প্রত্যেক হিন্দু পরিবারেই প্রায় পুজোর রীতি আছে। ঠাকুর ঘরে হোক কিংবা মন্দিরে। দেবতার পুজোর প্রধান উপকরণ হল ফুল। তবে প্রত্যেক দেবতার জন্য বরাদ্দ থাকা উচিৎ আলাদা আলাদা ফুল। কারণ সব দেবতা সব ফুলে সন্তুষ্ট হন না।
প্রাচীন পুঁথিতে উল্লেখ রয়েছে, আমাদের মতই দেব-দেবীদেরও পছন্দের খাবার, দিন, রঙ ও পছন্দের ফুল রয়েছে। সেই মতো তাদের পুজো করার রেওয়াজও চালু রয়েছে। অনেকেই সে সম্পর্কে জানেন না। সাধারণ জবা, বেল, টগর- এসব ফুলেই পুজো করা হয় দেবতার।
ভগবান বিষ্ণু: গোটা বিশ্বের লালন পালনের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। ভগবান বিষ্ণুর পছন্দের রং হল সাদা। তবে যে কোনও উজ্জ্বল রঙের ফুল এবং তুলসী পাতাতেও সন্তুষ্ট হন তিনি। এগুলি তাঁর খুব পছন্দের। তাই তো ভগবান বিষ্ণুর পুজো দেওয়ার সময় সাদা ফুল এবং তুলসী অবশ্যই দেওয়া উচিৎ।
ভগবান শিব: দেবাদিদেব তিনি। নিজের ছন্দে থাকতেই বেশি পছন্দ করেন। দুর্গম পাহাড়, নয়তো ঘন জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতেই তিনি বেশি পছন্দ করেন। সেই কারণেই সর্বশক্তিমানের পুজো দেওয়ার সময় আকন্দ অথবা বা ওই জাতীয় কোনও জংলি ফুল পরিবেশন করা হয়ে থাকে। ধুতুরা ফুলেও হয় শিবের পুজো। তবে অনেক ধরণের সাদা ফুলও তাঁর পছন্দের।
মা কালি: দুষ্টের দমন করেন তিনি। খড়্গহাতে সামলান অশুভ শক্তিকে। তিনি মুণ্ড মালা শোভিতা। খড়্গ থেকে বইছে রক্ত। তাঁর মুণ্ড মলা থেকে গড়িয়ে পরছে অসুরদের রক্ত বিন্দু। এমন সর্বশক্তিমানের পুজো তো তাই রক্ত রঙা জবার মালা দিয়েই করা হয়ে থাকে। তাছাড়া লাল রং যে মায়ের খুব পছন্দের।
মা লক্ষ্মী: পরিবারে সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসার জন্য মা লক্ষ্মীর পুজো করা হয়। লক্ষীর সবথকে পছন্দের ফুল হল পদ্ম। মা লক্ষ্মীর পুজোয় তাই পদ্ম ফুল পরিবেশন করা আবশ্যক। পদ্ম ফুলের পাশাপাশি লাল রঙও মা লক্ষ্মী খুব পছন্দ করেন। তাই পদ্ম ফুল না পেলে তাঁকে গোলাপ ফুল বা যে কোনও লাল রঙের ফুল দিয়েও পুজো করা যেতে পারে। তবে ভুলেও সাদা ফুল দেওয়া উচিৎ নয়।
মা সরস্বতী: মায়ের পছন্দের রং হল হলুদ। তাই দেবী সরস্বতীর পুজো করার সময় হলুদ বসন পরে, হলুদ ফুল দিয়ে তার আরতি করতে হয়। আসলে হলুদের সঙ্গে মায়ের যোগ রয়েছে।
গণেশ ঠাকুর: মা লক্ষ্মীর মতো গণেশ ঠাকুরও লাল রং খুব ভালবাসেন। তাই তো গণেশ পুজোর সময় লাল গাঁদা অথবা যে কোনও লাল রঙের ফুল নিবেদন করা উচিত।