হকার সেজে ‘তৃণমূলের কারসাজি’তে টিকা নিচ্ছেন তাদের কর্মী-সর্থকেরা। টিকার কুপন বিলিতেও অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে কেবল তৃণমূল (TMC) কর্মীরা। বুধবার বাম ও বিজেপির অভিযোগে বিদ্ধ রাজ্যের শাসক দল।
শিলিগুড়িতে টিকাকরণ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ। এর আগে সরকারি টিকা নিতে গেলে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান বাধ্যতামূলক করার অভিযোগ উঠেছিল। এবার অভিযোগ, সুপার স্প্রেডারদের জরুরি ভিত্তিতে টিকা দিতে হকারদের যে প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে, সেখানেও উঠল অনিয়মের অভিযোগ। নাম জমা নেওয়ার ক্ষেত্রে হকার নয়, এমন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরাও ঢুকে পড়ছেন বলে অভিযোগ বাম ও বিজেপির।
হকাররা রাত জেগে টিকার জন্য লাইন দিলেও তার কুপন তুলে নিয়ে তা কেবল তৃণমূল কর্মীদেরই বিলি করা হচ্ছে। এদিন এমনই অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়রের দাবি, সিপিএম-ত্যাগী এক তৃণমূল নেতার এহেন কর্মকাণ্ডেই সাধারণ মানুষ টিকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এমনকি স্বাস্থ্যকর্মীরা এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে তাদের বদলির দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই স্বাস্থ্যকর্মীরা বাধ্য হচ্ছেন এসবে মদত দিতে। তিনি এ নিয়ে জেলাশাসককে সব জানিয়েছি।
একই অভিযোগ বিজেপিরও। বিধায়ক শংকর ঘোষের দাবি, প্রথম দিন থেকেই টিকার ক্ষেত্রে হকারের নামে ভুয়ো তালিকা তৈরী করিয়ে শাসক দলের কর্মীদের টিকাকরণ করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনকে বলেও লাভ হয়নি। টিকা নিয়ে রাজনীতি ও ব্যবসা দুইই চলছে। এটাই রাজ্যের বাস্তব ছবি বলে কটাক্ষ করেন তিনি। যদিও দুই পক্ষেরই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর আপাতত বৃহত্তর শিলিগুড়ি খুচরা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন পরিমল মিত্র। ৮৫টি বাজার তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। তিনি বলেন, “এসবই মিথ্যা অভিযোগ। ভিত্তিই নেই। পৌরনিগম বাজার কমিটি থেকে সরাসরি তালিকা নিচ্ছে। আমরা তালিকা দিচ্ছি এটা ঠিক। কিন্তু এর মধ্যে রাজনীতি নেই। বাজার কমিটিগুলি যে নাম দিচ্ছে সেগুলিই আমরা পাঠাচ্ছি। টিকা পাচ্ছেন হকাররা। আর কুপন বিলি স্থলে পুলিশ থাকে। আমরা কুপন বিলি করি না।”
তাঁর আরও দাবি, তিনি যে সবাস্থ্যকর্মীকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে তিনি প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলরের স্ত্রী। তিনিই বহিরাগতদের ডেকে এনে বিকালে টিকা দেন। পরিমলবাবু তার প্রতিবাদ করেছেন মাত্র। এ নিয়ে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন বলে জানান তৃণমূল নেতা।