গরু পাচার থেকে নিয়োগ দুর্নীতি একের পর এক কাণ্ডে জেরবার হয়ে যাচ্ছে রাজ্যের শাসক দল। নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই মুর্শিদাবাদের বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করেছে। আর সেই ঘটনার রেশ টেনে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন, মুখ্যমন্ত্রীকেও সাধারণ মানুষ চোর চোর বলে চিৎকার করবে।
আজ সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হবার পর তৃণমূল বিধায়ককে যখন হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সেই সময় সাধারণ মানুষ তাকে চোর চোর বলে চিৎকার করে ওঠে। সেই ঘটনার প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদারকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করলে তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, “আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও এভাবে ঢুকবেন আর সাধারণ মানুষ চোর চোর বলে চিৎকার করবে।”
“রাজ্য সরকারের অপশাসন, একনায়কতন্ত্র, সীমাহীন দুর্নীতি ও রাজনৈতিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে” আজ দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা বিধানসভার অন্তর্গত ব্রজবল্লভপুর বাজারে বিজেপির প্রতিবাদ সভায় যোগ দিয়েছিলেন সুকান্তবাবু।
সিবিআই সূত্রে খবর নিয়োগ দুর্নীতিতে ৭-৮ জন শাসকদলের বিধায়কের নাম জড়িয়েছে। এপ্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমাদের কাছে খবর আছে শাসকদলের এমন কোনো বিধায়ক নেই যে লিস্ট দেয়নি শিক্ষামন্ত্রীকে চাকরির জন্য।” তার কথায় এই দলের সবাই উলঙ্গ।
জীবন কৃষ্ণের গ্রেফতারের ঘটনায় মু্খ্যমন্ত্রী সরব হয়েছেন। তাঁর দলের বিধায়কদের ইচ্ছে করে ফাঁসানো হচ্ছে। এটা বিজেপির গেম প্ল্যান। যদিও এর আগে মু্খ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন, সুপারিশে এক আধটা চাকরি হয়ে থাকতেই পারে সেটা ভুল কিছু নয়। আজ সেই কথা টেনে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন তারা দুর্নীতি করেছেন। সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আপনার কাছে আপনার সংসদীয় ক্ষেত্রেই কারো অ্যাডমিট যদি কেউ দেন সেটাও অন্যায়। কিন্তু কোনও এক বিধায়কের কাছে চার হাজার চাকরি প্রার্থীর অ্যাডমিট থাকতে পারে না।” তার দাবি, চৌতলা সাহেবকে যেভাবে জেলে যেতে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকেও জেলে যেতে হবে। এরপরই মু্খ্যমন্ত্রীর তোলা বিজেপির গেম প্ল্যান মন্তব্যের পাল্টা দিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “অতিরিক্ত গরম পড়েছে, তাই মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর মানসিক স্থিতিতে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। ওনাকে ডাবের জল খেতে বলুন।” তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর একের পর এক বিধায়ক চাকরি চুরি করে পাঁচিল টপকে মোবাইল পুকুরে ছুঁড়ে, খেজুর গাছ তলায় ছুঁড়েও যেভাবে গ্রেফতার হচ্ছে এবং সেই মোবাইলে কার কার সাথে কথোপকথন রয়েছে, যখন বেরোবে তখন মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের দিকে সিবিআই দৌড়োবে এই ভয়ে তিনি অসংলগ্ন কথা বলছেন।”
আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে আদিবাসী কুড়মি সমাজ পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে সমর্থন করবে না বলে জানিয়েছে। সেই বিষয়ে সুকান্ত বলেন, আর কোনো সমাজই সমর্থন করবে না তৃণমূলকে। তিনি জানান, দক্ষিণ দিনাজপুরে যেখানে আদিবাসী মহিলাদের অপমান করা হয়েছিল সেখানে আজ ভয়ঙ্কর ভাবে বনধ হচ্ছে। তার দাবি, তৃণমূল কংগ্রেস থাকলে সবার স্বার্থ বিঘ্নিত হবে।