চেক মোর্স এক অজানা এবং উল্লেখযোগ্য কাহিনী বর্ণনা করেছেন হজ আমিন আল-হুসেনির সম্পর্কে, যিনি বিভিন্ন দিক থেকে হিটলারের মতো নাৎসী খলনায়ক ছিলেন। তিনি যুদ্ধ সমর্থক দেশগুলিতে নাৎসীদের লুটপাট চালানোর ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁর বই থেকে কিছু অংশ এখানে উদ্ধৃত করা হল—
“আল-হুসেনী ছিলেন প্রথম নেতা যিনি অ্যাডলফ হিটলারের কাছে ১৯৩৩ সালে তাঁর নির্বাচনের প্রসঙ্গে অভিনন্দন পত্র প্রেরণ করেছিলেন। ১৯৩৬ সালে অ্যাডলফের পেলেস্তাইন এবং মিশরে সফরকালে আল-হুসেনী নাৎসি গুপ্তচর আইচম্যানের সাথে যোগাযোগ করেন। এরপরেই আল-হুসেনি নাৎসিদের একজন বেতনভুক্ত প্রতিনিধি হিসাবে নিয়োজিত হন এবং পেলেস্তাইন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্ররোচিত করেছিলেন।
ব্রিটিশরা তাকে পেলেস্তাইন থেকে উচ্ছেদ করার পরে তিনি ইরাকে চলে যান এবং ১৯৪০ খ্রীষ্টাব্দে তিনি পর্দার আড়ালে থেকে নাৎসিদের অভ্যুত্থানে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ফাহুদ, ইহুদী-বিরোধী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস,যার মাধ্যমে নাৎসীপন্থী ইরাকিদের পতন ঘটেছিল।
এইপর ইরাক থেকে তিনি পালিয়ে যান এবং এক এক করে তেহরান, ইস্তাম্বুল ও রোমে এসে বিরতি নেন। তারপর বার্লিনে এসে তিনি হিটলারের সাথে একটি সুপ্রচারিত সভা করেন। সেই বৈঠকে হিটলার প্রতিশ্রুতি দেন যে ইউরোপের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারলে তিনি আল-হুসেনিকে মধ্যপ্রাচ্যের নাৎসী ফাদার হিসাবে পরিচিতি প্রদান করবেন। পরিকল্পনা ছিল যে আল-হুসেনী নাৎসী মুসলিম ব্রিগেড নিয়ে ককেশাস পর্বতমালার দিকে যাবে এবং সেখানে তাদের উপর নাৎসী মুসলিম খিলাফত শাসন চাপিয়ে দেওয়া হবে। হিটলার এবং আল-হুসেনী “ইহুদী সমস্যা” নিয়েও আলোচনা করেছিলেন।
বার্লিনে যুদ্ধের সময় আল-হুসেনী প্রবাসী নাৎসী-মুসলিমদের প্রধান ছিলেন এবং তিনি ইহুদী বিরোধী সম্প্রচার পরিচালনা করেছিলেন। ইহুদীদের মৃত্যুর কাছে পাঠানোর পর, বাজেয়াপ্ত অর্থ দিয়ে তিনি ক্যাম্পের অর্থসংকট সমাধান করতেন।
নাজিম ওয়েহর্ম্যাটের হয়ে যুদ্ধের জন্য তিনি বসনিয়ান মুসলিম হানজার ব্রিগেডকে নিযুক্ত করেছিলেন এবং তিনি নিজে মধ্যপ্রাচ্যে গুপ্তচরবৃত্তি ও নাশকতা শুরু করেছিলেন মিত্রপক্ষ এবং পেলেস্তাইনের ইহুদীদের বিরুদ্ধে।
আল-হসেনী মৃত্যু শিবির গুলোতে গিয়েছিলেন এবং নাৎসীপন্থী ইউরোপীয় নেতাদের চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ জানিয়েছিলেন যেন তারা তাদের ইহুদীদের ‘পোল্যান্ডে’ পাঠায়, যেখানে শ্মশানের নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে।
বিভিন্ন ঘটনা থেকে জানা যায় যে, আল-হুসেনী একজন নাৎসি সমর্থক, যিনি নাৎসী আভিজাত্য অপেক্ষা, হত্যাকান্ডের প্রচারক ছিলেন।
আল-হুসেনীকে কখনোই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য দায়ী করা যায় না, জার্মানির নিউরেম্বার্গ বিচারসভা থেকে পালিয়ে আসর জন্য।
তিনি কায়রো গিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ১৯৭৫সালে, মৃত্যুর আগে পর্যন্ত লড়ে গিয়েছিলেন।
তিনি মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধাপরাধীদের চোরাচালানে সহায়তা করেছিলেন, তাদের মধ্যে অনেকেই আবার ইসলাম ধর্ম এবং মুসলিম নাম গ্ৰহন করে আরব রাজধানীগুলিতে সুনাম অর্জন করেছিল। তিনি নিয়মবহির্ভূত প্রশিক্ষণে এক বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। তার পাতানো ভাইপো ইয়াসির আরাফাত ইজরায়েলের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে মারা যায়। হানজার পোশাকের আড়ালে ইজরায়েলের সম্মুখভাগে পুরুষেরা আক্রমণ করেছিল বলে যানা যায়।
আল-হুসেনী গাজায় সংক্ষেপে একটি সর্ব-আরব সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছিল এবং আরবরা ইজরায়েল ছেড়ে চলে যাবে এই প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল।
জর্ডানের মধ্যপন্থী রাজা আবদুল্লাহ,যিনি ইজরায়েলে শান্তি চেয়েছিলেন এবং আরব শরনার্থী শিবির স্থাপনেও যার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল,,তার হত্যার পেছনেও জড়িত ছিলেন হুসেনি।
সবশেষে, হাজ আমিন আল-হুসেনি সম্পর্কে বলা যায় যে তিনি ছিলেন একজন কট্টরপন্থী মুসলিম এবং নাৎসিবাদী এবং আধুনিক জেহাদী আন্দোলনের জনক যিনি পাশ্চাত্যের গনতন্ত্র এবং মধ্যপন্থী আরব ও মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন”।