আদিবাসী মহিলাদের দণ্ডি কাটানোর ঘটনায় পদক্ষেপ করা হবে। চিঠি দিয়ে বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতককে জানিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার বিজেপির আদিবাসী নেতা তথা বিধায়ক মনোজ টিগ্গাকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যপাল। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, এসটি সমাজের এই অপমান বিজেপি কখনোই মেনে নেবে না। যতদিন না অপরাধি শাস্তি পাচ্ছে ততদিন তাদের প্রতিবাদ চলবে।
গঙ্গারামপুরে একটি কর্মসূচিতে গিয়ে দণ্ডিকাটা কাণ্ডে রাজ্যপালের পদক্ষেপ করার আশ্বাসের প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, এই জেলা গোটা রাজ্যের কাছে সাংস্কৃতিক ও শিল্পের জেলা হিসেবে পরিচিত ছিল। আর সেই জেলার মান সম্মান ডুবিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কিছু নেতা। তাঁর দাবি, দণ্ডিকাটা কাণ্ডে অপরাধিদের জেল হওয়া প্রয়োজন। সুকান্তর অভিযোগ, পুলিশ পুরো বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। শুধু সাইবার ক্রাইমের দোষ দেওয়া হয়েছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, “আমি রাজ্যপালের কাছে অনুরোধ করব এটা এসটি সমাজের অপমান। একদিকে এখন দেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছেন এসটি সমাজের তরফে দ্রৌপদী মুর্মু। অন্যদিকে দিকে এখানে এই ঘটনা।” সুকান্ত হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, “এসটি সমাজের অপমান আমরা কখনোই মেনে নেব না। আমাদের প্রতিবাদ চলবে যতক্ষণ না আসল অপরাধীকে ধরা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বিজেপিতে যোগদান করাশ তিন জন আদিবাসী মহিলাকে দণ্ডিকাটানো হয়েছিল। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের কারণে এই আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ৬ এপ্রিল তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন তিনজন আদিবাসী মহিলা। কিন্তু ৭ এপ্রিল রাতে তিন আদিবাসী মহিলা সহ চারজন বালুরঘাট শহরের কাঁঠাল পাড়ায় তৃণমূল কার্যালয়ে যান। সেখানে দন্ডি কেটে কার্যালয় ঢুকতে দেখা যায় ওই তিন মহিলাকে। পরে তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী প্রদীপ্তা চক্রবর্তী। সেই দৃশ্য প্রকাশ্যে আসতেই শাসক তৃণমূলকে আক্রমণ করতে শুরু করে বিজেপি। এই ঘটনায় গোটা আদিবাসী সমাজকে কলঙ্কিত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। প্রদীপ্তাকে গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয় পদ্ম শিবির। চিঠি দেওয়া হয় জাতীয় এসটি কমিশনে।
এরপর বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গার নেতৃত্বে বিজেপির সাত জন আদিবাসী বিধায়ক রাজভবনে গিয়ে ঘটনায় রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করেন লিখিত আকারে স্মারকলিপিও জমা দেন। যার জবাবে রাজ্যপাল বলেছেন, “তপনে আদিবাসী মহিলাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় আপনি সহ আপনাদের সাতজন বিধায়কের যে দাবি পত্রটি নিয়ে বিষয়টিতে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন সেই মর্মে আপনাকে চিঠি দিয়ে জানাচ্ছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” চিঠি পাওয়ার পর মনোজ বলেন, “আমাদের চিঠি পেয়ে রাজ্যপাল বিষয়টি দেখছেন তিনি আমাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা অপেক্ষা করবো সদর্থক পদক্ষেপের।”