বিধানসভা ভোটের মুখে রাজ্য রাজনীতির উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিলেন রাজ্যপাল। সাংবাদিক বৈঠকে ধনকড়ের তীব্র বিষোদগার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। ‘‘দেশ এক পথে চলছে, বাংলা আর এক পথে। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি।’’ সোমবার এভাবেই রাজ্য সরকারকে তুলোধনা করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত তুঙ্গে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকের কিছুক্ষণের মধ্যেই সাংবাদিক বৈঠকে মুখোমুখি হয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সাংবাদিক বৈঠকে এদিন আগাগোড়া ধনকড় ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে।
আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আবারও রাজ্যের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন রাজ্যপাল। প্রকাশ্যে ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া সমালোচনায় সরব হয়েছেন ধনকড়। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন বলে এদিন জানিয়েছেন।
সাংবাদিক বৈঠকে এদিন ধনকড় বলেন, ‘‘জনস্বার্থে সংঘাত কাম্য নয়। রাজনৈতিক সংঘাত নিয়ে উদ্বিগ্ন নই। তবে সংবিধানের সংবিধান নিয়ে উদ্বিগ্ন।’’ এরই পাশাপাশি এদিন আবারও রাজ্যের পুলিশ বিভাগ ও প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল।
পুলিশ বিভাগ ও প্রশাসনিকস্তরের একাংশের মধ্যে রাজনীতিকরণ হয়েছে বলে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছেন ধনকড়। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনের রাজনীতিকরণ হয়েছে। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক।’’
এরাজ্যে রাজ্যপালের দায়িত্ব নিয়ে আসা ইস্তক সরকারের সঙ্গে একাধিক ইস্যুতে সংঘাতে জড়িয়েছেন জগদীপ ধনকড়। কখনও রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছেন, কখনও আবার শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনীতিকরণের অভিযোগ তুলেছেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকারেরর অস্বস্তি বাড়িয়েছেন রাজ্যপাল। পাল্টা ধনকড়কে বিঁধে ময়দানে নেমেছে তৃণমূলও।
শাসকদলের একাধিক নেতা রাজ্যপালকে বিজেপির এজেন্ট বলেও কটাক্ষ করেছেন। এমনকী খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একাধিকবার রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ধনকড়ের নামে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে হওয়া বৈঠকে নালিশও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে এসবে বিন্দুমাত্র বিচলিত নন রাজ্যপাল। তিনি তাঁর অবস্থানে অনড়। রাজ্য প্রশাসনে তাঁর চোখে যখনই কোনও খামতি নজরে এসেছে, তখনই সমালোচনা জারি রেখেছেন।