পরিবর্তনের জন্য মন স্থির করেছে পশ্চিমবঙ্গ : প্রধানমন্ত্রী

পরিবর্তনের জন্য মনস্থির করে ফেলেছে পশ্চিমবঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র সরকার এলে বাংলার মানুষ নিজের সংস্কৃতি নিয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচবে। বিজেপি সোনার বাংলা তৈরি করতে কাজ করবে, যার মধ্যে এখানকার সংস্কৃতি ও ইতিহাস আরও মজবুত হবে। সোমবার হুগলির জনসভা থেকে এই দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হুগলির সাহাগঞ্জের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আপনাদের এই উৎসাহ, এই উদ্দীপনা কলকাতা থেকে দিল্লি পর্যন্ত অনেক বড় বার্তা দিচ্ছে। এবার পরিবর্তনের জন্য মন স্থির করেছে পশ্চিমবঙ্গ। এর আগে আপনাদের আমি গ্যাস কানেকটিভিটি, ইন্ফ্রাস্ট্রাকচারের উপহার দিতে এসেছিলাম, আজ রেল ও মেট্রো কানেকটিভিটিকে মজবুত করার গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু হতে চলেছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আধুনিক হাইওয়ে, আধুনিক রেলওয়ে, আধুনিক বিমানপথ, এই দেশের আধুনিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার, দেশকে আধুনিক করার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে, এ সবই পরিবর্তনের অন্যতম কারণ। আমাদের দেশেও এই কাজ কয়েক দশক আগে হওয়া উচিত ছিল। আর দেরি নয়, এক মুহূর্ত থেমে থাকলে চলবে না আমাদের, সময় নষ্ট করা যাবে না।”
প্রধানমন্ত্রী জানান, “চন্দননগর-সহ সমগ্র অঞ্চল ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই ভূমির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে মহর্ষি অরবিন্দ, মোতিলাল রায়, রাসবিহারী বসু, বিপিন বিহারি গাঙ্গুলি এবং কানাইলাল দত্ত-সহ অনেকের।” এরপর প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যতগুলি সরকার পশ্চিমবঙ্গে ছিল, এই ঐতিহাসিক ক্ষেত্রকে এভাবেই রেখে দিয়েছে। এখানকার ইনফ্রাস্ট্রাকচারকে বেহাল হতে দিয়েছে। বিজেপি সোনার বাংলার জন্য কাজ করবে, সেই বাংলা পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস এবং সংস্কৃতিকে দৃঢ় করবে। আমরা এমন একটি পশ্চিমবঙ্গ গড়ে তুলব যেখানে ধর্ম এবং যোগ্যতা মর্যাদা পাবে। সকলের উন্নয়ন হবে এমন একটি পশ্চিমবঙ্গ গড়ে তুলব আমরা। কাউকে তোষণ করা হবে না। যেখানে তোলাবাজি থাকবে না। রোগজার এবং আত্মনির্ভরতার সঙ্গে যুক্ত হবেন মানুষ।”বাম ও তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “স্বাধীনতার আগে দেশের অন্য রাজ্যের থেকে এগিয়ে ছিল বাংলা। কিন্তু যারা এত দিন বাংলায় রাজত্ব করেছে, তারা বাংলাকে দুর্দশার দিকে ঠেলে দিয়েছে। বাংলার উন্নতির সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মা-মাটি-মানুষের সরকার। কৃষক ও গরিবের পয়সা তাদের অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। যে কারণে তৃণমূলের নেতাদের প্রতিপত্তি বেড়ে চলেছে, আর সাধারণ মানুষ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। বাংলার মানুষের অধিকার এখানকার সরকার ছিনিয়ে নিয়েছে। বাংলার লক্ষ লক্ষ দরিদ্র পরিবার আয়ুষ্মান ভারতের আওতায় ৫ লক্ষ টাকার সুবিধা থেকে আজও বঞ্চিত। বাংলার মানুষ বিশুদ্ধ পানীয় জল পাচ্ছেন না। তৃণমূল সরকারের এ নিয়ে কোনও মাথাব্যথাই নেই। প্রত্যেক ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দিতে কেন্দ্র ১৭০০ কোটির বেশি টাকা দিয়েছে তৃণমূল সরকারকে। কিন্তু এর মধ্যে থেকে মাত্র ৯ কোটি টাকাই খরচ করেছে। বাকি ১১০০ কোটি টাকা নিজেদের পকেটে ভরেছে।”প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “একটা সময় ছিল যখন বাংলার পাটশিল্প গোটা দেশের চাহিদা মেটাত। কিন্তু সেই শিল্পকেও বাঁচানো যায়নি। কত শত মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার পাটশিল্পকে বাঁচাতে নতুন করে উদ্যোগী হয়েছে। হুগলির আলুচাষীদের কী অবস্থা, তা-ও কারও অজানা নয়। বাংলায় বিনিয়োগ করতে মুখিয়ে রয়েছেন অনেকেই। কিন্তু এখানকার সরকার যে পরিবেশ তৈরি করেছে, যে ভাবে সিন্ডিকেটের হাতে বাংলাকে তুলে দিয়েছে, তাতেই অনেকে বিমুখ হয়ে পড়ছেন। বিদেশে যখন প্রবাসী বাঙালিদের সঙ্গে দেখা হয়, সকলেই মাতৃভূমির উন্নতিতে যোগদানে প্রস্তুত। কিন্তু করবেন কী করে। এখানে ঘর ভাড়া নিতে গেলেও কাটমানি দিতে হয়।” আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, “আমার বিশ্বাস, একজোটে বাংলার কৃষক, শ্রমিক এবং যুবকদের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়তে পারব আমরা।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.