মহালয়া – স্নেহা চ্যাটার্জি

মহালয়া

পিতৃপক্ষের অবসানের পর দেবীপক্ষের শুভ সূচনাকেই আমরা মহালয়া বলে থাকি।

        মহাভারতে  উল্লেখ আছে , দাতা কর্ণ  যখন স্বর্গে উপস্থিত হলেন তখন তাঁকে খাদ্য হিসেবে স্বর্ন এবং রত্ন দেওয়া হয় । তিনি অবাক হলেন এবং দেবরাজ ইন্দ্র তাঁকে জানান তিনি সারাজীবন সকলকে স্বর্ণ দান করেছেন কিন্তু তাঁর পিতৃ পুরুষ দের উদ্দেশ্যে কখনো জল ও খাদ্য দান করেননি। এই কথা শুনে কর্ণ খুব লজ্জিত ও অনুতপ্ত হন এবং এই অনুতপ্ত কর্ণ কে দেবরাজ ইন্দ্র মর্ত্যে ১৫ দিনের জন্য পাঠিয়ে পূর্ব পুরুষদের জল ও খাদ্য প্রদান তথা তর্পণ রীতি শুরু করেন এবং এই সময়টা আমরা পিতৃপক্ষ হিসেবে জেনে থাকি। বলাবাহুল্য এই ১৫ দিন আশ্বিনের কৃষ্ণপক্ষ এবং এর শেষ দিন অমাবস্যা।

শোনা যায়,

পিতৃপুরুষেরা এই সময় মর্ত্যে নেমে আসে এবং এই বিশাল সমাবেশ কেই আমরা মহালয়া বলে জেনে থাকি।

এটি কিন্তু শুধু হিন্দুদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং প্রাচীন কাল থেকেই এই প্রথা বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে চলে আসছে।

মহালয়া নিয়ে অনেক কথা আছে তবে এই মহালয়া কেই পিতৃপক্ষ ও মাতৃপক্ষের সংযোগস্থল বলে মনে করা হয়।

এই মাতৃপক্ষ বা দেবীপক্ষের সময়টা হল আশ্বিনের শুক্লপক্ষ যে সময়ে শ্রীরামচন্দ্র সীতাকে উদ্ধার করার জন্য অকালে দূর্গা পূজা ( যেহেতু পূর্বে বসন্ত কালে দূর্গা পূজা হত) করেন এবং তাই এই আশ্বিনের দূর্গা পূজা অকালবোধন নামে পরিচিত।

তাই মাতৃপক্ষ মানে দেবীপক্ষ কেই চিহ্নিত করা হয় এবং মহালয়া মানেই এই দেবীপক্ষের সূচনা , সাথে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের:

“আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জীর;

ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা;

প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা।”

© স্নেহা চ্যাটার্জি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.