করোনাভাইরাসের হানায় ত্রস্ত ভারত। সবথেকে খারাপ অবস্থা পরিযায়ী শ্রমিকদের, কাজ নেই, খাবারের সংস্থান করতে না পেরে শহর থেকে গ্রামে ফিরেছেন তাঁরা। কিন্তু, কাজ না থাকলে খাবেন কী? সংসার চলবে কীভাবে? পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বার্থেই ‘গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান’-এর সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। ফলে বাড়ির কাছেই কাজ মিলবে পরিযায়ী শ্রমিকদের। আপাতত বিহার, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড ও ওডিশা-এই ছ’টি রাজ্যের মোট ১১৬টি জেলার জন্য এই প্রকল্প। শনিবার ভিডিও কনফারেন্সিং মারফত ‘গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান’-এর সূচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।’ গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান’-এর সূচনা করার পর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষদের আবেগ ও প্রয়োজনীয়তা বোঝে দেশ। শ্রমজীবী মানুষদের চাহিদা ও আবেগ মেটাতে বিহারের খাগারিয়া থেকে সূচনা হচ্ছে ‘গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান’।
এদিন শুরুতেই পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনের সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সৈনিকের মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের সাহসী জওয়ানদের আত্মবলিদানে দেশ গর্বিত। আজ আমি যখন বিহারের জনগণের সঙ্গে কথা বলছি, বীর জওয়ান বিহার রেজিমেন্ট থেকেও ছিলেন, প্রতিটি বিহারবাসী এজন্য গর্বিত। দেশের জন্য যাঁরা জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই। করোনাভাইরাসের প্রকোপে শুধুমাত্র ভারত নয় গোটা বিশ্ব ত্রস্ত, এ প্রসঙ্গে ভারতীয়দের প্রসংশা করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোভিড-১৯ (Covid-19) মারাত্মক বিপদ, গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে, কিন্তু আপনারা দৃঢ় হয়ে দেশের পাশে ছিলেন। ভারতের গ্রামগুলি করোনার বিরুদ্ধে যেভাবে লড়েছে, শহরগুলি এর থেকে শিক্ষা নিয়েছে। ভারতে ৬ লক্ষেরও বেশি গ্রাম রয়েছে, দুই-তৃতীয়াংশের বেশি জনসংখ্যা প্রায় ৮০-৮৫ কোটি মানুষ গ্রামে থাকেন, গ্রামীণ ভারত দারুণভাবে করোনাকে রোধ করেছে, ইউরোপের সমস্ত দেশকে মিলিয়ে দিলেও এই জনসংখ্যা বেশি। এদিন গ্রাম প্রধান, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, আশা কর্মী প্রমুখের ভূয়সী প্রসংশা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, আমার প্রিয় শ্রমজীবী বন্ধুরা, দেশ আপনাদের আবেগ ও প্রয়োজনীয়তা বোঝে, আপনাদের চাহিদা ও আবেগ মেটাতে বিহারের খাগারিয়া থেকে সূচনা হচ্ছে ‘গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান‘। এর ফলে গ্রামে কাজ বাড়বে।…আমি এই অভিযানের ধারণা পেয়েছি শ্রমিকদের কাছ থেকেই। শহরকে যাঁরা প্রগতি দিয়েছেন, তাঁরা এখন গ্রামে। গ্রামের উন্নতির জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হবে। এই প্রকল্পে নিজের ঘরের কাছেই কাজ পাবেন শ্রমজীবী বন্ধুরা।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তিনি বলেন, ‘লকডাউন চলাকালীন, বিহারে ফেরার পর রাজ্যের বিভিন্ন জেলার শ্রমিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছি। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছে, অন্য রাজ্যে কাজের জন্য তাঁরা আর যেতে রাজি নন।’