সেকুলার বিজ্ঞজন দের নতুন বুলি হয়েছে, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো কেন? তাহলে অন্যান্য ধর্মের অনুষ্ঠান নয় কেন?
তা কেউ তো করতে বাধা দিচ্ছে না, কিন্তু কি পুজো করবেন? অন্য কোন ধর্মে তো বিদ্যার দেবীই নেই। স্কুলে শিবরাত্রি করবেন? যা কখনো হয়নি। বেশ নতুন নতুন ব্যাপার হবে। কি বলেন?
স্কুলে শিবরাত্রি করা যতটা অযৌক্তিক, নবি দিবস পালন করাটাও ততটাই হাস্যকর।
না না রেগে যাবেন না, বলছি বলছি
হাস্যকর এই কারণেই- পৃথিবীর মানচিত্রে কয়েকটা চাঁদতারা মার্কা দেশ, খামখাই পড়ে আছে। বিশ্বের শিক্ষা সংস্কৃতি, আবিষ্কার, মহাকাশ গবেষণায় যাদের কোন অংশগ্রহণ নেই। যারা লুঠপাট ছাড়া কিছু বোঝে না। তাদের বিদ্যার প্রতি ভক্তি র কিছু উদাহরণ-
মুঘলরা ভারতে এসে লুঠপাট ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় গুলো ধ্বংস করা, গুরুত্বপূর্ণ নথি সম্বলিত লাইব্রেরি পোড়ানো, পন্ডিতদের হত্যা করা ইত্যাদির মাধ্যমে নিজেদের বিদ্যের পরিচয় দিয়েছে। আজও শিক্ষার অধিকার চাইতে গিয়ে মালালা মাথায় বুলেটের তৌফা পায় চাঁদতারার দেশে।
আর শুধু চাঁদতারার দেশই নয়, তথাকথিত “আধুনিক” মিশনারীরা ভারতের সবথেকে বড় যে ক্ষতিটা করেছে তা হলো আমাদের গুরুকুল প্রথা কে নষ্ট করে এবং যুগান্তকারী আবিষ্কার গুলো কে চুরি করে নিয়ে গিয়ে নিজেদের নামে পেটেন্ট করে। তাইতে আজ আমাদের বাচ্চারা ঝাউগাছ কেটে মরা গাছ স্কুলে নিয়ে গিয়ে খ্রীসমাস পালন করা কে প্রগতিশীল মনে করে আর তুলসীর মতো আয়ুর্বেদিক গাছকে পুজো করা ব্যাকডেটেড। এই তো এদের চুরি করা বিদ্যের নমুনা।
ভারতের সমস্ত স্কুলে সরস্বতী পুজো হয় কেন জানেন? কারণ এ ভারত সেই পুণ্যভূমি যেখানে দেবী সরস্বতীর সন্তানেরা যুগে যুগে পৃথিবীকে সমৃদ্ধ করেছে-
ঋষি ভরদ্বাজ- বিমানশাস্ত্র
ঋষি সুশ্রুত- প্লাস্টিক সার্জারি, চোখের রেটিনা অপারেশন সহ প্রচুর সার্জারি পদ্ধতি
ঋষি চরক- চিকিৎসাশাস্ত্র
ঋষি অগস্ত্য- বিদ্যুৎ
ঋষি বৌধায়ন- জ্যামিতি
ঋষি আর্যভট্ট- শূন্য ও গণিত ও জ্যোতির্বিদ্যার জনক
কবি তুলসীদাস- সূর্য থেকে পৃথিবীর দুরত্ব হনুমান চালিশা তে উল্লেখ করেছেন।
ঋষি ভাষ্করাচার্য- মাধ্যাকর্ষণ শক্তি
ঋষি পাণিণি- নির্ভুল ব্যাকরণ
ঋষি ব্রহ্মগুপ্ত- বীজগণিত
ঋষি পিঙ্গালা- বাইনারি সংখ্যা (0 ও 1)
ঋষি কণাদ- অনু ও পরমাণু তত্ব
ঋষি বাৎসায়ন- কামাসূত্র
আরো অনেক অনেক… এবং এরা সকলেই দেবী সরস্বতীর আরাধনাই করতেন। এমনকি এই ভারতে ডঃ এ পি জে আবদুল কালামও মা সরস্বতীর বরপুত্র। কারণ তাঁর পড়ার টেবিলেও মা সরস্বতীর মূর্তি থাকতো। অপরদিকে যে কাশ্মীর একসময় জ্ঞানের পীঠস্থান ছিল সেখানে দেবী সরস্বতীর মন্দির ১৪ শতাব্দী তে প্রথম ভাঙে সিকান্দার বুতশিকান, তারপর বারবার ভাঙা ও গড়া হয়, অবশেষে পাকিস্তান আর্মি ১৯৪৮ সালে বোম মেরে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দেয় পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একমাত্র সরস্বতী দেবীর মন্দির। বিদ্যার দেবীর মন্দির ভাঙার কারিগর এই পাষন্ডদের কাছে কি নতুন আবিষ্কার আশা করি বলুন তো?
তাই স্কুলে সরস্বতী পুজো কেন এই প্রশ্ন না করে নিজেকে প্রশ্ন করুন- আপনি ডঃ এ পি জে আবদুল কালামের পক্ষে? না আতঙ্কবাদীদের পক্ষে?
হে সেকুলার বিজ্ঞজন.. যতই বিরোধ করুন, এই ভারতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পুজো হবেই। কারণ দেবী সরস্বতী শুধু হিন্দুদের দেবী না, বিদ্যার দেবী, এই ভারতের সংষ্কৃতি।
???????? ভারত বিশ্বগুরু ছিলো, আছে, থাকবে ????
✍️ প্রীতম মন্ডল।