বনগাঁয় গিয়ে তুরুপের তাস ফেলে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলে এসেছেন এই রাজ্যে থাকতে কোনও শংসাপত্র দরকার নেই। ওদিকে নানামহলে গুঞ্জন গোসাঘরে খিল দিয়েছেন শান্তনু ঠাকুরও। মতুয়া সমাজে মানরক্ষার জন্যেই তিনি তড়িঘ়ড়ি সিএএ চান। এই পরিস্থিতিতে, জানুয়ারিতেই সিএএ ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে বিজেপির। যদি সব ঠিকঠাক এগোয় তবে এই ঘোষণা করতে পারেন স্বয়ং অমিত শাহই।
লোকসভা ভোটের সময়েই শান্তনু ঠাকুর মতুয়া সমাজে প্রচার করেন ভোটে জয়ী হলে তিনি উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের দাবি পূরণ করবেন। সিএএ ঘোষণার পরে তাঁর হাসি চওড়া হয়েছিল। মতুয়ারা শান্তনু ঘরে ফিরলে সেসময় তাঁকে কাঁধেল তুলে উল্লাস করেছে। কিন্তু তারপরের দীর্ঘসূত্রিতা অত্যান্তরে ফেলেছে মতুয়া সমাজকে। অস্বস্তি বেড়েছে শান্তনুরও। তবে কি গোটাটাই স্তুতি ছিল? এই ফাঁক গলেই ঢুকে পড়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি স্পষ্ট বলেছেন এই রাজ্যে থাকার জন্য মতুয়াদের কোনও আলাদা শংসাপত্র দরকার নেই। পাশাপাশি ঠাকুর পরিবারে ভাগের জন্যও তিনি বিজেপিকে দায়ী করেছেন।এই পরিস্থিতিতে দ্রুত ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে চাইছে বিজেপি।
শনিবারই কৈলাস বিজয়বর্গীয় বিজেপির হঠাৎ ঠাকুরবাড়ি তরফে যান। শোনা যাচ্ছে, মন্ত্রীসভায় রদবদলে স্থান হতে পারে শান্তনুর, কথা হয়েছে এই মর্মে। তাছা়ড়া সেখান থেকেই তিনি জানান জানুয়ারিতেই কার্যকর হবে সিএএ। ভোটের মুখে কেন্দ্রের হেভিওয়েট নেতাদের রাজ্যে যাতায়াত লেগেই রয়েছে। কাজেই বিজেপির বড় অংশ মনে করছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাল্টা বার্তা দিতে মতুয়াগড়ে দাঁড়িয়ে এই ঘোষণা দেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজেই।
প্রসঙ্গত এই রাজ্যে অন্তত ৩ কোটি মতুয়া রয়েছেন। দেশভাগের পরে তাঁরা এদেষে থিতু হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগেরই ভোটার আইডি, রেশন কার্ড, প্যান কার্ড সবই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এই নাগরিকত্বের কী দরকার? এ প্রসঙ্গে অতীতে শান্তনু ঠাকুর যুক্তি দিয়েছিলেন, দেশভাগের পরে কারও বাবা এই দেশে এসেছিলেন। তিনি হয়তো সিটিজেনশিপ নেননি। জন্মসূত্রে এদেশের নাগরিক হয়েছে তাঁর ছেলেমেয়ে। নয়া আইনে ওই ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এই যুক্তি ভোটের হাওয়ায় কতটা দাঁড়াবে? সকলেরই নজর তিন কোটি ভোটে।