পঞ্চায়েত ভোটের ফল প্রকাশের পর উত্তপ্ত হয়ে উঠল সবং। এবার পঞ্চায়েতে বিজেপির এক জয়ী প্রার্থী তার উইনিং সার্টিফিকেট না দেওয়ায় তাকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং ব্লকের ১৩ নম্বর বিষ্ণুপুর অঞ্চলের মকরানি চক এলাকায়। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই প্রার্থীকে সবং গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ,বুধবার রাতে মকরানি চক বুথ এলাকার বিজেপির জয়ী পঞ্চায়েত প্রার্থী ফালগুনী বিজলী বেরাকে প্রথমে এলাকার তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বাড়িতে এসে মারধরের হুমকি দিয়ে যায়। তারপরে রাতে তার স্বামীর অনুপস্থিতিতে ওই বিজেপি প্রার্থীর বাড়িতে এসে তার কাছ থেকে উইনিং সার্টিফিকেট চায়। সেই সার্টিফিকেট না দেওয়ায় বিজেপির ওই মহিলা পঞ্চায়েত প্রার্থীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। বাড়িতে লুটপাট চালানো হয়। এমনকি মেরে মাথা ফুলিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে সবং গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে। তিনি এখন চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় সবং থানার বিশাল পুলিস বাহিনী। এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে সবং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অন্যদিকে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। এনিয়ে অঞ্চলের তৃণমূল নেতা তথা সবং ব্লক সহ-সভাপতি গণেশ প্রামাণিক বলেন, ওই ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই বিজেপির কর্মীরাই আমাদের তৃণমূল কর্মীদের মারধর করছে। আজকেও কয়েকজন তৃণমূল কর্মীকে মারধর করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা। সাজানো ঘটনা।
গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, দীর্ঘ পনের বছর এলাকায় মানুষ ভোট দিতে পারেনি। সবং ৩ নম্বর মণ্ডলের জিএস অজিত মণ্ডল বলেন, এবার ফাল্গুনী বিজলী বেরা পদ্মফুল চিহ্নে দাঁড়িয়ে জয়ী হয়েছেন। সেই রাগে তৃণমূলের কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে আসে সন্ধেয় তোকে দেখে নেব। কোনও একটি কাজে আজ ফাল্গুনীর স্বামী বাড়ির বাইরে ছিলেন। সেটাই কাজে লাগিয়েছে ওরা। বাড়িতে গিয়ে ফাল্গুনীর হাত-পা বেঁধে প্রচুর মারধর করে। ওকে বলা হয়, তোর উইনিং সার্টিফিকেট দে। প্রচুর মারধর করে গহনগাটি লুঠ করে নিয়ে চলে গিয়েছে। চিত্কার শুনে পাশের বাড়ির লোকজন ছুটে যেতেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। তারপর ফাল্গুনীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এমন মারধর করা হয়েছে যে কথা বলার ক্ষমতা নেই। চোখ,মাথা ফুলে গিয়েছে। সব করেছে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। ভোটের আগের দিনও ওরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছে। ভোটে ওরা ছাপ্পা দিয়েছে। তার পরেও বিজেপি ৮ অঞ্চল পেয়েছে। এটা সহ্য করতে না পেরে ওরা এটা করেছে।
বিজেপি প্রার্থী স্বামী বলেন, আমার স্ত্রী বিজেপি থেকে দাঁড়িয়েছিল। জিতেওছিল। তারপরেই কিছু দুষ্কৃতী আমার বাড়িতে হামলা করে। ওর উইনিং সার্টিফিকেট ছিনিয়ে নিয়ে যায়। প্রচুর মারধর করে। বাড়িতে কিছু টাকা, গহনা ছিল তা লুঠ করে নিয়ে গিয়েছে। বাড়িতে ছিলাম না। সেই ,ময়েই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে।