‘মাওবাদীদের নতুন প্রজন্ম তৈরি করেছে তৃণমূল’, জঙ্গলমহলে দাঁড়িয়ে বিস্ফোরক মোদি

পাহাড় হাসছে, জঙ্গলমহল হাসছে। মমতার আমলে বদলে গিয়েছে জঙ্গলমহলের ছবি। বেশ বুক বাজিয়েই এতদিন ধরে এই দাবি করে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। শাসক শিবিরের দাবি, মাওবাদীদের দমন করে লাল সন্ত্রাস পুরোপুরি খতম করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জঙ্গলমহলেও বইছে উন্নয়নের জোয়ার। বৃহস্পতিবার জঙ্গলমহলেরই জেলা পুরুলিয়ায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) তৃণমূলের মাও দমনের সেই দাবি পুরোপুরি নস্যাৎ করলেন। শুধু তাই নয়, পালটা বিস্ফোরক অভিযোগও করলেন। দাবি করলেন,”তৃণমূলের আমলে নতুন প্রজন্ম পেয়েছে মাওবাদীরা। নিজের স্বার্থে মাওবাদীদেরও মদত দিচ্ছে শাসকদল।”

একটা সময় মাওবাদীদের গড় ছিল জঙ্গলমহল। লাল সন্ত্রাসে ত্রস্ত ছিল সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা। বাম আমলে জঙ্গলমহলবাসীর ‘পিঁপড়ের ডিম খাওয়ার’ কথাও বাংলার মানুষের স্মৃতিতে অমলিন। বস্তুত গত ১০ বছরে সেই ছবি অনেকটাই বদলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে বহু মাওবাদীই ফিরেছে মূল স্রোতে। কিন্তু বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা গেল অন্য কথা। তিনি বলছেন, “এখানে দিদির নির্মম সরকার মাওবাদীদের নতুন প্রজন্মের জন্ম দিয়েছে।” প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, “তোষণের নামে এখানকার যুবকদের অধিকার অন্য কাউকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপনাদের অধিকার কেড়ে অন্য কাউকে দেওয়া হয়েছে। কীভাবে আদিবাসীদের সঙ্গে, অনগ্রসরদের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে আমি জানি। এখানে দিদির নির্মম সরকার মাওবাদীদের নতুন প্রজন্মের জন্ম দিয়েছে। যারা তৃণমূলের মদতে বাংলাকে লুটে নিচ্ছে। নিজেদের স্বার্থের জন্য এই সরকার মাওবাদীদের মদত দেয়। যার ফল ভুগতে হয় আপনাদের। গোটা রাজ্য জানে, কয়লা মাফিয়া, বালি মাফিয়াদের কারা মদত দেয়।” প্রসঙ্গত, ভোটের আগে জঙ্গলমহলের দাপুটে নেতা ছত্রধর মাহাতোকে (Chhatradhar Mahato) দলে নেওয়া নিয়ে তৃণমূলকে আগে থেকেই কটাক্ষ শুনতে হচ্ছিল। প্রধানমন্ত্রীর মুখে পরোক্ষে সেই কটাক্ষই প্রতিধ্বনিত হল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

মাওবাদী নিয়ে কটাক্ষের মাধ্যমে আসলে তৃণমূলকে দুর্নীতি নিয়েও খোঁচা দিয়েছেন মোদি। তুলেছেন ‘কাটমানি’ ইস্যু। মোদির কটাক্ষ, আমরা কেন্দ্রে ‘DBT’ তত্ত্বে বিশ্বাস করি। ডিটিবি অর্থাৎ ডাইরেক্ট ট্রান্সফার বেনিফিট। আর TMC বিশ্বাস করে ‘ট্রান্সফার মাই কমিশন’ তত্ত্বে। এই ‘ট্রান্সফার মাই কমিশন’ না হলে বাংলায় কোনও কাজ হয় না। এই ‘ট্রান্সফার মাই কমিশন’ হয়নি বলেই বাংলার উন্নয়নের কাজ আটকে আছে। আয়ুষ্মান ভারত, কিষাণ সম্মান নিধি চালু হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.