দেশের আইনসভার প্রথা ভেঙে মুকুল রায়কে PAC-র চেয়ারম্যান নিয়োগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী তিনি বিজেপির সদস্য বলে যে দাবি স্পিকার করেছেন তাও ঠিক নয়। এভাবেই মুকুলের পদপ্রাপ্তির সমালোচনা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বললেন, মুকুল রায়ের বিধায়কপদ থাকে কি না সেটাই বড় প্রশ্ন।
শুক্রবার রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনের শেষ দিনে মুকুল রায়কে PAC-র চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির টিকিটে বিধানসভা নির্বাচনে জিতলেও দিন কয়েক আগে প্রকাশ্যে তৃণমূলে যোগদান করেন তিনি। এর পরই তাঁর PAC চেয়ারম্যান হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়। সঙ্গে বাড়তে থাকে বিতর্কও।
এদিন শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘রীতি অনুসারে PAC চেয়ারম্যান হওয়ার কথা বিরোধী দলের বিধায়কের। কিন্তু দেশের সংসদীয় ইতিহাসে প্রথমবার সেই রীতি ভাঙলেন বিধানসভার স্পিকার।’
তিনি বলেন, ‘স্পিকার বলেছেন, PAC-র ২০ জন সদস্যের মধ্যে বিরোধীদের ৬ জন সদস্য প্রাপ্য হলেও ৭ জনকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সপ্তম ব্যক্তি মুকুল রায়ের নাম প্রস্তাব করেছেন তৃণমূলের সহযোগী দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও সমর্থন করেছেন এগরার তৃণমূল বিধায়ক। তাহলে উনি আমাদের প্রতিনিধি হলেন কী করে?’
বিরোধী দলনেতা জানান, ‘PAC-র চেয়ারম্যান হিসাবে অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ীর নাম প্রস্তাব করেছিলেন বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা। কিন্তু সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন বিধায়ক। তার মানে শাসকদলই খরচ করবে। আর শাসকদলই তার হিসাব রাখবে। বিরোধীদের এতে কোনও ভূমিকা নেই। এই প্রবণতা ভারতের সাংবিধানিক কাঠামোর বিরোধী।’
সঙ্গে শুভেন্দু জানান, PAC-র চেয়ারম্যান পদ নিয়ে শাসকের সঙ্গে তাঁদের যে বিরোধ তৈরি হয়েছে তার জেরে বিধানসভার সমস্ত স্ট্যান্ডিং কমিটি ও হাউজ কমিটির চেয়ারম্যান পদ প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। বিধানসভায় ১৫টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ পাওয়ার কথা বিজেপির। কিন্তু সরকার তাদের ১০টি কমিটির চেয়ারম্যানের পদ দেবে বলে জানায়। তবে শুভেন্দুবাবু জানিয়েছেন, ‘এটাই ওদের লাস্ট টার্ম। যত ভোগ করার করে নিক। তবে স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যপদ গ্রহণ করবেন বিজেপি বিধায়করা।’
শুভেন্দু আরও বলেন, ‘মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগবিরোধী আইন প্রয়োগের যে দাবি বিজেপি জানিয়েছিল আগামী ১৬ জুলাই তার শুনানি করবেন স্পিকার। আমি সেখানে হাজির থাকবো। তবে গত বিধানসভায় এক বিধায়কের বিরুদ্ধে দলত্যাগবিরোধী আইনের শুনানি শেষই হয়নি। এবার তা হবে না। গত ১০ বছরে রাজ্য বিধানসভায় দলত্যাগবিরোধী আইন কার্যকর হয়নি। এবার আমরা দেরি করবো না। স্পিকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হবো।’