলো ।
ধুলোর বৃষ্টি সব সময়ই হয়। গ্রহাণু এবং উল্কা থেকে এই ধুলো আসে। ‘আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি লেটারস’ নামের জার্নালে এ সম্পর্কে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে ধুলো ছাড়াও পৃথিবীতে প্রতি বছর ১০ টন পাথর এসে পড়ে।
প্রশ্ন উঠতে পারে এত পরিমাণে ধুলো এসে পড়লেও তা আমরা বুঝতে পারি না কেন? এর সহজ উত্তর হল, ধুলো বা পাথর নীচে পড়ার পরে বৃষ্টির জল সেগুলিকে ধুইয়ে দিয়ে পৃথিবীর মাটি বা পাথরের সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। কাদা তৈরি হয়। ফলে আগত পদার্থের সঠিক পরিমাপ করা যায় না, তা কার্যত অসম্ভব একটা ব্যাপার।
বিজ্ঞানীরা অ্যান্টার্কটিকার বরফে বড় বড় গর্ত তৈরি করে প্রায় ২০ কেজি ধুলো বের করেছিলেন। সেগুলিকে পরীক্ষাগারে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করেন বিজ্ঞানীরা। সেগুলি বিশ্লেষণ করে রীতিমতো তাজ্জব হয়ে যান বিজ্ঞানীরা। রীতিমতো হিয়াব কষার পর বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতি বছর পৃথিবীতে প্রায় ৪৭.১৭ লক্ষ কেজি ধুলো পড়ে।
পৃথিবীতে প্রতিবছর মহাকাশ থেকে প্রচুর ধূলিকণা আসে, যা আমরা মানুষ জানি না। কারণ সাধারণত মহাবিশ্ব থেকে আসা সমস্ত পাথর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে জ্বলে নষ্ট হয়ে যায়। এই আগত ধূলোগুলির আকার ৩০ থেকে ৪০০ মাইক্রোমিটার। সেখানে মানুষের চুলের ব্যাস ৭০ মাইক্রোমিটার।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছর প্রায় ১.৩৬ কোটি কিলোগ্রাম ধুলো মহাবিশ্ব থেকে আসে। কিন্তু এরমধ্যে ৪৭.১৭ লক্ষ কেজি ধুলো পৃথিবীতে আসতে পারে। বাকিটা বায়ুমণ্ডলে ধ্বংস হয়ে যায়।
রিপোর্ট বলছে ৪৭.১৭ লক্ষ কেজি ধুলোর মধ্যে ৮০ শতাংশই আসে বৃহস্পতি গ্রহের উল্কা থেকে। বাকি ২০ শতাংশ ধুলো নানান উল্কা থেকে এসে পড়ে। বিজ্ঞানীদের কাছে কিন্তু এর আলাদা গুরুত্ব আছে। মাহাবিশ্বে ধুলোর আকারে ঠিক কোন কোন পদার্থ রয়েছে তা জানতে পারেন বিজ্ঞানীরা।