জন্মাষ্টমী বা কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী হল হিন্দুদের একটি উৎসব। বিষ্ণুর অবতার কৃষ্ণের জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনটি কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টামী , শ্রীকৃষ্ণ জয়ন্তী নামেও পরিচিত।হিন্দু পঞ্জিকা মতে, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয় তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়। দেখা যায় ইংরেজি ক্যালেন্ডারে প্রতিবছর আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে জন্মাষ্টমী দিনটি আসে।
শ্রীকৃষ্ণ হলেন দেবকী এবং বাসুদেবের সন্তান। শ্রীকৃষ্ণের জন্মের সময় চারিদিকে নিপীড়ন অত্যাচার চরম পর্যায়ে গিয়েছিলে। সেই সময়ে সর্বত্র অশুভ শক্তির বিস্তার ঘটেছিল। দেবকী এবং বাসুদেবের অষ্টম সন্তান হলেন কৃষ্ণ। শ্রীকৃষ্ণের মামা কংসের হাত থেকে বাঁচাতে মথুরায় কৃষ্ণের জন্ম হলেও , জন্মের পরেই তার বাবা বাসুদেব শিশু পুত্রকে নিয়ে যমুনা পার হয়ে গোকুলের নিয়ে আসে এবং শিশু কৃষ্ণকে তার পালক পিতা মাতা নন্দ এবং যশোদার কাছে রেখে যান।
কৃষ্ণের জীবনের নাটকীয় ঘটনাসমূহ রাসলীলায় মথুরা-বৃন্দাবন সহ বহু স্থানে উৎসবের দিন উপস্থাপিত হয়। রাসলীলায় কৃষ্ণের ছোট বয়সের কর্মকাণ্ড দেখানো হয় যার মধ্যে অন্যতম দহি হান্ডি। এর মাধ্যমে ছোটবেলায় শিশু কৃষ্ণের দুষ্টুমিকে তুলে ধরা হয়। যেখানে কয়েকজন শিশু কিশোর মিলে উঁচুতে টাঙানো মাখনের হাড়ি ভাঙ্গে। তামিলনাড়ুতে এই প্রথা উড়িয়াদী নামে পরিচিত। আবার কৃষ্ণের জন্মের পর পালক পিতা নন্দের সকলকে উপহার দেওয়ার কাহিনিকে মনে রেখে পরের দিন নন্দ উৎসব পালন হয় বহু স্থানে।
এইদিন মানুষ কৃষ্ণের প্রতি ভালোবাসা ব্যক্ত করতে অভুক্ত থাকে। এদিন ধর্মীয় গান এবং উপবাস পালন করে। শ্রীকৃষ্ণের জন্ম তিথিতে রাতে ছোট ছোট মূর্তিকে স্নান করিয়ে কাপড় দিয়ে মুছে দোলনায় সাজানো হয়ে থাকে। তারপর যারা উপবাস করে তাদের মধ্যে খাদ্য এবং মিষ্টি বিতরণ করে উপবাস ভঙ্গ করা হয়। গৃহস্থ মহিলারা বাড়ির বিভিন্ন দরজার বাইরে শ্রী কৃষ্ণের পদচিহ্ন এঁকে দেন।