সারা পৃথিবীতে যখন ধর্মে ধর্মে দলাদলি ঠিক সেই সময় পশ্চিমবঙ্গের বারাসাতের এক এক বিদ্যালয়ে এক অহিন্দু তথা মুসলিম মেয়ে বাগদেবীর আরাধনা করে সমাজের উগ্রপন্থীদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন যে কেনো সংস্কৃতির দিক দিয়ে ভারতবর্ষ জগৎসেরা। অতুল প্রসাদ সেনের “নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান” এই পঙক্তি টি আজ ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক। ঠিক যে সময়ে মুসলিম উগ্রবাদীদের দ্বারা একের পর এক একাধিক নিরীহ অ-মুসলিম মানুষের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়ে চলেছে সেই সময়ে এই এরূপ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ঠিক যেনো অমাবস্যার রাতে চাঁদ দর্শনের সমতুল্য। তবুও এমন ঘটনা প্রথমবার নয়। ঠিক এক বছর আগেও কলকাতার সল্টলেকে ঠিক অনুরূপ ঘটনা দেখা গিয়েছে।
বারাসাতের বিদ্যালয়ের এই ঘটনায় যেমন সমাজের সিংহভাগ মানুষ বাহবা দিয়েছেন ঠিক তেমনি উগ্র মুসলিম মৌলবাদীরা সোশ্যাল মিডিয়াতে তীব্র ভাষায় নিন্দা করেছেন এই ঘটনার। তারা তাদের ধর্মগ্রন্থ আলকোরান এর নির্দেশ অনুযায়ী অমুসলিমরা যে কাফের এবং নির্দেশ অনুযায়ী অমুসলিমদের তিরস্কার করা উচিত, তা উল্লেখ করেছেন। মূর্তিপূজা ইসলাম ধর্মে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ, কোনো সচেতন মুসলিম ব্যক্তিরই উচিত নয় মূর্তিপূজার সমর্থন করা। কোনো মুসলিম মূর্তিপূজা করলে সে আর মুসলিম থাকে কিনা এই নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন তারা। শুধু তাই নয় অনেক মুসলিম মৌলবাদী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আঘাত দিতে বকরি ইদে হিন্দুদের গো হত্যায় নিমন্ত্রণ ও জানিয়েছেন!
বহু দেশপ্রেমী শহীদদের রক্তের বিনিময়ে প্রাপ্ত এই পূণ্যভূমি। ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হওয়া ভারতবর্ষ আজ গণতান্ত্রিক দেশ! এই গণতান্ত্রিক দেশে বাক স্বাধীনতা কতটা নীচে নামলে প্রশাসনের নজরে পড়বে সেটা আজ বড় প্রশ্ন। ইদানিং হিন্দু ধর্ম, দেবদেবীদের নিয়ে মৌলবাদী – জিহাদীদের নোংরা মন্তব্য বারংবার সামনে আসছে কিন্তু প্রশাসন ভাবলেশহীন। ধর্মচারণে নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের প্রশাসনের এমন কুরুচিকর, নোংরা, হুমকিমূলক মন্তব্যেও উদাসীনতা আপামর জনসাধারণের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
vivekananda