হিংসার অভিযোগের মধ্যেই বিকেল পর্যন্ত ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট পড়েছে পঞ্চায়েতে। জানাল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
শনিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের শুরু থেকেই অভিযোগ আসছিল, কোথাও পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে ব্যালট বাক্স, কোথাও আবার পুলিশ নিরাপত্তারক্ষীদের সামনে অফিসারের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে চলেছে নাগাড়ে ছাপ্পা ভোট। এমনও অভিযোগ এসেছে, যে ব্যালট পেপারে গ্রামবাংলার মানুষের মতামত জানানোর কথা, তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে কোথাও, কোথাও আবার জল ঢেলে দেওয়া হয়েছে ব্যালটে। সকাল ৭টা থেকে গ্রামবাংলায় পঞ্চায়েত ভোট শুরুর পর থেকেই একের পর এক এমন অভিযোগ এসেছে। তার পর শনিবার দুপুর ৩টে নাগাদ রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানাল, গত ৮ ঘণ্টায় রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৫১.০৬ শতাংশ।
ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ভোট শুরুর পর থেকে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। যদিও কমিশনের হিসাব বলছে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। হিংসার ঘটনা কিছুটা বেশি দুই ২৪ পরগনা, কোচবিহার, মুর্শিদাবাদে— স্বীকার করেছেন নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ। তবে বিভিন্ন জেলা থেকে যে সমস্ত অভিযোগ আসছে তাতে দেখা যাচ্ছে, শুধু এই চার জেলা নয়, মালদহ, নদিয়া, উত্তর দিনাজপুর, পূর্ব বর্ধমান থেকেও মৃত্যুর খবর এসেছে, গুলি চলেছে আরও অনেক জেলায়। অভিযোগ, ব্যালট বক্সে জল ঢেলে দেওয়া হয়েছে, বুথে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে আগুন। পঞ্চায়েত ভোটের সকাল থেকে যখন গোটা বাংলা উত্তপ্ত, তখন নির্বাচন কমিশনার রাজীব তাঁর দফতরেই আসেননি সকাল দশটা পর্যন্ত। ঠিক সকাল ১০টা বেজে ১ মিনিটে রাজীব এসে পৌঁছন কমিশনের দফতরে। প্রশ্ন করা হলে বলেছেন, ‘‘ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে আমার আলাদা করে কী করার আছে, যাঁদের নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে, তাঁরা করবেন। আমার কাজ ব্যবস্থাপনার। আমি সেটা করেছি।’’
ভোটে হিংসার ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করলে রাজীব বলেন, ‘‘অশান্তির খবর আমিও পেয়েছি। কমিশনের নম্বরে অনেকেই ফোন করে অভিযোগ করছে। তবে আমার মতে, যদি একটু আগে আমাদের হাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পৌঁছত, তা হলে হয়তো এতটা খারাপ পরিস্থিতি হত না।’’ শনিবার দুপুর পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৬৬০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে বলে জানিয়েছেন রাজীব। যদিও কমিশনের তরফে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে ৮২২ কোম্পানি চাওয়া হয়েছিল।